আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রম্যগল্প -ক্রসফায়ার vs গনপিটুনি

আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত আপনাকে মানসিক ভাবে নির্যাতন করার জন্য। কারন আমার লেখা পড়ে আপনি বিরক্ত হতেই পারেন। । আরেকটু বিরক্ত হতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন আমার ওয়েবসাইট http://gmshovo.info থেকে

দুই চোরের মধ্যে কথা হচ্ছে। ওহ না, দুই চোরের আত্মার মধ্যে কথা হচ্ছে।

১ম চোরঃ তা,তুই কীভাবে মারা গেলি রে? ২য় চোরঃআমি মারা গেছিলাম র‍্যাবের করসফায়ার এ। ১ম চোরঃ এতো কিছু থাকতে করসফায়ারে ক্যান?? করসফায়ারে তো মরে ডাকাতরা,তুই ডাচোর মানে দুইটাই নাকি? ২য় চোরঃ আরে নাহ ব্যাটা আমি শুধুই চোরই আছিলাম, তাও ছোটখাট। ১ম চোরঃতাইলে করসফায়ার তোরে পাইল কেমনে? ২য় চোরঃ সে...... এক...... সংক্ষিপ্ত কাহিনী। চুরি করতে গেছিলাম এক বাড়িতে,চুরি করা যখন মোটামুটি শেষ পর্যায়ে তখন দেয়াল থাইকা পেইন্টিং চুরি করতে গিয়া টের পাইছিলাম এই বাড়িতে একজন র‍্যাব আছে। টর্চ দিয়া ডাইনিং রুম এর ওয়াল এর পেইন্টিংগুলা যখন বস্তায় পুরাইতেছিলাম তখন র‍্যাব সাহেবের ছবিটা দেখে এই বাড়িতে একজন র‍্যাব আছে তা টের পাইছিলাম।

র‍্যাব সাহেবের ছবি দেইখা করসফায়ার আর ডাবলু ভাইয়ের কথা মনে অইল। আহ! কী ভাল মানুষটাই না আছিল ডাবলু ভাই, চোরি-ডাকাতি করত টুকটাক। করসফায়ার এর কথা মনে হওয়ায় মনটা কেমন জানি হইয়া গেলো,পেন্টিং চুরি বাদ দিয়া ভাবলাম বের হইয়া যামু। কিন্তু কপাল খারাপ ডাইনিং রুম এর দরজা দিয়া আর বের হইতে পারলাম না। কারন ততক্ষনে র‍্যাব সাহেব তার বিশাল শরীর নিয়া ডাইনিং রুম এর দরজায় হাজির হইয়া গেছিল।

১ম চোরঃ তারপর? ২য় চোরঃ তারপর আর কি!! সকালবেলা র‍্যাবের অফিসে নিয়া গেলো। অনেক্ষন কানাঘুসা চলল আমারে কি করা যায় তা নিয়া। কয়েকজন বলতেছিল রঙ্গকলার মাঠে ছাইড়া দিতে আর কয়েকজন বলল কোর্টে চালান কইরা দিত। শেষমেশ সিদ্ধান্ত হইল যে আমারে রঙ্গকলার মাঠে ছাইড়া দেয়া হইব। আমিও সিদ্ধান্তে খুশি হইছিলাম কারন র‍্যাবের মুখে এই দুইটা সিদ্ধান্তের বাইরে আর কোনো কথা মানে করসফায়ার এর কথা শুনি নাই।

কিন্তু, কীয়ের কী!!! পরেরদিন ভোরে রঙ্গকলার মাঠে নিয়া কয়, “দৌড়া!! সোজা দৌড়াবি, আমাদের জুনিয়র অফিসার প্র্যাকটিস করবে!!”। ১ম চোরঃ হুহ! তুই তো তাইলে তেমন কষ্ট পাইয়া মারা যাস নাই। তোর কপাল ভালা। ২য় চোরঃ তুই কীভাবে মারা গেলি? ১ম চোরঃ আমি মারা গেছি গনপিটুনি খাইয়া। সাইন্সল্যাবের মোড়ে ওভারব্রিজের ওপর থাইকা এক মহিলার ব্যাগ টান দিছিলাম।

ব্যাগ টান দেওয়ার সাথে সাথে মহিলা টের পাইয়া, চোর বইলা এমন চিৎকার দিল যে, আমি ভয়ে ব্যাগ ছাইড়া দৌড় দেই কিন্তু কপাল খারাপ! ওভারব্রিজ থাইকা নাইমা সরাসরি পাবলিকের হাতে! ২য় চোরঃ তা ব্যাটা তুই বেশ কষ্টেই মরলি রে। ১মঃ এহ!তুমি কম কষ্টে মরছ!! দৌড়াইয়া মারাইছে,তাও জুনিয়র র‍্যাব দিয়া। ২য়ঃআর তুই? তুই তো গনপিটুনি খাইয়া! ছিঃ মহিলার ব্যাগ চোর। ১মঃ এই ব্যাটা আমারে চোর বললি ক্যান? তুই চোর,তোর বাপ চোর! ২য়ঃএই ব্যাটা বাপ নিয়া কথা বলবি না! নিজে চোর আবার অন্যরে কয়, লজ্জা না থাকলে এমনই হয়। ১মঃ এহ! চোরের আবার বড় গলা!! ২য়ঃ ব্লা ব্লা ব্লা...... ১মঃব্লা ব্লা ব্লা...... ২য়ঃব্লা ব্লা ব্লা...... ............... নরকের প্রহরী দুই চোরের ঝগড়া দেখছিল এতক্ষন ধরে।

এবার বিরক্ত হয়ে উঠে এসে ঘন্টা বাজিয়ে বলল, “ যাহ ব্যাটা তোদের সাপ্তাহিক ছুটি দেয়া হবে না আর! এখন থেকে সপ্তাহে সাতদিনই তোদেরকে নরকের “স্পেশাল ডিমচালান” দেয়া হবে আর সাথে “লোহা গরমি” তো থাকছেই”। এই বলে প্রহরী চলে যাচ্ছিল, যাওয়ার আগে প্রহরী মাটলু আর ছাটলু নামের দুই প্রহরী কে ডাক দিয়ে বলল, “এই তোরা এই দুইটাকে নরকের ৬ নাম্বার গেটের ৪৫৩৬৩৬৩৫৪ নাম্বার রুমে নিয়া ঢুকা। আর ছুটির দিনে এদেরকে কি কি শাস্তি দেয়া হবে তা জানিয়ে দিবি এদেরকে”

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.