আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (পীর চরমোনাই)তার এই বিশাল পল্টনের মহাসমাবেশ থেকে চরমোনাই পীরের ঘোষণা, ২৭শে ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে গণমিছিল

মামুন বিশ্বাস

২৭শে ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে গণমিছিল ও স্মারকলিপি পেশ, এরপর পর্যায়ক্রমে সংসদ অভিমুখে গণমিছিল, টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া লং মার্চ এবং সবশেষে রাজধানী ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণার হুমকি দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন। গতকাল মুক্তাঙ্গনে দলের জাতীয় মহাসমাবেশে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (পীর চরমোনাই) এই কর্মসূচির কথা ঘোষণা করে বলেন, আজকের এই সমাবেশে সরকারকে এক নম্বর সিগন্যাল দেয়া হয়েছে। এরপর চূড়ান্ত সিগন্যাল দেয়া হবে। তিনি বলেন, এ দেশের মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকার ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষায় প্রয়োজনে আমরা কাফনের কাপড় নিয়ে মাঠে নামবো। স্বেচ্ছায় জেলে ঢুকবো।

জীবন দেবো। তবু তোমাদের ধর্মনীতি আল্লাহর জমিনে চলতে দেবো না। ইসলামী দল নিষিদ্ধ, বোরকা প্রথা বাতিল, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশের কারণে দুপুরের পর দৈনিক বাংলার মোড়, গুলিস্তান, পল্টন এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে যাত্রাবাড়ী থেকে সায়েদাবাদ, মতিঝিল, প্রেসক্লাব, মৎস্য ভবন মোড়সহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি, খেলাফত আন্দোলন, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), পিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), ন্যাপ ভাসানী, কল্যাণ পার্টিসহ সমমনা কয়েকটি দলের নেতারা সমাবেশের প্রতি সমর্থন জানান ও বক্তব্য রাখেন। সারা দেশ থেকে আগত কয়েক হাজার নেতাকর্মীর মুহুর্মুহু স্লোগানে রেজাউল করীম বলেন, ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় ফেরাউন-নমরুদের মসনদ ধ্বংস হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের মসনদও ভেঙে যাবে। দ্রব্যমূল্য আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ মানুষের দৈনন্দিন সমস্যা প্রতি সরকারকে নজর দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ইসলামের দিকে নজর দেবেন না। এটা মহান আল্লাহর মনোনীত ধর্ম।

তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে তারা ওয়াদা করেছিল ক্ষমতায় গেলে কোরআন সুন্নাহ বিরোধী কোন কাজ করবে না। এখন দেশের মানুষ দেখছে তারা কি করছে। আল্লাহর ফরজ নারীর পর্দা, সেটাকে তারা উঠিয়ে দেয়ার চক্রান্ত করছে। তিনি বলেন, মুখের সামনে তেঁতুল আনলে লালা আসবেই। পর্দা তুলে দিয়ে ইভটিজিং আইন বাস্তবায়ন ধোঁকবাজি।

তারা বিভিন্ন মাদরাসার আঙিনায় সন্ত্রাসী খুঁজছে। অথচ আসল সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়। সংবাদপত্রে ছবি ছাপা হওয়ার পরও তাদের ধরা হয় না। তাদের ধোঁকাবাজি আজ ফাঁস হয়ে গেছে। তিনি বলেন, আল্লাহর আইনের বাইরে হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট, জজকোর্ট কোন কোর্টের রায় আমরা মানি না, মানবো না।

প্রতিবেশী দেশ ভারতে ধর্মীয় রাজনীতি আছে মন্তব্য করে সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, মুসলিমপ্রধান বাংলাদেশে ধর্মীয় রাজনীতি চলবে না- এটা হতে পারে না। আমরা যে কোন মূল্যে আমাদের এই অধিকার রক্ষা করবো। তিনি সরকারের বিরুদ্ধে ধাপে ধাপে আন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়ে বলেন, ঈদের পর ডিসেম্বর মাসব্যাপী সরকারের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমরা প্রচারপত্র বিলি করে জনমত গঠনে প্রচারণা চালাবো। এতে সরকারের টনক না নড়লে ২৭শে ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে গণমিছিল ও স্মারকলিপি দেবো। এতেও কাজ না হলে আমরা এ দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া লং মার্চ করবো।

সব শেষে রাজধানী অবরোধ করবো এবং সরকারের পতন ঘটাবো। দলের নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম, মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, নুরুল হুদা ফয়েজী, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বিকল্প ধারার নেতা মাহি বি চৌধুরী, শেখ শওকত হোসন নিলু, আবু নাসের মো. রহমত উল্লাহ, গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া প্রমুখ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট খোন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, টুপি-দাড়ি দেখলেই জঙ্গি বলে টেলিভিশনের সামনে দাঁড় করানো হয়। যেখান থেকেই ইঙ্গিত আসুক ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারের পতন না ঘটালে ইসলাম টিকবে না। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব টিকবে না।

খেলাফত আন্দোলনের আমীর মাওলানা আহমাদুল্লাহ আশরাফ বলেন, তারা নিজেদেরকে মুসলমান মনে করে না। বাঙালি বলে। এরা মরলে জানাযা নয় কাঠ পুড়িয়ে সম্পদের অপচয়ও করা যাবে না। শফিউল আলম প্রধান বলেন, যে দেশে দিনে-রাতে ৫ বার আল্লাহু আকবর ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস মুখরিত হয় সে দেশের মাটিতে ইসলাম বিরোধীদের ঠাঁই হতে পারে না। মাহি বি চৌধুরী বলেন, ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক সমঝোতা হয়নি।

কিন্তু আমাদের চোখের সামনে ক্ষমতার রাজনীতির নামে ইসলাম নিষিদ্ধ হবে, দেশের সম্পদ লুট হবে- তা হতে পারে না। তিনি অতীতের রাজনীতি থেকে সবাইকে শিক্ষা নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.