আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দিনলিপিঃ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের জাতিয়তাবাদী গোড়ালি এবং অন্যান্য

মিথ্যা তুমি দশ পিঁপড়া সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ পোস্টটি রাজনীতি সচেতন গণতান্ত্রিক মানুষদের জন্যে। নির্লজ্জ্ব পার্টিজান ছাগলদের জন্যে নয়। আজকে বিএনপির প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশের হামলার ঘটনায় যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এর পায়ে রাবার বুলেট লেগেছে। আর টিয়ার শেলের আঘাতে আহত হয়ে পরে মর্মান্তিক ভাবে মৃত্যুবরন করেন অপর একজন বিএনপি নেতা। জামাত শিবিরের তাণ্ডবে যখন দেশ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে, তখন বিএনপির আপাত নিরীহ দর্শন মিছিলে পুলিশের এইসব করার কোন যুক্তিই খুজে পেলাম না।

পুলিশের বক্তব্য যে মিছিল হতে ভাংচুর শুরু হবার পর টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট মারা হয়। অন্য দিকে বিএনপি পন্থীরা বলছেন পুলিশ অতর্কিত পেছন থেকে হামলা করে। কোনটা সত্যি জানিনা, ব্যাক্তিগতভাবে যারা মিছিলে ছিলেন তারা সতভাবে ভেরিফাই করলে ভালো হত। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উচিত এই ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করা। বিএনপি আর জামতি সন্ত্রাসীদের এক কাতারে বিচার করার চেষ্টা বুমেরাং হবে।

বিএনপি চিরকাল নিরীহ দর্শন দল, যাদের কর্মীর চেয়ে সমর্থক বেশী। তাদের পক্ষে ধবংসাত্নক আন্দোলন করা সম্ভব নয়। এজন্যেই নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় তাদের আরেকটু কমিটেড হওয়া উচিত ছিল। বাংলাদেশে অনেকেই আছেন যারা নিয়মিত সংসদ অধিবেশনের খোজ খবর রাখেন। সুতরাং সংসদে গিয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরলে তার সুফল তারাই পেতেন।

সংসদের খোজখবর রাখা মানুষটি হয়ত একজন পটেনশিয়াল ভোটারের কাছে বিএনপির লেজিটিমেট দাবীটি পৌছে দিত। গণতান্ত্রিক প্রসেসটিও সুন্দরভাবে চলত। আমাদের রাজনীতিতে সবাই তুলনামূলক ভাবে কম খারাপ হবার চেষ্টা করে। এজন্যে কারও ভুল ধরলেই অপরপক্ষের কাছাকাছি কোন ভুলের কথা উল্লেখ করে এড়িয়ে যাওয়া হয়। এই প্রক্রীয়ার সমাপ্তি দেখতে চাই।

কেউ একজন শুরু করুক। আমার জানামতে সংসদীয় কমিটিতে বিএনপির সদস্যদের ডাকা হয়েছিল। যত কম সদস্যই হোক আমার মতে সেখানে বিএনপির যাওয়া উচিত ছিল। আশরাফি পাপিয়াকে সাথে না নিয়ে সংসদে গেলে বিএনপির কোন খারাপ হত না। যদি ওখানে সরকার দলীয়রা তাদের ভার্বাল এবিউজ করার চেষ্টা করত তাহলে সেটা হত অন দ্যা রেকর্ড, সারা জাতির সামনে।

আমাদের দুই দল কেউ কারো মুখ দেখেন না। একসাথে বসে মুখোমুখি কথা বলেন না। দুই নেত্রীর এই কুটনী দাজ্জাল স্বভাব দলের অন্যান্য নেতাকর্মীরাও ইনহেরিট করেছেন এটা দুঃখজনক। এই জন্যে একজন আরেকজন সম্পর্কে কুতসা গাইতে তাদের বাধে না। সামনা সামনি কথা বার্তা চালু থাকলে এইভাবে অপমানজনক টোনে তারা কথা বলতেন না।

অন্তত কিছুটা সুগার কোটেড করতেন। তাদের আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির উন্নয়ন হত, অবনতি নয়। বাংলাদেশে দুটি রাজনৈতিক দল অগ্রহনযোগ্য। এদের লালন পালন এই দুই দল করে এসেছে ভোটের রাজনীতির স্বার্থে। কিন্তু আপনাদের জন্যে নিউজ আছে।

আগামী ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের ভোটের ডাইনামিক্সে পরিবর্তন আসবে। অবাধ তথ্য প্রবাহের ফলে প্রোপাগাণ্ডা, জুজুর ভয় ইত্যাদি গেলানো সহজ হবে না। ফলে পুরোনো ক্যাসেট বাজিয়ে ভোট পাওয়া কঠিন হবে। আপনারা যদি প্রস্তুত না থাকেন আপনাদের রাজনীতিরই বারোটা বাজবে। বিএনপি ভোটের রাজনীতির সমীকরণ মেনে হয়ত জামাতের বিরুদ্ধাচারন না করার সিদ্ধান্তই নিয়েছে।

কেন বলছি এটা, গত তিন দিনের ঘটনায় দুইটি অংশ আছে। একটি আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর গুলি, আরেকটি জামাতের নজীরবিহীন সন্ত্রাসী তান্ডব। বিএনপি একটি কে চিহ্নিত করেছে এবং টা বন্ধের দাবী জানিয়েছে। অন্যটিকে চিহ্নিতই করে নাই, দাবী বা আহবান জানানো তো দুরের কথা। এই ব্যাপারটিই গায়ে লেগেছে বেশী।

একটি শহর কেন্দ্রীক একটি ডেমোগ্রাফীক গ্রুপের কাছে অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে এটি একটি বিট্রেয়াল। তারা হয়ত ভোটের রাজনীতিতে ডিসাইডিং ফ্যাক্টর নয়, কিন্তু আগামী দশ বছরে দেশের গুরুত্বপূর্ণ যায়গায় এরাই থাকবে। এরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রকৌশলী, ডাক্তার হিসেবে সমাজের মনন গঠনে উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রাখবে। সুতরাং আগামী নির্বাচনে এর ফল বিএনপি না পেলেও ভবিষ্যতে দেশের ইন্টেলেকচুয়ালদের কাছে সুনির্দিষ্টভাবে অপাঙক্তেয় হয়ে পরবে। আপনি বলতে পারেন সুশীলদের নিয়ে বিএনপি ভাবে না।

কিন্তু ব্যাপার হচ্ছে, বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবির তালিকা ক্ষুদ্র হওয়ায় বর্তমানেই বিএনপি অসুবিধায় পরে। ভবিষ্যতে এই তালিকা সুনির্দিষ্ট ভাবে ছোট হবে। আর শিক্ষার প্রসারের সাথে সাথে এই ডেমোগ্রাফিক গ্রুপ বাড়তে থাকবে। সুতরাং সামনে আদর্শিকভাবে বিএনপি পরিত্যক্ত হবার ফলাফল ভালো কখোনই হবে না। উভয় নেত্রী অবসরের পর দুই দলেই ভাঙন দেখা দেবে।

কারন দুই জনেই তাদের নিজ নিজ দলের লাস্ট টাই ব্রেকার। এরকম আনপ্রেসিডেন্টেড গ্রহনযোগ্যতা দুই দলে আর কারও নেই। এই ভাঙ্গনের সময়ই মতাদর্শিক স্ট্যাবিলিটি দরকার হবে। আজকে আদর্শিকভাবে বিএনপি দেউলিয়া হয়ে গেলে সুবিধাটুকু তার বিরোধিদলই পাবে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।