আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মনমোহন বিস্মিত

ঢাকা, সেপ্টেম্বর ০৮ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- অভ্যন্তরীণ মতবিরোধ নিয়ে ঢাকায় কিছু না বললেও দিল্লি ফেরার সময় তিস্তা চুক্তির বিষয়ে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের আচরণ নিয়ে মুখ খুলেছেন মনমোহন সিং। কলকাতার পত্রিকাগুলোর খবর, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর আচরণে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, মমতার সঙ্গে তার এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেননের কথা হয়েছিলো এবং চুক্তির বিষয়টি ঠিকঠাকই ছিলো বলে তারা আশ্বস্ত হয়েছিলেন। দুদিনের সফর শেষে বহুল আলোচিত তিস্তা চুক্তি না করেই বুধবার সন্ধ্যায় দেশে ফেরেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। মমতার আপত্তিতেই বাংলাদেশের প্রত্যাশিত এ চুক্তি হয়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতায় এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে মনমোহন বলেন, তিস্তা চুক্তি না হওয়াটা দুর্ভাগ্যজনক। দিল্লি ফেরার পথে বিমানে সাংবাদিকদের সঙ্গে মনমোহনের আলোচনার সূত্র ধরে কলকাতার বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যার শিরোনাম দিয়েছে- 'মমতার হঠাৎ আপত্তিতে বিস্মিত মনমোহন'। গণশক্তির শিরোনাম করেছে- 'এক মাস আগেই জানতেন মমতা'। আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি এক মাস ধরে তিস্তা চুক্তির বিষয় নিয়ে মমতার সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন; যদিও মমতার তরফে বলা হচ্ছে, এ বিষয়ে তাকে আগে কিছুই জানানো হয়নি। মনমোহন বলেন, "আমি গত এক মাস ধরে নিজেই মমতার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি।

মেননও যোগাযোগ রাখছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে মেনন আমাকে জানিয়েছিলেন, চুক্তি নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। ফলে আমরা চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করি। " "মমতার সঙ্গে আলোচনার পর মেনন খসড়া নিয়ে ঢাকায় চলে যান। এরপর অন্য কয়েকটি কারণে মমতা আপত্তি তোলেন।

আমার সঙ্গী হিসেবে ঢাকা যেতেও তিনি অস্বীকার করেন", বলেন মনমোহন। সফরে তিস্তা নিয়ে মতৈক্য না হলেও মনমোহনের সফরে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, যত দ্রুত সম্ভব এ চুক্তি সম্পাদনের কাজ শেষ করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন দুই সরকার প্রধান। তিস্তা চুক্তি না হওয়ার পেছনে মেননের ব্যর্থতার দিকে ইঙ্গিত করছে ভারতের সংবাদ মাধ্যম। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক মিত্র মমতাকে বোঝানোর দায়িত্ব কোনো রাজনৈতিক নেতাকে দেওয়া হবে কি না- সাংবাদিকরা জানতে চাইলে মনমোহন বলেন, "কূটনীতিক আর রাজনীতিক- এ ফারাকটা ঠিক আমি বুঝতে পারছি না। " "তবে মমতা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ নেত্রী।

তার সঙ্গে আলোচনা করে পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থ রক্ষা করেই তিস্তা চুক্তি হবে", বলেন তিনি। তিস্তা চুক্তি না হওয়ায় মনমোহনের সফরে ট্রানজিট নিয়ে সম্মতিপত্র বিনিময়ও হয়নি। এ জন্য মমতার পদক্ষেপকেই দুষছে ভারতের বিভিন্ন মহল। তবে তিস্তা চুক্তি নিয়ে এখনো আশাবাদ প্রকাশ করা হয়েছে ঢাকা-দিল্লি দুই তরফেই। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন আশা প্রকাশ করেছেন, আগামী তিন মাসেই চুক্তি হবে।

মনমোহনও হতাশার পাশাপাশি আশার সুর শুনিয়েই গেছেন। তিনি বলেছেন, "আমি আশাবাদী ছিলাম এ সফরে আমরা তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছতে পারবো। গ্রহণযোগ্য একটি সমাধানে পৌঁছতে দুই পক্ষই কঠোর পরিশ্রম করেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এ উদ্যোগ সফল হয়নি। " "আমি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভারত ও বাংলাদেশের জন্য কল্যাণকর একটি নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি বের করতে বলেছি", যোগ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমআই/১১২০ ঘ. ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.