আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হোয়াট দা হেক আর উই ডুয়িং। গ্লোবাল ওয়াননেস প্রোজেক্ট

বৃষ্টি হচ্ছে সুনিশ্চিত এই মুহুর্তে পৃথিবীর কোথাও না কোথাও

নয়া দিল্লি বেইজড গুঞ্জ (http://www.goonj.org) নামের একটি ভলান্টিয়ার সংস্থার এক্সিকিউটি ডাইরেক্টর অংশু গুপ্ত হলেন সেইরকম মানুষ যাকে আমি বলবো সত্যিকারের অবতার, খলিফাতুল্লাহ বা খোদার প্রতিনিধি। কেন বলবো তা বুঝতে আপনাকে ওর কার্যক্রমের এই ভিডিওটা দেখতে হবে। অংশু গুপ্তা ভূভারতের হাজার হাজার গরীবের থেকেও গরীব যে মানুষগুলো, তাদের লজ্জাকে ঢেকে দেন বস্ত্র দিয়ে। হেজিপেজি ভাবে না, চমৎকার পরিকল্পনার মাধ্যমে। আমরা যারা আরাম কেদারায় উবু হয়ে এই মুহুর্তে এই ব্লগ পড়ছি তাদের হয়তো কল্পনায়ও আসবে না যে শীতের রাতে বিহারের অনেক গ্রামে মায়েরা তাদের নগ্ন শিশুকে মাটিতে গর্ত করে তার ভিতরে ঢুকিয়ে রাখে, উপরে ঢেকে দেয় খরকুটো ঘাস দিয়ে, একটু উষনতার আশায়।

গায়ে দেবার মতো জামাটা পর্যন্ত নেই, শীতের কাথা কম্বল তো দূরের কথা। আমরা যারা প্রতি ঈদে, উতসবে অথবা কোন কারন ছাড়াই হাজার হাজার টাকার দামের জামা কিনি তাদের হয়তো কল্পনাতেও আসবে না কেমন জীবন তাদের যারা গত পাঁচ বছর ধরে দুই টুকরো ছেড়া কাপড়ে লজ্জা ঢাকে। এ শুধু ভূ-ভারতের বাস্তবতা না, এরকম বাস্তবতা আমাদের বাংলাদেশেও ঢের। ওয়াননেস প্রোজেক্টের সাথে ব্যক্তিগত সম্পৃক্ততার আগ্রহ থেকেই দেখছিলাম অংশু গুপ্তের কার্যক্রম। ভিডিওটার শেষের দিকে এসে সত্যিই শকড হলাম অন্য একটা ব্যাপার বুঝতে পেরে।

অংশু বলছিলো, এই পৃথিবীতে প্রতি মহিলার নিয়মিত মাসিকের সময়টায় পাঁচ দিনের জন্য প্রয়োজন হয় এক টুকরো কাপড়ের। আমরা কেউ কখনো ভেবে দেখেছি যে মহিলার পরনের কাপড়টুকুর ঠিক নেই সে কিভাবে জোগাড় করে সেই এক টুকরো কাপড়? আমাদের প্রতিনিধিরা অনেক গ্রামে মহিলাদের সাথে কথা বলেছে। অনেক পরিবারে এক টুকরো কাপড়ই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করে একাধিকজন। আবার অনেক ট্রাইবে মহিলারা বলেছে তারা কিছুই ব্যবহার করে না। এ তথ্য শকিং! এরা এতটাই গরীব তাদের সামর্থ্য নেই নিজেদের লজ্জা ঢাকার।

পরনের ব্লাউজ ব্যবহার করে টিটেনাসে মারা গেছেন এমন উদাহরনও আছে। বিহারের একাধিক গ্রামের নাঙ্গা শিশুদের কাপড় জড়িয়ে দেওয়া, এই অতি গরীব মহিলাদের মাসিক সময়ে ব্যবহারের জন্য পরিস্কার কাপড় প্রদান করা সহ অসাধারন কাজ করছে অংশু গুপ্তের গুঞ্জ। ভিডিওটি দেখছিলাম আর মনে হচ্ছিলো প্রকৃতি পরম মমতায় যে মানুষকে সৃষ্টি করেছে তার সে কি করুন অবস্থা; স্রষ্টাও না জানি কতটা ব্যথিত আমাদের এই ভোগবাদী সমাজব্যবস্থায়, আমাদের অন্ধত্বে - যেখানে একদিকে ধনীদের সম্পদের স্তুপ কেবলই বেড়ে চলে আর নি:স্বরা হয় আরো নি:স্ব। এই নি:স্বদের জন্য যারা কাজ করে, যারা তাদের কষ্টে ব্যথিত হয় সেইরকম মানুষ অংশু গুপ্ত - তাই তাকেই ডাকা যায সত্যিকারের অবতার, সত্যিকারের খলিফাতুল্লা। গরীবদের জন্য কাজ করবেন বলেই অংশু গুপ্তা ১৯৯৮ সালে ভারতের খুব বড় একটা কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান থেকে ইস্তফা দিয়ে ঘুরে বেড়াতে শুরু করে ভারতময়।

উদ্দেশ্য নিজ চোখে দেখা ও উপলব্ধি করা গরীব মানুষের সত্যিকারের প্রয়োজনটুকু। হ্যাটস অফ টু হিম। আর এই নষ্ট আমরা নিজেদের প্রশ্ন করতেই পারি, "হোয়াট দা হেক আর উই ডুয়িং? জাস্ট ইটিং, শিটিং, কনজিউমিং এন্ড মোর মিনিংলেস কমজিউমিং ... ইজ দ্যাট এ লাইফ ওর্থ লিভিং?" লো ব্যান্ড উইথের ভিডিওটি দেখা যাবে এখানে। হাইব ব্যান্ডউইথের ভিডিও এখানে। স্লো ইন্টারনেট লাইন হলে পজ করে রাখুন, স্ট্রিমিং লোড হলে তারপরে প্লে করুন।

গ্লোবাল ওয়াননেস প্রোজেক্ট সম্পর্কে


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।