আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মানুষও শূন্যে ভাসতে পারে

সারা দেশে চলছে দিন বদলের স্লোগান দিন কি আসলে বদল হচ্ছে

পরিষ্কার আকাশে ডানা মেলে একঝাঁক পাখি যখন নিজের চোখের সামনে মনের খেয়ালে আকাশে মাথার উপর অথবা বিকট আওয়াজে মাথার উপর দিয়ে দ্রুতগতির বিমান উড়ে যায় গন্তব্যের দিকে, তখন যে কেউ ভাবতেই পারে- ইস ! আমি যদি পাখি হতে পারতাম। যদি আমার পাখির মত দানা থাকত! আমরা কোথা থেকে একবার লাফ দেই পরক্ষনে মধ্যাকষন শক্তির বলে আমরা আবার মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। মানুষ আকশে উড়তে পারে না এই মধ্যাকষন শক্তির কারনে। তাই বলে মানুষ পারে না এমন কাজ আছে? নিরন্তর সাধনার মাধ্যমে মানুষ কিন্তু এই মধ্যাকষন শক্তিকে পরাভূত করে শূন্যে ভেসে থাকতে পারে। তবে তার জন্য যে সাধনার দরকার তার নাম গভীর ধ্যান।

আমাদের পাশের দেশ দক্ষিণ ভারতের এক ভিক্ষুক (সুবাইয়া পুলভার) ১৯৩৬ সালে দেড়শ’ লোকের সামনে টানা ৪ মিনিট শূন্যে ভেসে ছিলেন। মানুষ আবাক হয়েছিল এই কান্ডে। ফকির নিশ্চয়ই চালাকি ধরেছে। আসলে ব্যাপারটিতে কোনো চালাকি ছিল না। উৎসুক মানুষ ব্যাপক অনুসন্ধান করে কোনো চালাকির লেশ পায়নি।

১৯৩৬ সালে লন্ডন নিউজ ভিক্ষুক সুবাইয়া পুলভারের এই আজব ঘটনার কথা বিশ্বব্যাপী জানিয়ে দেয়, যা তখন বেশ আলোচনার ঝড় তোলে। সপ্তদশ শতাব্দীতে রোমে পোপ অষ্টম আরবানের সময় জোসেফ অব কপারটিনো নামে এক কৃ্ষকের ছেলে লোকজনের সামনে আকাশে উড়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। সে গিজার উঁচু বেদির ওপরে প্রজ্বলিত বাতির ওপরে প্রায় ১৫ মিনিট ভেসে ছিল কিন্তু আশ্চযের ব্যাপার তার শরীরের কোনো অংশ পুড়ে যায়নি। জোসেফ মাঝে মাঝে এরকম আজগুবি কান্ড করতেন। যখন শূন্য থেকে নামের সময় হতো তাকে নামার জন্য মই ব্যবহার করতে হতো।

তবে অল্প কিছুদিন পরে মারা যান এই জোসেফ। ডাক্তার এলেন জোসেফের বাড়িতে। ডাক্তার অবাক বিস্ময়ে লক্ষ করলেন জোসেফের মৃতদেহ মাটি থেকে এক ফুট উপরে ঝুলে আছে। বিখ্যাত জাদুকর জন কিল তার ‘জাদু’ বইয়ে তিব্বত ও ভারতের শূন্যে ভাসা এমন বেশ কয়েকজনের মানুষের পরিচয় দিয়েছেন। জন কিলের বইয়ের বিবরন থেকে জানা যায় নাইং পা নামক এক তিব্বতি লামা জন কিলের সামনে একটা লাঠিতে ওপরে পদ্নাসন রচনা করেন।

