আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হোয়াট এ গ্রেট নিউজ:::কমছে ইয়াবার দাম কারণ জোগান বৃদ্ধি!.....সকালবেলা এমন একটা নিউজ দেখে মনটাই ভালো হয়ে গেলো



বাংলাদেশে প্রথম ইয়াবা আনেন সাবেক একজন সংসদ সদস্য (বতর্মানে বিদেশে)। আনা হয়েছিল বিমান ভ্রমণকালে। আসলে বন্ধু-বান্ধবীদের নিয়ে সেবন করানো হতো বলে এর প্রসার ছিল সীমিত আকারে। ওই সময় একটি ট্যাবলেটের দাম ছিল আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা। ফলে হাতে গোনা কয়েকজন উচ্চবিত্তশালীই এটি ব্যবহার করতেন।

প্রথম বাণিজ্যিকভাবে ইয়াবা আমদানি করে গুলশান নিকেতনের জুয়েল। সে ধরা পড়েছিল ২০০২ সালে। সেও ইয়াবা এনেছিল বিমানপথে থাইল্যান্ড থেকে। তখন বাজারমূল্য ছিল দুই হাজার টাকা করে। ইয়াবাসম্রাট আমিন হুদাও প্রথম থাইল্যান্ড থেকে বিমানপথে, পরে নিজেই রাসায়নিক উপাদান এনে গুলশানে ইয়াবার কারখানা খুলে বসেছিলেন।

ওই সময় প্রতিটি ইয়াবার বাজারমূল্য কমে দাঁড়ায় আট শ থেকে এক হাজার টাকা। বর্তমানে একটি বড়ির দাম সাড়ে তিন শ থেকে চার শ টাকার মধ্যে। সময়ের সঙ্গে অন্য সব কিছুর দাম বাড়লেও ইয়াবা এ হিসাবে ব্যতিক্রম। প্রতিনিয়তই এর দাম কমছে। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র মতে, ২০০২ সালে সীমিত আকারে টেকনাফ এলাকার নাফ নদের সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ইয়াবা আনা শুরু হয়েছিল।

২০০৩ সাল থেকে ইয়াবা ডিলারদের জন্য ওই রুটটি হয়ে যায় সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য জায়গা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানান, অতিসম্প্রতি টেকনাফ এলাকায় নজর দেওয়ায় ডিলাররা ব্যবহার করছেন অন্য আরো নতুন দুটি রুট। তা হলো বান্দরবানের গহিন অরণ্যের চাকঢালা সীমান্ত এবং সেন্টমার্টিন দ্বীপ। টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিনের মধ্যে দূরত্ব মাত্র ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার। ওই দুটি রুট দিয়ে কিছু ইয়াবা মিয়ানমার থেকে সেন্টমার্টিন আসার পর তা কক্সবাজার হয়ে ঢাকায় আসছে।

তবে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় স্পট বা রুট টেকনাফের নাফ নদ। এ ছাড়াও সীমিত আকারে টেকনাফ নদে চলাচলকারী ট্রানজিট নৌকার মাধ্যমে এবং স্থলবন্দর দিয়ে কিছু ইয়াবার আমদানি চলে। আবার ক্ষমতার পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে ইয়াবার ডিলারও পরিবর্তন হয়। এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা এর উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইয়াবার পরিচয় ঘটে গত বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে এক ছাত্রদল নেতার মাধ্যমে। ক্ষমতার পালাবদলে এখন এর নিয়ন্ত্রণ ছাত্রলীগের কথিত চার নেতার হাতে।

তাঁদের চারজনই হল ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের নেতা বলে জানান ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘কথিত এই নেতাদের কাছে প্রতিনিয়ত প্যাকেট আসছে। পরে তা জায়গা মতো সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া প্রভাবশালী এক ছাত্রনেতার গুলশান এলাকার একটি ফ্ল্যাটে রাতে ইয়াবার আসর বসার খবর রয়েছে বলেও এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান। এক প্যাকেট সিগারেটের দাম সাড়ে চার লাখ পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্রমতে, বর্তমানে ইয়াবা বহনের সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে মালবোরা সিগারেটের প্যাকেট।

