আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রসংগ ভাষা আন্দোলনের পথিকৃৎ

সকাল আর আসেনা গোলাপ হয়ে ফোটেনা কিশোরীর হাতে

আমরা এই মানুষটির নাম খুব একটা শুনিনি। এতে আমাদের দোষ আছে বলেও আমি মনে করিনা। আমাদেরকে শুনতে দেয়া হয়নি। বাংলাদেশের চাটুকার নির্ভর রাজনীতিই এর প্রধান কারণ। আওয়ামীলীগ উনার নাম করে না কারণ তিনি আওয়ামীলীগ করতেন না।

বিএনপি করেনা কারণ তিনি বিএনপি করতেন না। কেউ কেউ করেন একথা অস্বীকার করিনা। কিন্তত তাদের গলার জোর এত ক্ষীণ যে তা এসে সর্বজনের কানে পৌছায় না। গতকাল ক্রিকেটের উদ্ধোধনী অনুষ্ঠান দেখতেছিলাম । অনুষ্ঠান দেখে বারবার চোখে পানি এসে যাচ্ছিল।

কেন জানিনা। জানার কারণ ও অনুসন্ধান করতে চাইনা। আমি যদিও এদেশে প্রচলিত রাজনীতিতে বিশ্বাস করিনা। নূণ্যতম শ্রদ্ধা আমার নেই। আমি বরং বমি করব তবুও কোন রাজনীতেকের ধারে কাছে যেতে চাইব না।

সোজা কথায় আমি ঘৃণা করি। প্রচন্ড ঘৃণা পোষণ করি। এ রাজনীতির প্রতি আমার কোন করুণা নেই। রাশি রাশি ঘৃণা ছাড়া। সাধ্য থাকে তো একটানে এর শিকড় উপড়ে ফেলতাম।

যদি এটা ফুটবল হত তাহলেতো একটা কিক মারতাম আল্লাহ ঈশ্বর ভগবানের নাম স্মরণ করে যাতে মর্ত্যের পৃথিবী ছেড়ে একেবারে স্বর্গে পৌছতে পারতো। এ রাজনীতি শুধু রাজনীতিকের চরিত্রই নষ্ট করছে না আমজনতার চরিত্রও নষ্ট করে ফেলছে। দিকে দিকে চোরের পয়দা করছে। যাই হোক যে কারণে লেখাটি লেখার প্রয়োজন অনুভব করলাম সেটি হলো প্রধান মন্ত্রী তার ভাষণে ভাষা আন্দোলনের পথিকৃৎ হিসাবে ঘোষণা দিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে। এর আগেও তিনি এমন কথা বলেছিলেন।

বদরুদ্দিন উমর এর প্রতিবাদ ও করেছেন। কিন্ত্ত প্রধান মন্ত্রীর কানে সেই কথা পৌছায়নি কিংবা পৌছালেও তিনি আমলে নেননি হয়ত এ কারণে যে উনার আশে পাশের চামচারা হয়ত এমন আশ্বাস দেন যে আপনি বলতে থাকেন আমরা আছি। বদরের কথায় কিবা আসে যায়!কিন্ত্ত প্রধান মন্ত্রীর একথা বুঝা উচিত যে মহৎ মানুষগুলোর চারিত্রিক মাধুর্য্য,গুণাবলী বাড়ানোর ক্ষমতা আপনারা বাড়াতে পারেন না। সেই ক্ষমতা আপনারা রাখেন না। বরং মহান পুরুষদের অনেক ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত ভক্তি করতে গিয়ে আপনারা তাদেরকে অপমান করে বসেন,তাদেরকে ছোট করে বসেন।

যাইহোক দুই বছর মোটামোটি আমাদের প্রধান মন্ত্রী কথাবার্তা হিসেব করেই বলেছেন। অনেক ক্ষেত্রেই প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছেন। ইদানিং মনে হয় তিনি পুরাতন নষ্টালজিয়ায় ভুগছেন। বেফাঁস কথা ইদানিং একটুও বেশিই বলছেন। কারো কাছে কথাগুলো অপ্রাসঙ্গিক মনে হলেও হতে পারে।