জন কিল ভেবেছেন এটা আসলেই একটা প্রতারনা ছাড়া আর কিছু নয়! ভেবেছিলেন হয়তো লাঠির নিচে কোনো গত থাকতে পারে। কিন্তু জন কিল ব্যথ হলেন। সেখানে এমন কিছু ছিল না যে, যার ওপরে লোকটি এমন প্রতারনার আশ্রয় নিতে পারেন। এছাড়া সেন্ট টেরেসার মেয়ে আভিলা ধ্যা্নমগ্ন অবস্থায় মিনিটের পর মিনিট শূ্ন্য ভেসে থাকতে পারতেন। তিনি ছিলেন সন্ন্যাসিনী।

আভিলার শূন্যে ভাসার পারঙ্গমতা দেখে আভিলার অনুসারিরা হা করে তাকিয়ে থাকতেন তার দিকে। কিন্তু নিজের এই অলৌ্কিক ক্ষমতার ব্যপারে আভিলার কোনো মাথাব্যথা ছিল না। বন্ধুরা নিষেধ করেন কথাটা প্রকাশ না করতে। আভিলার নাকি শূন্যে উঠতে মন চায় না। আভিলার ভেতরে এক অদৃশ শক্তি নাকি তাকে এই কাজটি করতে বাধ্য করে।

আভিলার কথায় এই তথ্য জানতে পেরেছিল তার বন্ধুরা। শূন্য এ পর্যন্ত যত মানুষ ভেসেছে তার মধ্যে ভিক্টোরিয়ান ডানিয়েল ডগলাস হোম শূন্য ভেসে থাকার চমক দেখিয়েছেন বেশি। তিনি কেবল শূন্য ভেসে থাকা অবস্থায় যেখানে খুশি সেখানে যেতে পারতেন। এমনকি ডগলাস যদি চেয়ারে বসে থাকতেন তিনি ইচ্ছা করলে চেয়ারসহ শূন্য ভেসে থাকতে পারতেন। একবার নিজের বাড়ির জানালা দিয়ে শূন্য ভেসে বেড়ানোর জন্য বাড়ির বাইরে বের হলেন।

আবার কিছুক্ষন পরে তিনি বাড়ির অন্য এক জানালা দিয়ে ঢুকে পড়েন। ছোট এক জানালা দিয়ে আস্ত একটা মানুষের ঢুকে পরা কম আশ্চযের বিষয় নয়। এই সময়ে মাটি থেকে ডগলাসের উচ্চতা ছিল আশি ফুট। তবে ডগলাস যে এখানে চাতুরির আশ্রয় নিতেন তার প্রমান কেউ দিতে পারেন নি মানুষ কিভাবে শূন্যে ভাসতে পারে তার বৈজ্ঞানিক প্রমান না থাকলেও ব্যাপারটি যে একবারেই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা তা নয়। মানুষের ধারনা- যেসব মানুষ কেবল অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী তারাই কেবল মাটি থেকে শূন্যে ভেসে থাকতে পারে।

নিয়মিত ধ্যান আর মানসিক শৃঙ্খলা এরকম অদ্ভুত শক্তি এনে দিতে পারে বলে সাধারন মানুষের বিশ্বাস। শূন্যে ভেসে বেড়ানো্র নিয়মটাও বেশ অদ্ভুত। প্রথমে শরীরকে আস্তে আস্তে দোলাতে হবে, তারপর ঘন ঘন দোলাতে থাকেলে একসময়ে নাকি নিজের পুরো শরীরটা শূন্যে ভেসে বেড়াবে। তবে ধ্যানে বসার আগে পদ্না্সনে বসতে হবে এবং শূন্য থেকে নামার সময়ে হেলেদুলে নামা চলবে না, ধীরস্থীরভাবে নামতে হবে। তবে এই নিয়মটি যে কেউ প্রয়োগ করলে শূন্যে ভেসে থাকেতে পারবে না।

তার জন্য সাধনার দরকার। তবে আজো প্রশ্ন, মানুষ কেমন করে মধ্যাকষন শক্তিকে পরাজিত করেছে। কেমন করে সম্ভব শূন্যে ভেসে বেড়ানো। আজও এইসব জটিল প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। তালুকদার মোঃ রাজু E-Mail : facebook : http://www.facebook.com/imtalukdar


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।