আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

(শর্ষিনা পীর) রজাকার পায় স্বাধীনা পদক - ঃ - ঃ- ৩য় পর্ব....।

আজ আমার মন ভাল নেই

শর্ষিনা সাবেক পীর মাওলানা আবু জাফর মোঃ সালেহ দু'বার স্বাধীনার পদক পেয়েছেন। কিন্তু স্বাধীনাতা যুদ্বের সময় তিনি স্বরুপকাঠিতে যে ধংশ চালিয়েছিলেন তা অন্য এলাকার মানুষ না জানলেও তিনি যে স্বাধীনতাবিরোধী ছিলেন তা সবাই জানে। স্বাধীনতা যুদ্বের দলিল অষ্টম খন্ডে শর্ষিনার পীরের বর্বরতার সামান্য উল্লেখ আছে। পীরের বাহিনী কর্তৃক লান্জিত স্বরুপকাঠির বারতী রানী বসুর বর্ণনায় লেখা হয়েছে। ৬ মে পাকিস্তানি বাহিনী স্বরুপকাঠিতে আসে।

সেখান থেকে থানা যাবার পথে শর্ষিনার পুল থেকে সাহাপাড়া পর্যন্ত সব বাড়ি-ঘর, দোকানপাটে প্রথমে লুটপাট চালায়। তারপর জালিয়ে দেয় আগুনা। ৭দিন ধরে চলে ঐ এলাকার ৩০ টি হিন্দু গ্রামজুড়ে এই বর্বরতা। লুট কৃত সব মালামাল চলে আসত শর্ষিনা পীরের গুদামে। হিন্দু মা-বোনদের পাকসেনারা ধর্ষন করে নির্বিচারে।

পাকবাহিনীর সঙ্গে লুটপাট এ অংশ নেয় শর্ষিনা মাদ্রাসার ছাত্র এবং পীরের অনুসারীরা। এই মোল্লা বাহিনীকে নেতৃত্ব দেন পীর মোঃ মোহেবুল্লাহ। তখন তার বয়স ছিল ২২ বছর। পীর সাহেব তখন ঘোষনা করেছিলেন, হিন্দুদের সম্পত্তি গণিমতের মাল, ঐ সম্পদ দখল করা হালাল। স্বরুপকাঠির প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী ব্যবসা কেন্দ্র ইন্দরেহাটের বড় বড় হিন্দু মহাজনরা ব্যবসা করত।

পীরের নির্দেশে বাজারটি মাটিতে মিশে দেয়া হয়। পাক সেনা এবং মোহেবোল্লাহ বাহিনী ৬ দকি থেকে এক যোগে ইন্দের হাটের হামলা চালায়। দোকানের মালামাল, টাকা, গচ্ছিত সোনা, রুপা, সব লুট করে শর্ষিনা নিয়ে যাওয়া হয়। একটি সূত্র জানায়, ঐ দিন হিন্দুদের কাছ থেকে ১৮০ তোলা সোনা লুট করা হয়। এছারা ২৫ মণ তামাক পাতা, ৩শাতাধিক শাড়ি, প্রচুর পরিমান দামি সিদুর কাট লট করে শর্ষিনা গুদাম ভর্তি করা হয়।

লুটকৃত সোনা মাটিতে পুতে তারউপর নারিকেল গাছ লাগিয়েছেন মোহেবুল্লাহ। স্বরুপকাঠিতে 'আট ঘর- কুরিয়ানা' নামে একটি বিশাল পেয়ারা বাগান আছে। যেটি দেশের সবচেয়ে বড় পেয়ারা বাগান মনে করা হয়। এখানকার পেয়ারা যেমন বড় তেমন সুস্বাদু। এই পেয়ারা বাগানেছিল মুক্তিযোদ্বাদের শক্ত ঘাটি।

পাক ও পীর বাহিনী মিলে গাছ কেটে আগুন জালিয়ে বাগানটি ধবংস করতে চায়। কিন্তু এলাকার বাসীর প্রতিরোধ পুরোপুরি ধবংস করতে পারেনি। যুদ্বের ৯মাস শর্ষিনা পীরের বাড়ি ছিল পাকবাহিনী ও রাজাকারদের দুর্ভেদ্য ঘাটি। সেকানে মাদ্রসার ছাত্রদের প্রসিক্ষন দিয়ে অস্ত্র তুলে দেয়া হতো মুক্তিযোদ্বাদের খুন করতে। এমন কি মুক্তিযোদ্বাদের আক্রমন থেকে স্বরুপকাঠি থানা অফিসটি রক্ষার জন্য পীরের বাড়িতে স্হানান্তর করা হয়।

যুদ্বের সময়শর্ষিনা বাহিনীর নির্যাতনে শত শত হিন্দু পরিবার সম্পত্তী ফেলে ভারত অথাবা অন্যত্র পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। হিন্দুদের ফেলে রাখা জমি দখল করে নেয় পীর। পরবর্তীতে পীর নানা জালিয়াতের মাধ্যমে জমিগুলি নিজেদের নামে রেজিস্ট্রি করিয়ে নেন। শর্ষিনা মাদ্রাসার মূল একাডেমিক ভবনসহ বিভিন্ন স্হাপনা বর্তমানে হিন্দুদের জায়গায়। এসব কারণে শর্ষিনার আশপাশে মানুষ তাদের পছন্দ করেন না।

যে সব হিন্দুর জমি পীর দখল করেন তাদের মধ্যে কয়েকজন হেলন, শর্ষিনা মৌজার ১২৫ নং খতিয়ানের গনেশ চন্দ্র সমাদ্দার, সতীশ চন্দ্র সমাদার, হিরা লাল সমাদ্দার, নীল রতন সমাদ্দার, লকুল চন্দ্র সমাদ্দার, মেহেন্দ্র নাথ গুপ্ত, ১৩২/১ খতিয়ানে ময়না বিবি এবং ৫৫/১ খতিয়ানের শান্তিরন্জন গুহ। চিহ্নিত এই স্বাধিনতাবিরোধীকে স্বাধীনাতার মাত্র ৯ বছর পর ১৯৮০ সালে জিয়াউর রহমান জনসেবার জন্য স্বধীনতা পদক দেন। এরপর ১৯৮৫ সালে শিক্ষাক্ষেত্রে অবদানের জন্য এরশাদ তাকে আভার স্বাধীনতার পদক দেন।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।