আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বর্তমান পেক্ষাপটে আমাদের সমাজে এখন যা যা ঘটে চলছে

যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে.

ব্লগ এ এর আগেও অনেক লেখা এসেছে সামাজিক বিষয় গুলো নিয়ে। এসব বিষয় গুলো এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে এদের কে পাশ কাটিয়ে কোন ভাবেই জীবন যাপন করা যায় না। বরং সমাজে এসব ঘটে যাওয়া অসঙ্গতি কে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে তা সমূলে উৎপাটন করাকে সবচেয়ে সম্মান জনক কাজ হিসেবে গ্রহণ করা উচিত। কিন্তু একটা ব্যাপার দেখেন। সেটা হল এই যে এত লেখা আসছে পত্রিকা গুলোতে, মিডিয়ার মাধ্যমে, রেডিও তে কিংবা সাম্প্রতিক সময় বাংলা ব্লগ গুলোতে ; কিন্তু কই?? সচেতনতা কি আমাদের মধ্যে তেমন একটা এসেছে? আমরা কি পেরেছি এসব থেকে নিজেদেরকে আলাদা করে রাখতে?? কিছু মুষ্ঠিমেয় মানুষ হয়ত পেরেছে এসব থেকে দূরে থাকতে।

কিন্তু তা নিতান্তই সামান্য। প্রথম -আলোর একটি বিজ্ঞাপন এর কথা না বললেই নয় যা সাম্প্রতিক সময়ে খুব প্রচারিত হচ্ছে। নিজের দেশকে নিয়ে যে বিজ্ঞাপন তারা প্রচার করছে তা আসলেই প্রসংশার দাবী রাখে। নিজের দেশকে ভালবাসে না এমন মানুষ খুব কমই আছে। আমাদের পাশের দেশ ভারত এ দেখেন।

তারা যাই করুক না কেন। তাদের দেশ কে তারা অনেক বেশি ভালবাসে। এটা তাদের কাজ দেখলেই বুঝা যায়। যাই হোক, যেটা বলছিলাম। আমাদের সমাজ ব্যাবস্থার যে ক্রম অবনতি ঘটছে তা আসলেই চোখ এ পড়ার মতন।

অথচ এ ব্যাপারে কারো মাথা ব্যাথা নেই। শুধু শাস্তি দিলাম, ফাঁসি হল। বাকি সহযোগিদের ধরে জেল এ ভরা হল। ব্যাস!! এতটুকুই কি কাজ?? এরকম অপরাধ যাতে আর না হয় এ ব্যাপারে সবার সজাগ থাকা ; এটাও কিন্তু অনেক জরুরি একটা বিষয়। আজ থেকে ১০ বছর আগেও যেখানে লিভ টুগেদার এর কথা আমাদের সমাজে খুব একটা পরিচিত ছিল না সেখানে এখন তা হরহামেশাই শোনা যায়।

বাংলাদেশ এর মত যায়গায় এরকম একটা ব্যাপার মাথাচারা দিয়ে উঠবে তা হয়ত কেউ কল্পনাও করেন নি। এসব তো আমাদের সমাজ ব্যাবস্থার মধ্যে ছিল না। কিংবা আরো ভাল করে বললে বলতে হয় এই ব্যাপার টা আমাদের ইসলাম প্রধান দেশ এ গ্রহণযোগতা পায় না। একটা সহজ উধাহারণ দেই। ধরেন আপনি মফস্যলে থাকেন।

আপনার একমাত্র মেয়ে বা ছেলে ঢাকা থেকে পড়াশুনা করছে। মেধাবী হিসেবে তার শুনাম ও আছে। ঢাকার ভাল কোন পাবলিক বা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি তে সে পড়ে। আপনি ধরে নিয়েছেন যে সে খুব ভাল আছে ঢাকা তে। মাসে মাসে টাকা পাঠাচ্ছেন।

যখন যা লাগছে দিচ্ছেন। কখন ও তার উপর সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকান নাই। কিন্তু পরে যদি জানতে পারেন আপনার ছেলে বা মেয়ে পড়াশুনা কে ছুটি দিয়ে সমানে লিভ টুগেদের বা পরকীয়া করে বেড়ায় তখন আপনার কেমন লাগবে?? সমাজে আপনি তখন মুখ দেখাতে পারবেন?? এসব পরকীয়া, লিভ টূগেদার যারা করছে তারা কি করে তাদের মুখ সবার সামনে দেখায় বুঝি না। তাদের কি বিন্দু মাত্র লজ্জা ও নাই?? সামাজিক দায়ভার নাই?? কিংবা তারা কি একবার ও ভেবে দেখে না যে তাদের পরিবারের কথা?? এত নৈতিকতার অবক্ষয় তো আমরা দেখেতে চাই নি। তারা বীরের মত এসব কাজ করছে আর মিডিয়ার সামনে বা তাদের অজান্তেই পত্রিকা তে এসব খবর আসছে প্রতি নিয়ত।