সরি। আমি যার কথা বলব-তিনি শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। এই ক্ষণজন্মা পুরুষের জন্ম ১৮৮৬ সালের ২রা নভেম্বর। বর্তমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার রামরাইল গ্রামে তিতাস নদীর পাড়ে। আরো কিছু জানতে Click This Link Click This Link Click This Link তিনি ১৯৪৮ সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান আইনসভায় সর্বপ্রথম বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার জন্য ঐতিহাসিক প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

তখন থেকেই সুত্রপাত হয় ভাষা আন্দোলনের। তিনিই ভাষা আন্দোলনের পটভূমি রচনা করতে সক্ষম হয়েছিলেন। মাতৃভাষার প্রতি কতটুকু দরদ থাকলে হায়েনাদের মুখের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি সংখ্যাগুলোদের কোটাপূরণ কারী একজন হিসাবে একথা বলতে পারলেন তা বুঝার বাকি থাকে না। ১৯৭১ সালেো এই মানুষটিকে বারবার অনুরোধ করা হয়েছিল দেশ ছেড়ে চলে যাবার জন্য কিন্ত্ত তিনি যাননি। তাঁর দেশপ্রেম জীবনের মায়া ছেড়েও উর্ধে স্থান দখল করেছিল একথা দ্বিধাহীন ভাবে বলা যায়।

যদিও দেশ,ধর্ম,ভাষা ইত্যাদির উপর মানুষের কোন হাত নেই। এর সবগুলোই জন্মসূত্রে পাওয়া। ার এগুলোর উপর ভালবাসা তৈরী হওয়াটাও মানুষের সহজাত। আর এক্ষেত্রে আমরা শহীদ ধীরেন্দ্রনাথকে বাঘের মত মাথা উঁচু করে থাকতেই দেখছি। কোন আপস করেন নি।

তার প্রস্তাবনায় যে কথাগুলো ছিল সেগুলি হচ্ছে-Out of six crores and ninty lakhs people inhabeting this state, 4 crores and 40 lakhs of people speak Bengali language. So, sir, what should be the State language of the state? The state language of the state should be the language which is used by the majority of the people of the state, and for that, sir, I consider that Bengali language is a lingua franca of our state. আর তখনই পাকিস্তানী শাষক গোষ্ঠী তার দিকে একটা বুলেট নিক্ষেপ করে। সেই বুলেটটি উনার বুকে এসে লাগে ১৯৭১ সালে। বড় করুণ ভাবে এই মহান পুরুষকে মৃত্যু মুখে পতিত হতে হয়েছিল। ওরা ১৯৭১ সালের ১৪ই এপ্রিল পহেলা বৈশাখ বাঙলা নববর্ষের দিনকে বেছে নেয়। আর এ থেকেও বুঝা যায় বাঙলা সংস্কৃতির প্রতি তাদের কত বড় আক্রোশ! হাত পা ভেঙ্গে,শরীরের চামড়া ছুলিয়ে, চোখ তুলে বড় করুণ ভাবে ৮৬ বছর বয়সে বাপ বেটা দুজনকে একসাথে হত্যা করা হয়।

বাবাকে দেখতে হয়েছিল পুত্রের একটা চোখ তুলে ফেলছে ,পুত্রকে দেখতে হয়েছিল বাবার দুটি চোখই উপড়ে ফেলা হয়েছে। আমরা চিনতে না পারলেও শত্রুর বুলেট ঠিকই চিনেছিল। সময়ের অভাবে অনেক কিছুই বলতে পারছিনা। ২০০৮ সালে আমরা কুমিল্লা টাউন হলে এ মহান মানুষটির জীবন অবলম্বনে একটি মঞ্চ নাটকের আয়োজন করেছিলাম। চেষ্টা করেছিলাম যতটুকু পারি উনাকে তুলে ধরতে।

শেখ রফিক ভাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা উনার রেডিমেইড পোষ্টি পেয়ে যাওয়াতে আমাকে কষ্ট করে তেমন কিছুই লেখতে হয়নি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।