আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সৃষ্টিরহস্য : পৃথিবী বাসযোগ্য গ্রহ কেন



আমাদের পৃথিবী ছাড়া আর কোথাও জীবন আছে কি? পৃথিবীর কোন বিজ্ঞানী এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করতে পারেননি। তবে ছায়াপথের ৬% নক্ষত্র জীবনের জন্য সুবিধাজনক। কিন্তু নক্ষত্রগুলো যেন আগুনের মশাল, তারা এত দূরে যে তাদের মধ্যবর্তী তাপমাত্রা ৪৫০হ্ন ফারেনহাইট এবং নিকটবর্তী জায়গাগুলোতে হাজার হাজার ডিগ্রী তাপমাত্রা। জীবন সেসব আগুনের ফুলকি থেকে একটা নির্দিষ্ট দূরত্বে সম্ভব। এর বাইরে প্রাণী ঠাণ্ডায় জমে যাবে।

প্রাণীদের জীবন ধারণের জন্য অনুকূল তাপমাত্রা, অনুকূল আবহাওয়া মণ্ডল ও পানি অত্যাবশ্যক। কিন্তু গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, আমাদের পৃথিবী ছাড়া অন্যান্য গ্রহগুলোয় জীবন ধারণের অত্যাবশ্যকীয় উপাদান অনুপস্থিত থাকার কারণে জীবন ধারণ সম্ভব নয়। পৃথিবী সৌরজগতের একমাত্র বাসযোগ্য গ্রহ। মহাকাশ বিজ্ঞানীরা আজ অব্দি সৌরজগতে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোন বাসযোগ্য গ্রহ সনাক্ত করতে পারেননি। বাসযোগ্য গ্রহ হওয়ার শর্তাবলী হলো, পৃথিবী সূর্য নামক নক্ষত্র থেকে হ্যাবিটেবল জোনে (০.৭-১.৫) অবস্থান করছে।

আবহাওয়ামণ্ডলে কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও সালফার নির্দিষ্ট অনুপাতে আছে। এখানে উৎপন্ন গ্যাসগুলো নির্দিষ্ট মুক্তি বেগে (১২ কি.মি./ সে.) ম এর মান যথেষ্ট (৯.৮ মিটার/ সে.২) থাকায় উৎপন্ন গ্যাসসমূহ উবে যাচ্ছে না, তাপমাত্রা সহনীয় কারণ গড় তাপমাত্রা ১৫হ্ন সে.। জীবন সেখানেই সম্ভব হবে যেখানে তাপমাত্রা না অতি ঠাণ্ডা না অতি উষ্ণ (-১০ থেকে ৪০হ্ন সে.)। বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ১% এর কম (০.০৩%), কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বেশি হলে (৩% বেশি) জীবন সম্ভব নয়। নাইট্রোজেন আবহাওয়ামণ্ডলকে পাতলা করে, যার পরিমাণ ৭৮% এটি পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে।

নাইট্রোজেন না থাকলে অক্সিজেন পৃথিবী থেকে উঠে যেত। আবার অক্সিজেন নির্দিষ্ট অনুপাতে (২১%) না থাকলে নাইট্রোজেন থাকতে পারতো না। তাছাড়াও জীবন গঠনের উপাদান প্রোটিন তৈরিতে কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন ও নাইট্রোজেনের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। যদিও হাইড্রোজেন মৌলিক অবস্থায় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে থাকছে না, তবুও এটি যৌগিকরূপে পাওয়া যায়। বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন যে, মানবদেহ ১.৫ বার চাপ সহ্য করতে পারে।

এর বেশি চাপ হলে মানবদেহ তা সহ্য করতে পারবে না। আমাদের পৃথিবী চাপমাত্রা ১ বার। সুতরাং পৃথিবীর প্রাণী এই চাপমাত্রাকে সহনীয় মাত্রা হিসেবে গ্রহণ করতে পারছে। পৃথিবীতে তরল জল ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড থাকার কারণে গাছ তার খাদ্য তৈরি করতে পারছে এবং প্রাণীকে বিভিন্ন শক্তি সরবরাহ করে বাঁচিয়ে রাখছে। গাছ অক্সিজেন সরবরাহ না করলে প্রাণিকুল শ্বসন প্রক্রিয়া ঘটাতে না পেরে দেহে শক্তি যোগাতে পারতো না।

তাছাড়াও অক্সিজেন না থাকলে পৃথিবীতে আগুন জ্বালানো সম্ভব হতো না। তাছাড়াও অক্সিজেন উদ্ভিদের শ্বসন প্রক্রিয়া ঘটায়। তাই জীবের গঠনে অক্সিজেন শ্বসন ও সালোক-সংশ্লেষণ ঘটিয়ে প্রাণিকুলকে রক্ষা করছে। উদ্ভিদে সঞ্চিত গ্লাইকোজেন আমরা খাদ্য হিসাবে খাই। তাই বলা যায় সূর্যের অবিরাম আলোক বিকিরণে, তরল জলে, অত্যানুকূল তাপমাত্রা ও আবহাওয়ামণ্ডল পৃথিবীর জীবনকে ত্বরান্বিত করছে।

তাছাড়াও পৃথিবীর মহাসমুদ্রগুলো ও উদ্ভিদজগত পৃথিবীকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্দিষ্ট অনুপাতে রেখে আবহাওয়ামণ্ডলকে টিকিয়ে রেখেছে, কারণ কার্বন-ডাই-অক্সাইড পানিতে দ্রবীভূত হয়। আসল কথা হলো, পৃথিবী যদি ২৩হ্ন উত্তর কোণে হেলে না থাকতো তাহলেও জীবন সম্ভব হতো না। তাই বলা যায়, আমাদের পৃথিবী হ্যাবিটেবিল জোনে২৩হ্ন উত্তর কোণে, বায়ুমণ্ডল গঠনে অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, কার্বনের উপস্থিতি, অত্যানুকূল তাপমাত্রা, তরল জল এবং এসব উপাদান দ্বারা সালোক-সংশ্লেষণ শ্বসন এবং সর্বোপরি সূর্যের অবিরাম বিকিরণই এ পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে গড়ে তুলছে। যদি কোনদিন এসব উপাদানের বিরাট পরিবর্তন ঘটে সেদিন পৃথিবী ধ্বংস অবশ্যম্ভাবী। তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।