পথে নেমেছি; পথই আমায় পথ দেখাবে।
চর্যাগীতি এবং তার আধুনিক বাংলা রূপান্তর
(অষ্টম ও নবম শতক)
প্রায় হাজার বছর আগে রচিত চর্যাগীতির বিষয়বস্তু বৌদ্ধ সহজিয়া ধর্মভিত্তিক। গীতগুলির ভেতর দিয়ে পূর্বভারতীয় প্রাকৃতিক বর্ণনা ও তৎকালীন নর-নারীর জীবনের ও সেই জায়গার মানব সমাজের ছবি দেখতে পাওয়া যায়। বাংলার এই প্রাচীনতম সাহিত্যকর্ম আবিস্কার করেন মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ১৯০৭ সালে নেপাল নরেশের পুস্তক সংগ্রহে। এই কঠিন বিষয়ে গবেষণা করেছেন বাংলার আরও জ্ঞানী ও পণ্ডিত ব্যক্তিত্ব।
তাঁদের মধ্যে আছেন অধ্যাপক প্রবোধ চন্দ্র বাগচী, তারাপদ মুখোপাধ্যায়, অধ্যাপক মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্, অধ্যাপক মনীন্দ্রমোহন বসু, শান্তিভিক্ষূ শাস্ত্রী, আচার্য় শ্রী প্রবোধচন্দ্র সেন, অধ্যাপক নীলরতন সেন প্রমুখ।
চর্যাপদ সম্পর্কে আরও জানতে উইকি
------------------------
১। কাআ তরুবর পঞ্চ বি ডাল।
রাগ: পটমঞ্জরী। লূইপাদানাম্।
কবি: লুইপাদ
কাআ তরুবর পঞ্চ বি ডাল।
চঞ্চল চীএ পইঠো কাল । । ধ্রু। ।
দিঢ় করিঅ মহাসুহ পরিমাণ।
লুই ভণই গুরু পুচ্ছিঅ জাণ । । ধ্রু। ।
সঅল সমাহিঅ কাহি করিঅই।
সুখ দুখেতেঁ নিচিত মরিঅই । । ধ্রু। ।
এড়ি এউ ছান্দক বান্ধ করণক পাটের আস।
সুন্ন পাখ ভিড়ি লাহুরে পাস । । ধ্রু। ।
ভণই লূই আম্ হে ঝাণে দিঠা।
ধমণ চমণ বেণি পান্ডি বইঠা । । ধ্রু। ।
-------------------
(আধুনিক বাংলারূপ)
কায়া তরুবর, পাঁচই ডাল।
চঞ্চল চিত্তে প্রবিষ্ট কাল১। ।
দৃঢ় করে মহাসুখ পরিমাণ কর।
লুই বলেন, গুরুকে পুছিয়া জান।
।
সকল সমাধিত কেন করা হয়।
সুখ-দুঃখেতে নিশ্চিত মরতে হবে। ।
এড়িয়ে এই ছন্দের বন্ধন (এবং) করণের (ইন্দ্রিয়ের) পারিপাট্যের আশা।
শূন্য পাখায় ভর করে লও রে (তার) পাশ। ।
লুই বলেন, আমি ধ্যানে দেখেছি।
ধমন-চমন২ দুই পিড়াতে বসেছি। ।
---------------------
১ ধ্বংসকারী মহাকাল
২ শ্বাস-প্রশ্বাস
---------------------
অধ্যাপক নীলরতন সেনের (১৯২৫-২০০০) "চর্যাগীতিকোষ" গ্রন্থ থেকে। গ্রন্থটির প্রকাশক- সাহিত্যলোক, ৩২/৭ বিডন স্ট্রীট, কলকাতা ৭০০০০৬।
চলবে...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।