সিগারেটের ফিল্টার ও তামাক খুলে ওর মধ্যে পাঁচ-ছয়টি ইয়াবা বড়ি ভরা হয়। পরে ওপরের অংশে তামাক ভরে দেওয়া হয়। এভাবেই এক প্যাকেট সিগারেটের মধ্যে ১১০ থেকে ১২০টি ইয়াবা নিয়ে আসা হয়Ñ যার বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে চার লাখ। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা অঞ্চলের উপ-পরিচালক ফজলুর রহমান জানান, এই পদ্ধতিতে বহন অনেক সহজ। এ ছাড়া মাছ, সবজি বা ফলের ভেতরে করেও ইয়াবা রাজধানীতে আসে।

শরীরের বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে তো বহন করা হয়ই। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৪২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোজাম্মেল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি কালের কণ্ঠকে জানান, টেকনাফের অনেক লোক মাদকসহ বিভিন্ন অবৈধ কাজে জড়িত। তারপরও বিজিবি (সাবেক বিডিআর) সর্বাÍক চেষ্টা করছে এসব অবৈধ কাজ রোধ করতে। তিনি আরো জানান, গত কয়েক দিনে বিজিবি ৪০ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করেছে। লে. কর্নেল মোজাম্মেল উদ্বেগের সঙ্গে বলেন, অনেককে আটক বা গ্রেপ্তার করা হলেও জামিনে বের হয়ে তারা আবারও অবৈধ ব্যবসায় নেমে পড়ছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক শওকত ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, টেকনাফের রুট ইয়াবা চোরাকারবারিদের জন্য অনেক পরিচিত। বান্দরবান বা সেন্টমার্টিন রুটের ব্যাপারে এখনো সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য তাঁদের কাছে নেই। তবে টেকনাফে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপরত। ফলে মাদক পাচারকারীরা রুট পরিবর্তন করলেও করতে পারে। সূত্র জানায়, সম্প্রতি ইয়াবার দাম কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ আমদানি ও সরবরাহ বেড়ে যাওয়া।

সীমান্তবর্তী টেকনাফ উপজেলায় শত শত লোক ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত। ওই এলাকায় এমন পরিবার আছে, যার পুরো পরিবারই অবৈধ এ ব্যবসায় জড়িত। নিজেদের মধ্যে ভাগ করে তারা এ কাজ করে। ফলে খরচও অনেক কম হয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গুলশান সার্কেলের পরিদর্শক হেলাল উদ্দিন কালের কণ্ঠকে জানান, ইয়াবার দাম এখন আগের চেয়ে অনেক কম।

তবে আমিন হুদার মতো কেউ এটি তৈরি করে বাজারে ছাড়ছে কি না তাও চিন্তার বিষয়। সূত্র জানায়, ইয়াবা জুয়েল বা তমালরাই নয়, এখন খোদ রাজধানীতেই অনেক জুয়েল-তমালের জš§ হয়েছে। তারা নিজেরাই পার্টি জোগাড় করে ইয়াবা সরবরাহ করে। ইয়াবা বহনকারীদের একটি বড় অংশ হচ্ছে নারী ও শিশু। এ ছাড়া কমপক্ষে তিন শ রোহিঙ্গা নারী ও শিশু আছে, যারা এ ব্যবসায় জড়িত।

তবে এখনো রাজধানীর সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ হয় কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে। জানা গেছে, টেকনাফে ইয়াবা ব্যবসার জনক বলা হয় ইয়াহিয়াকে। বর্তমানে তিনি নিজেকে সরকার সমর্থক বলে দাবি করেন। গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানের অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে জামিনে বের হয়ে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন তিনি।

তাঁর আরেক ভাই শফিউর রহমান বিদেশে পলাতক। শফিউর আন্তর্জাতিক চোরকারবারিদের একজন বলে অভিযোগ রয়েছে। সিঙ্গাপুর ও মিয়ানমারে তাঁর নিজস্ব বাড়িও আছে বলে জানা গেছে। সূত্র কালেরকন্ঠ

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।