আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুহিব একদা থাইল্যান্ড গিয়েছিল - ৩

আল বিদা

ব্যাংককে যাওয়ার বাসের টিকেট কেটে বসে আছি আর ভাবছি কিভাবে পাতায়াতে দিনটা কাটালাম। হঠাৎ মনে হল আমার পাসপোর্ট কোথায়? সাথে সাথে বাস স্টেষনে দাড়িয়েই লাগেজ খুলে ব্যাগ চেক করলাম। যে কাপড় পড়ে ছিলাম তা চেক করলাম। কিন্তু কোথাও পেলাম না। ঠান্ডা একটা শিহরন আমার পিঠ বেয়ে নেমে এল।

বুঝতে পারলাম কি একটা বিপদে পড়েছি। তাও ভাল বাসে উঠার আগেই মনে পড়েছে। কোন কোন জায়গায় পাসপোর্ট দেখিয়েছিলাম তা ভাবলাম। ডিসিশন নিলাম ফেরত যাব হোটেলে। টিকেট ফেরত দিলাম।

কি বিপদে পড়লাম! মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে বুঝলাম কিন্তু মাথা ঠান্ডা হল না। এখন কিভাবে পাসপোর্ট পাব? পুলিশে খবর দিতে হবে। পুলিশ হয়ত বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে ফেরত দিবে। আর কি কি ফরমালিটি বা ঝামেলা হবে তাই ভাবা শুরু করে দিলাম। আরও ভাবতে শুরু করলাম কোন পাপে আমার এই হাল হল।

কি এমন করেছিলাম যে আমার এই হাল। ওয়াদা করলাম ঐ পাপ আর করব না। তখনই চোখে পড়ল ব্যাগের একটা পকেট যা চেক করা হয় নাই। ঐ পকেটেই পেয়ে গেলাম পাসপোর্ট। যদিও ওয়াদা রক্ষা করা হয় নাই।

পরের বাসে ব্যাংকক ফিরলাম। আর তখনই করলাম আরেকটি ভুল। ঐদিন ছিল ব্যাংককে আমার ২য় দিন। অথচ আমার মধ্যে যাই যাই রব উঠে গিয়েছে। তাই আমি চলে গেলাম এয়াপোর্টের কাছের একটা হোটেলে।

টিকেট তো আর পেলামই না বরং এক বিরান মরুভূমির মধ্যে থাকতে হল পুরো ১ দিন। হোটেলে জিজ্ঞেস করে রওয়ানা হলাম কাছের এক মার্কেটে যেখানে যাওয়ার রাস্তা আর ফুরোয় না। বিরক্ত হয়ে নেমে গেলাম। দেশে আমার ট্রাভেল এজেন্টকে ফোন করলাম। কিছুতেই পরদিনের টিকেট পেলাম না।

সারা রাত বিরক্তির সাথে পার হয়ে পরদিন আবার চলে গেলাম ব্যাংকক। বামরুনগ্রাদ হসপিটালের কাছে এক হোটেলে উঠলাম। তখন মনটা কিছুটা হালকা হল। সন্ধ্যায় এয়ারপোর্ট গেলাম যদি রিটার্ন টিকেট কোনভাবে ম্যানেজ করা যায়। সন্ধ্যার একটু আগে গিয়ে হাজির হলাম।

বিমানের সাঈদ ভাই বললেন অপেক্ষা করতে। আমি সুবর্নভূমি এয়ারপোর্টের নামাযের ঘরে গিয়ে আসর নামায পড়লাম। নামাযে দাড়ালাম তখন এক থাই বলল জামাত করতে। জামাত শেষে তার সাথে অনেক কথা হল মসজিদে বসেই। তারপর মাগরিবের নামায পড়ে আবারও চেক করতে গেলাম।

কিন্তু ফল কিছুই পেলাম না। পুরো ব্যর্থ হয়ে গেলাম ঈশার নামায পড়তে। তখন বাহরাইনের এক ভদ্রলোক আবারও জামাত করতে বললেন। আমি একটা ব্যাপার খেয়াল করলাম। এয়ারপোর্টের কত কত দেশের মুসলিমরা নামায পড়ল।

২জন হলেই তারা জামাতে দাড়িয়ে যায়। এমনকি ইমামতি নিয়েও কোন কথা বলে না। জাস্ট আমার পিছনে দাড়িয়ে আকামত দেয়া শুরু করে। আমি যে ইমামতি করার অনুপযুক্ত এক বান্দা তা বলার সুযোগই পেলাম না। ফেরার পথে এয়ারপোর্ট থেকে আমার মত টিকেট না পাওয়া একজন বাংলাদেশীকে নিয়ে ফিরলাম।

সে ছেলে না মেয়ে তা আর বললাম না। তাকে নিয়ে রাত কাটিয়ে পরদিন দুপুরের ফ্লাইটে দেশে ফিরলাম। ৩দিন পর ফিরেই মনে হল কতদিন পর দ্যাশে ফিরলাম!!! (পরের পর্বে ব্যাংকক নিয়ে কিছু টিপস দেয়ার চেষ্টা করব। )

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.