এর দায়ভার আসলে কে নিবে?? পরিবার নাকি অন্যরা?? তারা এতটা নিচে কি করে নামতে পারে? এদের মধ্যে কি কোন বোধ শক্তি বলে কিছু নাই? পাশ্চাত্যের অনূকরণ করে করে হয়ত তাও আমরা হাড়িয়ে ফেলছি। ধরেন - আপনি সকাল / বিকালে এ হাটতে বের হন। আপনি তখন আসলে কি চাইবেন মন থেকে? এটাই তো চাইবেন যে রাস্তা ঘাট পরিষ্কার থাকবে, সুন্দর হাওয়া বইবে চারপাশ থেকে কিংবা চারপাশের পরিবেশ থাকবে শান্ত। কিন্তু আপনি সেরকম পরিবেশ এখন কোথাও পাবেন না। এটাই বাস্তবতা।

শান্তি মত আপনি হাঁটতে ও পারবেন না। আপনি যেই উদ্দান এই যান কিছু না কিছু দেখতেই পাবেন। হয় কোন জুটি অন্তরং ভাবে বসে আছে কিংবা সবার চোখ এড়িয়ে তারা সুখ নিচ্ছে। কিংবা আপনি দেখলেন উদ্দানে মাদক সেবীদের যাদের দেখলে আপনার মনেই হবে না তারা এসব করতে পারে। আর এসব যখন কোন ১২ - ১৬ বছর বয়সের বালক অথবা বালিকারা দেখে তখন তারা এসব থেকে তো ভাল কিছুর শিক্ষা পেতে পারে না।

একটা বিষয় মেনে নিতে হবে আর সেটা হল বর্তমানে এসব কোমলমতি ছেলে মেয়েরাই দেখে দেখে অভ্যস্থ হয়ে যাচ্ছে। কারণ ১০ / ১৫ বছর আগেও এমন বয়সে কোন লেক পাড়ে কিংবা উদ্দান এ বসে থাকার মত সাহস কারো হত না। পরিচিত কেউ দেখে ফেলবে তাই নিজের ভাল / সম্মান রক্ষার জন্য এসব থেকে কিছুটা হলেও তারা বিরত থাকত। কিন্তু এখন অবাকই লাগে যখন দেখি কোন মুরুব্বীদের সামনেই এসব ছেলে মেয়েরা সিগারেট খায় বা মাদক নেয়। এসব কোমলমতি ছেল মেয়েরা কি করে শিখে এইসব ব্যাপার গুলো? সবার মনেই এমন প্রশ্ন আসতে পারে।

তারা শিখে তাদের চারপাশের পরিবেশ পরিস্থির কারণেই। নিষিদ্ধ জিনিষের প্রতি সবার আগ্রহ থাকে সবসময়। তেমনি এসব এর প্রতি আগ্রহ তাদের জন্ম নিতে থাকে এসব দেখে দেখেই। তাদের মধ্যে হিতাহিত জ্ঞান লোপ পেতে থাকে প্রতিনিয়ত। ভাল কে ভাল আর খারাপ কে খারাপ এসব ব্যাপার তারা বুঝে না।

১৪/১৫ বছর এক ছেলের মুখে যদি কেউ এখন প্রেম আর ভালবাসার বুলি আওড়াতে শুনেন তাহলে এটাকে নরমাল বলার কোন যুক্তি নাই। কারণ এই বয়সে কেউ প্রেম ভালবাসা কি এটা বুঝার ক্ষমতা জন্ম নেয় না। অথচ এখন এসব ঘটনাও ঘটে চলছে আমাদের চোখের সামনেই। তারা যদি তাদের চোখের সামনেই এসব দেখতে থাকে তাহলে তারা এটা কে গ্রহণ করবেই। বিভিন্ন নাটক, সিনেমা, গান, পত্র পত্রিকা তো এতে অগ্রগণ্য ভুমিকা পালন করে আসছে।

আমার তাই মনে হয়। আর এসব বয়সের ছেলে মেয়েরা নানা যায়গায় এখন ঘুড়তে বের হয়। লেক পাড় কিংবা উদ্দান এ এসব দেখে দেখে তাদের মধ্যে প্রেম আর ভালবাসার প্রতি আগ্রহ জন্ম নেয়। তাই এখনই সময় সচেতন হওয়ার। সমাজ ব্যবস্থা এমন নড়বড়ে হবার পিছনে আসলে সবাই কম বেশি দায়ী বলে আমি মনে করি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.