আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মেয়েদের উন্মুক্ত পোষাক ও কিছু কথা



ইভটিজিং নিয়ে যখন সারা দেশে জোয়াড় উঠল সবাই এর কারন বিশ্লেষণ করা শুরু করল তখন বেশীরভাগ ব্লগার একটি কারনেই আটকে গেলো তা মেয়েদের পোষাক। এক শ্রেনীর পুরুষ এই মতামত পোষন করে থাকে যে মেয়েরা খোলামেলা পোষাক পড়ে ছেলেদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে। আর ধোয়া তুলসী পাতার মত ছেলেরা মেয়েদের এই মায়াজালের ফাদে পরে ধর্ষন, যৌননিপীড়নের মত অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। নিজের জ্ঞাতার্থে ছেলেদের কাছে আমার প্রশ্ন যৌন আবেগ নিয়ন্ত্রন করার কৌশল আদৌ কি আপনাদের জানা নেই???নাকি আপনাদের শরীরবৃত্তির কোথাও এইরকম বৈশিষ্ট্য কখনই ছিল না??? রাস্তাঘাটে চলাফেরা করে এমন মেয়ে হয়ত খুঁজেই পাওয়া যাবে না যারা কখন কোনো অবস্থায় ছেলেদের অশ্লীল মন্তব্য শুনে নি। ওইসব মন্তব্য কিন্তু মেয়েদের সিডিউস করার জন্যই করা হয়ে থাকে।

তবে কেনো ছেলেরা ধর্ষিত হয় না কিংবা যৌন নিপীড়িত হয় না??? বৃদ্ধা মহিলা কিংবা ২ থেকে ১০ বছরের শিশু অথবা নাবালিকা মেয়েরা কেনো ধর্ষিত হয়???তারা কিভাবে কোন উপায়ে সিডিউস করে ছেলেদের???একটি প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ একটি ২ বছরের মেয়ের ভিতর যৌন আবেদনমুলক কোন জিনিসটি পেয়ে থাকে যা তাকে ধর্ষক করে তুলে?মসজিদের ‘শ্রদ্ধেয়’ ঈমাম, ইসলামের ধারক; যেই ইসলাম ধৈর্য ও সংযম শিক্ষা দেয়, কিসের প্রেরনায় ১৩ বছরের মাদ্রাসার ছাত্রীকে ধর্ষন করে??? ধর্ষন, যৌন নিপীড়ন কি অপরাধ নয়???অপরাধের অজুহাত কি গ্রহনযোগ্য??? ধর্ষন কোনো যৌন সম্পর্কিত অপরাধ নয়!ধর্ষন ধর্ষকের ক্ষমতা, রাগের বহিপ্রকাশ। একজন পুরুষ পারে তার আবেগকে নিয়ন্ত্রন করতে। কিন্তু একজন ধর্ষক নিয়ন্ত্রিত হয় অন্য একজনের প্রতি তার রাগ, ও ক্ষমতা প্রকাশের ইচ্ছা দ্বারা। ধর্ষকরা উন্মুক্ত পোষাকধারী মেয়েদের নয় টার্গেট রাখে তাদের যারা শিকার করার ক্ষেত্রে সহজলভ্য। ধর্ষনের জন্য সবার আগে প্রয়োজন পরিকল্পনা এরপর একটি সুযোগের।

আর একে নিয়ন্ত্রন করে তার রাগ ও ক্ষমতা প্রকাশের অনিয়ন্ত্রতিত আবেগ। শতকরা ৭১ ভাগ ধর্ষন ঘটে পুর্বপরিকল্পিত ভাবে। শতকরা ৬০ ভাগ ঘটে স্ত্রী কিংবা যৌনসঙ্গীর সাথে সঙ্গমের সময়। এখানে খোলা পোষাক পরে আকর্ষণ করার সুযোগই থাকে না। যেই কোনো মেয়ে তার আচরন যাই হোক সে কখনই ধর্ষিতা হওয়ার যোগ্য হয় না।

কয়েকজনের দাবী মেয়েরা তাদের পোষাক সংক্ষিপ্ত করে কারন তারা যৌনকাতর। যদি তাই হয়!তবে নিপীড়নের প্রশ্ন আসে কোথা থেকে!মেয়েটি যা চাচ্ছে তাই তো পাচ্ছে!আর খোলা পোষাক পরা মানেই তো গায়ে হাত দেওয়ার লাইসেন্স দিয়ে দেওয়া নয়! এদের কাছে মেয়ে মানেই কামার্ত নারী যাদের চিন্তা ছেলেদের আকর্ষণ করা। আর ছেলেরা ভাজা মাছ উল্টে খেতে না জানা ভিজে বেড়াল যারা তাদের সরল মন নিয়ে মেয়েদের জালে ক্রমাগত জড়িয়ে পড়ছে। আপনারা কি আসলেই মনে করেন ধর্ষনে ও যৌন নিপীড়নে বড় সুখ!এবং মেয়েরা একে উপভোগ করে! অপরাধ শুধুই অপরাধ!একটি বেশ্যার ধর্ষন যা একটি হিজাব পরা ধর্মপ্রান মহিলার ধর্ষনও ঠিক তাই। শুধুই মেয়েদের দোষ দিয়ে এই রকম এক চোখা পর্যবেক্ষণকে ভিত্তি করে সমাজ সংস্কার করা যায় না।

প্রয়োজন বিজ্ঞানসম্মত ও যৌক্তিক কিছু পদক্ষেপ। তাই যুক্তিতে আসুন সমাজ শুদ্ধ করুন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।