আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রাকৃতিক পরিবেশ ঠিক রেখে রাজশাহীর শহরের উন্নয়ন করতে হবে


প্রাকৃতিক পরিবেশ ঠিক রেখে রাজশাহীর শহরের উন্নয়ন করতে হবে আঞ্চলিক সেমিনারে বিশেষজ্ঞদের অভিমত রাজশাহী শহরের যে মাঠ-পার্ক নির্মাণ, জলাশয় সংরণ ও সংস্কার এবং হাঁটার সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। নগরে মানুষের হাঁটার সুবিধা যত বৃদ্ধি করা হবে ততই যান নির্ভরতা কমবে, দূষণ কমবে। মানুষের মধ্যে সামাজিক সম্পর্ক গড়ে উঠবে। যা নগরকে প্রাণবন্ত করে তুলবে। এ সকল বিষয় বিবেচনা সাপেক্ষে রাজশাহী নগরের উন্নয়ন করার সময় প্রাকৃতিক পরিবেশ ঠিক রাখতে হবে।

আজ সকাল সাড়ে ১১টায় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইন্টিগ্রেটেড কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট (বিআইসিডি) এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর সম্মিলিত আয়োজনে “নগরায়ন, যানজট ও পরিবেশ: প্রেক্ষিত রাজশাহী” শীর্ষক আঞ্চলিক সেমিনারে এ সকল আলোচনা হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভূতত্ব ও খনিজ বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও বিআইসিডি’র নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. ইউনুস আহমেদ খান এর সভাপতিত্বে সেমিনারে ”নগরায়ন, যানজট ও পরিবেশ: প্রেতি রাজশাহী” বিষয়ক সামগ্রিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) এর সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ নিয়ামুল বারী এবং “নগরায়ন, যানজট ও পরিবেশ” বিষয়ক আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা বিষয়ক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর ন্যাশনাল এডভোকেসি অফিসার মারুফ রহমান। এতে আলোচনা করেন বাপা “নগরায়ন, যানজট ও পরিবেশ” বিষয়ক আঞ্চলিক সেমিনার আয়োজক কমিটির আহবায়ক মহিদুল হক খান, নবাবগঞ্জ মহিলা কলেজ এর সাবেক অধ্য অধ্যাপক মোঃ তরিকুল ইসলাম, সমাজসেবা অধিদপ্তর রাজশাহীর সাবেক সহকারী পরিচালক জায়তুনা খাতুন প্রমুখ। সেমিনার সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর প্রকল্প সমন্বয়কারী আমিনুল ইসলাম সুজন। সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ইউনুস আহমেদ খান বলেন, পদ্মা নদীকে কেন্দ্র করে রাজশাহী শহর গড়ে উঠেছে।

কিন্তু এখন এ নদী মৃতপ্রায়। পদ্মা নদীকে রা করতে হবে। এ নদীর পাড়কে মানুষের হাটা ও বিনোদনকেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি রাজশাহী শহরে অনেক পুকুর ও জলাধার আছে সেগুলো রা করা দরকার। আর কোন পুকুর যেন উন্নয়নের নামে দখল না হয়, ভরাট না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে।

আগামী প্রজন্মের শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত খেলাধুলার সুযোগ রাখতে হবে। অধ্যাপক মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, নগরে অনেক গাছ লাগাতে হবে। গাছ কমে গেলে নগর ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠবে। রাস্তা ও বাড়ীর পাশে, পার্কে সব জায়গায় পরিকল্পিতভাবে গাছ লাগাতে হবে। মহিদুল হক খান বলেন, পরিবেশ এখন আর কোন একটি এলাকার সমস্যা নয়।

তাই রাজশাহী সামগ্রিক উন্নয়ন করার সময়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ ঠিক রাখার উপর গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি বাপা’র সামাজিক আন্দোলনে অংশ নেয়ার জন্য সব শ্রেণী পেশার মানুষের প্রতি আহবান জানান। প্রবন্ধে মারুফ রহমান বলেন, নগর মানে ইট-কাঠ-যানবাহন এর যান্ত্রিকতা নয়, এখানে মানুষকে প্রাধান্য দিতে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা দরকার। উন্নত দেশগুলো নগরে মানুষের হাঁটা, সাইকেল চলাচলকে উৎসাহিত করছে। আমাদের নগরগুলোতে এ সুবিধাগুলো রাখা দরকার।

সমাজসেবা অধিদপ্তর রাজশাহীর সাবেক সহকারী পরিচালক জায়তুনা খাতুন বলেন, রাজশাহীতে হাঁটার উপযোগী ফুটপাত নির্মাণ করতে হবে, যাতে মানুষ নিরাপদে হেঁটে চলাচল করতে পারে। তিনি অটোরিকশার লাইসেন্স নিয়ন্ত্রণ ও দূর্ঘটনা এড়াতে এর চালকদের প্রশিণের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। তিনি নগরে ভাসমান মানুষের আবাসন ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা চালুর জন্য নগর কর্তৃপরে প্রতি অহ্বান জানান। ড. নিয়ামুল বারী তার প্রবন্ধে বলেন, রাজশাহী শহর এখনও মানুষের বসবাস উপযোগী আছে। কিন্তু সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে এ অবস্থা ধরে রাখতে হবে।

নগরীতে ফুটপাতগুলো মানুষের হাঁটার উপযোগী রাখতে হবে। পুকুরগুলো রা করা পানি পরিস্কার রাখতে হবে। বর্জ্য পরিশোধন ব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার। সেমিনারে বসবাসের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টিতে নগরীর জন্য একটি অভিভাবক সংস্থা প্রতিষ্ঠা করা; নগরীর সকল পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় করা; সরকারী ও বেসরকারী সংস্থার মধ্যে কাজের সমন্বয় করা; পরিকল্পনায় জনসাধারণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা; জাতীয় বাজেটে আলাদা বরাদ্দ বৃদ্ধি ও এর সুষম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে; নগর ও যাতায়াত ব্যবস্থার মধ্যে সমন্বয় করা; হাঁটা, সাইকেল, রিকশা চলাচলের সুবিধা আরো বৃদ্ধি করা; নগরের অভ্যন্তরে পাবলিক বাস সার্ভিস চালু করা; অটো রিকশা ও মোটর সাইকেল নিয়ন্ত্রণ করা; প্রাইভেট কার ব্যবহার বাড়তে না দেওয়া; আন্তনগর যাতায়াত ও মালামাল পরিবহনে রেলের স¤প্রসারণ ও আরো কার্যকর করা; মিশ্র এলাকা তৈরি করা; সকলের জন্য আবাসন সুবিধা রাখা; দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থান এর ব্যবস্থা করা; নতুন নতুন কৃষিনির্ভর শিল্প কারখানা স্থাপন করে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা; পর্যাপ্ত মাঠ ও পার্ক নির্মাণ ও বিদ্যমানগুলি সংস্কার সাপেে মানুষের ব্যবহার উপযোগী করা; পুকুর দখল ও দূষণমুক্ত রাখা; মেডিকেল বর্জ্যসহ সকল প্রকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পদপে গ্রহণ করার সুপারিশ তুলে ধরেন।
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.