আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টেম্পুসহ গণপরিবহন ধূমপানমুক্ত রাখা হবে বিআরটিএর সেমিনারে সংশ্লিষ্টদের ঘোষণা


বাস, ধূমপান বা তামাক সেবন না করেও শুধুমাত্র পরোক্ষ ধূমপানের কারণে পৃথিবীতে প্রতিবছর ৬ লক্ষ মানুষ মারা যাচ্ছে। শুধু শিশুই মারা যাচ্ছে দেড় লক্ষাধিক। এছাড়া পরোক্ষ ধূমপানের কারনে নারী-শিশুদের নানারকম স্বাস্থ্য ক্ষতি হচ্ছে। তাই পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনকে শতভাগ ধূমপানমুক্ত করতে হবে। পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি হতে নারী-শিশুসহ অধূমপায়ীদের রক্ষায় আজ থেকে বিআরটিএ পাবলিক পরিবহন ধূমপানমুক্ত রাখার সকল উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

আজ ২৭ নভেম্বর ২০১০ সকাল ১০টায় বাংলাদেশ রোড ট্রান্সর্পোট অথরিটি (বিআরটিএ),বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট ও ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের যৌথ আয়োজনে বিআরটিএ এর মিলনায়তনে “গণপরিবহন ধূমপানমুক্ত রাখার প্রয়োজনীয়তা ও করনীয়” শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা উক্ত কথা বলেন। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সড়ক ও রেলপথ বিভাগের সচিব মোঃ মোজাম্মেল হক খান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ প্রাণ গোপাল দত্ত এবং ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার বেনজীর আহমেদ বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) এর চেয়ারম্যান মোঃ আইয়ুবুর রহমান খান-এর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এর ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী হেলাল আহমেদ ও বিআরটিএ’র পরিচালক (বাস্তবায়ন) তপন কুমার নাথ। সেমিনার সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর প্রকল্প সমন্বয়কারী আমিনুল ইসলাম সুজন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সচিব মোঃ মোজাম্মেল হক খান বলেন, আইন অনুযায়ী পাবলিক পরিবহনগুলো ধূমপানমুক্ত। কিন্তু বাস ও টেম্পু চালকরা যানবাহনে ধূমপান করার অভিযোগ রয়েছে। এজন্য এখন থেকে পাবলিক পরিবহন ধূমপানমুক্ত রাখতে যানবাহনে নো-স্মোকিং সাইনসহ লেখা রাখা বাধ্যতামূলক করা হবে। নইলে ফিটনেস দেয়া হবে না। এছাড়া কোন চালক যেন যানবাহনে ধূমপান না করেন সেজন্য চালকদের প্রশিক্ষণে ধূমপানসহ তামাক ও মাদক সেবন অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।

অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের কারনে ৬০% নারী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিশুদের ক্ষেত্রে পরোক্ষ ধূমপান কানে পচা রোগ, হাপানি, যক্ষার ঝুকি বাড়িয়ে দেয়। অধূমপায়ীদের মৃত্যুঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে গণপরিবহন এর মত যানবাহনগুলো শতভাগ ধূমপানমুক্ত করা দরকার। তিনি ইংল্যান্ডের একটি উদাহরণ দিয়ে বলেন, পরোক্ষ ধূমপানের প্রভাব থেকে অধূমপায়ীদের রক্ষা করতে পারলে দেশের হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা প্রায় ২০ভাগ কমে আসবে। ডিএমপি কমিশনার বেনজির আহমেদ বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে পুলিশের ক্ষমতা সীমিত।

তবে পুলিশ দায়বদ্ধতা থেকেই এ আইন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ডিএমপি সদর দপ্তর ও আওতাধীন সব থানাসহ সারাদেশের থানাগুলোকে ধূমপানমুক্ত করা হয়েছে। তবে এ আইনের কার্যকর বাস্তবায়নের জন্য পুলিশকে ক্ষমতায়িত করা দরকার। পাশাপাশি তামাকের ব্যবহার কমাতে এর দাম ও এর উপর কর বৃদ্ধি করতে হবে। ড. মোস্তফা জামান বলেন, তামাকের ভয়াবহতা ও তামাকজনিত মৃত্যু ও পঙ্গুত্ব কমাতে বিদ্যমান আইনকে আরও শক্তিশালী করা দরকার।

পাশাপাশি পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে ধূমপানের জন্য জরিমানা বৃদ্ধি করতে হবে। আবু নাসের খান বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে পুলিশ, বিআরটিএ, যানবাহন চালকদের ক্ষমতায়িত করে আইন উন্নয়ন করতে হবে। পাশাপাশি দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ সভাপতির বক্তব্যে আইয়ুবুর রহমান খান বলেন, ধূমপান শুধু মাদক সেবনেরই প্রবেশ পথ নয়, এটা দুর্নিতীর প্রবেশ পথ। তাই মাদকাসক্তি থেকে তরুণ প্রজন্মকে রক্ষা ও দুর্নিতী কমাতে ধূমপানের উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে হবে। বিআরটিএ’র অধিন সকল বাস, টেম্পুসহ অন্যান্য যানবাহনকে ধূমপানমুক্ত রাখতে সকল পদক্ষেপ নেয়া হবে।

অনুষ্ঠানে যানবাহন মালিক-চালক, বিআরটিএ-সহ যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, ডিএমপি কর্মকর্তা, সাংবাদিক, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এর বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। ধন্যবাদসহ মাসুদ রানা মিডিয়া বিভাগ
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।