আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ম্যাআও ছোট বেলা (ক্লাস ৯ ) থেকে জেনে আসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বি,বি,এ নাকি বাংলাদেশের সবচেয়ে ভাল । তখন কোন এক বড় ভাইয়ের কাছে প্রথম শুনতে পারলাম, এখানে নাকি নতুন কিছু শিখানো হয় না। যাই হোক। আমি যুক্তি তর্ক করিনি। কথাটা মনে গেথে গিয়েছিল।

পড়ে এইচ,এস,সি পরিক্ষার পরও আমার ইচ্ছা ছিল না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। বন্ধুরাও আমার কথায় অবাক। তখন মাথায় ভুত চাপল বিদেশে পড়তে যাব। এদেশে শিক্ষা বলতে কিছু নাই, আছে শুধু সেশনজট, গদবাধা পড়াশুনা । তবে বাসা থেকে সরাসরি বুঝানো হল আমাদের সেই সামর্থ্য নাই, আর আমারে এত কম বয়সে বাইরে পাঠাবে না।

দ্বিতীয় কথাটা মেনে নিলাম, কেননা আমার বড় ভাইয়ার বদৌলতে কখনো কাচাবাজারে একা যেতে হয়নি। দর কষাকষি করতে হয়নি। আমি তখনও বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে, আরামে একটা সময় কাটাচ্ছি। থাক তাহলে কি আর করার, এখানেই ভর্তি হই। কিছুদিন পর আমার রেজাল্ট দিল আমি গোল্ডেন পেলাম।

গেল সবার আশা বেড়ে। ভর্তি হতে হবে ঢাবিতে। যাই হোক, সব মেনে নিলাম। সময় মত ভর্তি হলাম একটা ভাল কোচিং এ। এখন সমস্যা হল, মন সায় দিচ্ছে না।

নিজের মাঝে কোন ইচ্ছাই নাই ভর্তি হবার। ক্লাস করি তো করি না। ধন্যবাদ দিব আমার অতীতের ইতিহাসকে। কোচিং এ হাই স্কুলের একটা বন্ধু ছিল আমার সাথে। আমরা একসাথে আসা-যাওয়া করতাম।

ও ছিল অনেক সিরিয়াস। আমি হাই স্কুলের ফাস্ট থাকায় ও ভাল করলে একটু লজ্জাই লাগত প্রথম প্রথম। পরে অবশ্য অভ্যাস হয়ে যায়। তবে এই তাড়না আমার পড়াটা একটু গতি দেয়। তাছাড়া বাসায় জোরপ্রয়োগ তো আছেই।

এক এক করে সব পাবলিক পরীক্ষা যায়। আমি তো কোথাও চাঞ্চ পাই না। ঢাবির 'গ' ইউনিট পরীক্ষা দিয়ে আমি ভাবছি এখন কি করবো। চাঞ্চ তো আর আসবে না। শুরু করলাম প্রাইভেটের খোজ।

অর্থনৈতিক সমস্যার কারনে চোখ সবার আগে পরত wavier এঁর দিকে। তখন ভাবতে শুরু করলাম, সব ভাল স্টুডেন্ট ঢাবিতে ভর্তি হলে তো অবশ্যই ঢাবি সবচেয়ে ভাল। ভাল শিক্ষার্থী ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করে। আমরা একটা ভাল কলেজ তার রেজাল্ট থেকে ধারনা পাই, কেননা সেখানে ভাল শিক্ষার্থী বেশি। এ পর্যন্ত যুক্তি আমার মাথায় আসল।

যদিও অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। দুদিন পর তো রেজাল্টই দিবে। যাই হোক, রেজাল্ট এঁর দিন আসল। চুপে চুপে নিজের রেজাল্টটা দেখে নিলাম। আমার রোল সার্চ দিয়ে দেখি আমি চাঞ্চ পেয়ে গিয়েছি।

আমার সাথের অনেক silencer এবার চাঞ্চ পায় নাই। ও কথা বাদ দিলাম। আমি তাও খুব ভাল একটা অবস্থানে। একটু অবাকই লাগলো। তবে আমার শুভাকাঙ্ক্ষীদের আশা পুরন করে নিজেকে দায়মুক্ত মনে হল।

সব শেষে আসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাল একটা ডিপার্টমেন্টের ক্লাসরুমে। এখন প্রায় ৫ মাস হয়েছে আমি এখানে আছি। টার্মপেপার, প্রেজেন্টেশান, গ্রুপ এগুলো তো সব ভাল বিশ্শ্ববিদ্যালয়েই আছে। সর্বাধুনিক তথ্য সরবরাহ, ব্যবহারিক জ্ঞান সবই তো আছে। তাছাড়া পেলাম নিজের মেধা, নিজের প্রতিভাকে কাজে লাগানোর মত অনেক গুলো মাধ্যম।

যা জানতে পারিনি, তা শিখবার পেলাম সুযোগ। পেলাম একটা মুক্ত পরিবেশ। দেশের সংস্কৃতির অংশ, ইতিহাসের সাক্ষী ঢাবিকে পেলাম আরও কাছ থেকে। কেন যে এতদিন ভ্রান্ত ধারনা নিয়ে ছিলাম। আমার ব্লগটি যারা কষ্ট করে পড়েছেন তাদের উদ্দেশে বলছি, এখানে এসে আমার মাঝে একটা তাড়নার সৃষ্টি হয়েছে।

আমার পিছনে প্রতিবছর লক্ষাধিক টাকা ভর্তুকি হচ্ছে, একটাই আশায় যেন আমি এ দেশকে ভাল কিছু উপহার দিতে পারি। একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ দিতে পারি। একটা বৃহৎ শক্তি একটা বৃহৎ দায়িত্বের জন্ম দেয়। সবাই আমার জন্য শুভ কামনা রাখবেন যেন আমি আমার দায়িত্ব পালনে অনড় থাকি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.