আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উড়াধুরা ঈদ কাহন



কোরবানীর ঈদ মানেই অনেক ঝক্কি ঝামেলা। নানা রকম কাজ কর্ম এক গরু সামলানো নিয়া। গরু কিনা দিয়া ঈদের আগ থাইকাই শুরু হয় ঝামেলার। গরুর হাটে গিয়া গরু কিনা, এর চেয়ে কঠিন কর্ম বছরে মনে হয় আর দুইটা হয় না। কোনো রকমে গরুটরু কিনা ঈদের নামাজ খান পৈড়াই ঘুম।

তারপর বৈকালে উঠে গরুর মাংস হালাল করা শুরু। ---------- ভাবনা গুলা আমার না, তবে অনেকের! কেনরে ভাই, ঝামেলা ছাড়া কি জীবনে কোনো কিছু সরল পথে আসে! জীবন মানেই মহা ঝামেলা। তাই ঝামেলা মাঝেই যেটুকু আনন্দ লুপে নেয়া যায় তার চেষ্টা করি না কেন! এই কথা শুধু ঈদ বলে না,( জীবনের সকল ক্ষেত্রে প্রজোয্য। ) এইবার আমার কিছু ঈদ কাহন-------- আব্বা ভাইয়ারা যখন গরুর হাটে গরু কিনার জন্য মহা সমারহে রওনা দেয়, আমারও যাইতে ইচ্ছা করে। কিন্তু গ্রামের বাজার বলে তার কোনো সুযোগ নাই।

আমাগো গরু কিনার সময় প্রতি বারই একটা ঝামেলা হয়। তা হল আমার মেজভাই। তিনি গরুর হাটে গিয়া বাজারের সেরা ১০/১২ টা গরু যেখানে থাকে তার আশপাশেই ঘুর ঘুর করতে থাকেন। কিন্তু আব্বা যে বাজেট করে গরু কিনতে যান, দেখা যায় সে গুলার দাম তার ডাবল। এমনও দেখা গেছে গরুর মালিক সহ বাড়িতে নিয়ে এসে আরও টাকা দিয়ে গরুর দাম পরিশোধ করতে হয়েছে।

তারপর তো শুরু হয় আব্বার ঝারি। পরের বছর আর তুই বাজারে যেতে পারবি না। কিন্তু পরের বছর আবার একই ঘটনা। অন্যদের সাথে গরু কাটাকুটি আমরা সব ভাইবোনরা মিলে করি। ঐ মাংস কাটার সময় যে পরিমান হাসিঠাট্টা হয়, সেখানে ঈদের আনন্দ অনেকাংশই বাইড়া যায়।

আর মাংস না কাটলে ঈদ ঈদ মনে হয় না কেন জানি! গরু মাংস আর চালের রুটি মনে হয় সবারই পছন্দের খাওন। অনেকেই ঈদের পরে খেয়ে থাকে এইটা কিন্তু আমাগো পরিবারে সব রুটি খাদক কিনা, তাই মাংস ঘরে আসার আগেই রুটি বানানো শেষ। রুটি বানাতে আমাগো বড়লোকের বেটি ভাবীর কান্ডে ভাইয়ার কাজ খালি ভাবীরে ক্ষেপানো। বেচারী কোনো দিন আগে রুটি বানাইনি, আমাগো মধ্যসারির পরিবারে আইসা খাইচে ধরা। একেক খান রুটি যেন একেক দেশের মানচিত্র।

তার এই করুন দশা দৈখা, শেষ পর্যন্ত কইতে হইত ঠিক আছে ভাবী তুমি যাও আমরা করে নিব। ভাইয়া তখন সুযোগ পাইয়া আবারও শুরু-------- হ্যাঁ তুমি যাও মানচিত্র দিয়া মাংস খাওয়া যাবে না। তার চেয়ে ওরা রুটি বানাক। শুনে ভাবীজান রাগে যে লাল মরিচ হৈয়া যায় তা আড়চোখে দেখি। ব্যবাক কাজ কর্ম শেষ করে এবার খাওনের পালা! খিদায় সবাই অস্থির।

খাইতে বসে এবার শুরু, কে কয়টা রুটি খাইতে পারে তার বাজি ধরা। ভাইয়ারা একেক জন ৩০/৩৫ টা করে রুটি খাইয়া আর নড়তে পারে না। তারপর রুটি হজম করানো নিয়া নানা রকম কান্ড শুরু হয়ে যায়। এমনি কৈরাই আমরা আমাদের পরিবার পরিজনদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নেয়ার চেষ্টা করি। খুবই সাধারণ হাসি ঠাট্টা ও খুনসুটি দিয়া ঈদের আনন্দটা উপভোগ করতে চাই।

কোরবানীর মধ্য দিয়া আমাদের সকলের ভিতরের ছোট বড় ত্রুটি গুলোকে কোরবানী দিয়ে এক জন সুন্দর মানুষ হয়ে গড়ে উঠার প্রত্যয় নিয়ে সবাইকে জানাই আগাম ঈদ শুভেচ্ছা----------- ঈদের দিন কেউ ঘুমায়েন্না কইলাম।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।