আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মেহেরজান বিতর্ক

অতি সাধারণ....প্রধানমন্ত্রী হলে দেশটারে সাজাইতাম
মেহেরজান বিতর্ক | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১১ ২:১৬ পূর্বাহ্ন মেহেরজান সিনেমার পরিচালক রুবাইয়াত হোসেন নির্মাতা রুবাইয়াত হোসেন-এর ‘মেহেরজান’ সিনেমার প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত হয় ১৯ জানুয়ারি ২০১১। স্টার সিনেপ্লেক্সের দুটি হলে প্রিমিয়ার শো দেখানো হয়। ২১ জানুয়ারি থেকে সিনেমা হলে মুক্তি দেওয়া হয় মেহেরজান। মুক্তির সপ্তাহ খানেকের মাথায় ‘মেহেরজান’-এর পরিবেশক প্রতিষ্ঠান ‘আশীর্বাদ চলচ্চিত্র’ সিনেমাটি হল থেকে উঠিয়ে নেয়। মুক্তির এক সপ্তাহের মাথায় হল থেকে কোন একটি সিনেমা নামিয়ে দেওয়া অস্বাভাবিক ঘটনা নয়।

সেটা হল কর্তৃপক্ষ নামায়। কিন্তু ‘মেহেরজান’-এর ক্ষেত্রে হল কর্তৃপক্ষের সাথে চুক্তির মেয়াদ থাকা অবস্থায় এবং হল কর্তৃপক্ষের আগ্রহ থাকলেও পরিবেশক পক্ষ থেকে সিনেমাটি তুলে নেওয়া হয়। এটি বাংলাদেশের সিনেমা জগতে একটি নজিরবিহীন ঘটনা। ‘মেহেরজান’ সিনেমার পোস্টার ‘মেহেরজান’ সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেয়ে প্রেক্ষাগৃহে দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত হয়। কিন্তু মুক্তির পরে পরে বাংলাদেশের বিভিন্ন ওয়েবসাইট, বাংলা ব্লগ ও ফেসবুকে ছবিটি ঘিরে সমালোচনা শুরু হয়।

বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের একাংশ আপত্তি জানিয়ে মানব বন্ধন করেন এবং পত্রিকা মারফতে প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করেন। সমালোচনার জবাবে ছবিটির নির্মাতা রুবাইয়াত হোসেন পত্রিকার মাধ্যমে ছবিটির উদ্দেশ্য ও বিশ্লেষণ হাজির করেন। আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রে ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। সমালোচকদের দাবি—‘মেহেরজান’ সিনেমায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননা করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পালিয়ে আসা পাকিস্তানী সৈনিকের সাথে বাঙালি এক নারীর প্রেম সিনেমায় দেখানো মুক্তিযুদ্ধের অবমাননা ঘটায় বলে বলা হয় এবং ‘মেহেরজান’ সিনেমা এই দোষে দুষ্ট বলে তীব্র আপত্তি আসে।

বহু সমালোচনা, আপত্তি আসলেও ছবিটি নিষিদ্ধ করার জোরালো দাবি ওঠেনি। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোন ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র এক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান ধরা যেতে পারে। অর্থাৎ সরকারের পক্ষ থেকে কোন নিষেধাজ্ঞা না আসলেও পরিবেশক পক্ষ থেকেই ছবিটি নামিয়ে নেওয়া হয়। মেহেরজান সিনেমার দৃশ্য ‘মেহেরজান’—‘একটি যুদ্ধ ও ভালোবাসার কাহিনী’, এই যুদ্ধ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং ভালোবাসা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন পুরুষ সদস্যের সাথে একজন বাঙালি নারীর ভালোবাসা।

ছবিতে আরো এসেছে—১৯৪৭ সালের উপনিবেশোত্তর ভাগাভাগি, ধর্ষণ, বীরাঙ্গণা, সমকামিতার মতো প্রসঙ্গ। বাংলাদেশে ছবিটির প্রতিক্রিয়ায় পরিষ্কার হলো যে, এই সিনেমা ও এর কাহিনী স্পর্শকাতর। হল থেকে সিনেমাটি তুলে নেওয়ার মাধ্যমে এক ধরনের অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলো। এই প্রেক্ষিতে আর্টস-এর পক্ষ থেকে সিনেমাটি নিয়ে একটি বৈঠক আয়োজন করা হয়, বিডিনিউজ২৪.কম-এর ধানমণ্ডি কার্যালয়ে ১ ফেব্রুয়ারি ২০১১ তারিখে। এই সিনেমাকে কেন্দ্র করে আলোচকবৃন্দ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গ, শিল্পকর্মের দায়-দায়িত্ব, ইতিহাস ও সিনেমার (শিল্পের) সম্পর্ক, নারীবাদ, পুরুষতন্ত্র ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

এই বৈঠকের অডিও, ভিডিও এবং আলোচকদের বক্তব্য লিখিত আকারে আর্টস-এ প্রকাশিত হবে। লিখিত বক্তব্য অনলাইনে পড়া যাবে, ভিডিও দেখা যাবে এবং অডিও ডাউনলোড করে কম্পিউটারে বা এমপি৩ প্লেয়ারে শোনা যাবে। আর্টস-এর পাতায়ও সরাসরি অডিও শোনার ব্যবস্থা রাখা আছে। ‘মেহেরজান’ নিয়ে আয়োজিত বৈঠকে সঞ্চালক হিসেবে ছিলেন ব্রাত্য রাইসু। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— হাবিব খান (সিনেমাটির পরিবেশক ও আশীর্বাদ চলচ্চিত্রের প্রধান) ফরহাদ মজহার (কবি, লেখক ও গীতিকার) সলিমুল্লাহ খান (শিক্ষক, লেখক ও অনুবাদক) পিয়াস করিম (শিক্ষক, লেখক) মোরশেদুল ইসলাম (চলচ্চিত্র নির্মাতা) জাকির হোসেন রাজু (চলচ্চিত্র সমালোচক ও নির্মাতা) ফৌজিয়া খান (লেখক, চলচ্চিত্র নির্মাতা) সুমন রহমান (কবি, গল্পকার ও প্রাবন্ধিক) ফাহমিদুল হক (শিক্ষক ও লেখক) মোহাম্মদ আজম (শিক্ষক ও লেখক) মুসতাইন জহির (লেখক)
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.