মুক্ত আকাশ দেখব বলে বয়ে চলা। আকাশ কেন মুক্ত হয় না।
(যারা এতদিন সাথে ছিলেন সবাইকে ধন্যবাদ। এটি নেহায়েত প্রেমের গল্প, আর ১০টা প্রেমের গল্পের মতোই)
শেষ পর্বঃঅমি শুনছে মনযোগ দিয়ে। লিরা যা বলছে তা হয়ত ঠিক আবার কিছুই ঠিক নয়।
লিরা তোমার এমন করে কথা বলা ঠিক মানায় না। তুমি অনেক আধুনিক। আমি যদি তোমার মত করে বলতা্ম স্বাভাবিক হত। সত্যি করে বলতো তুমিই কি চাইছ না? আমার খারাপ লাগবে না। তুমি কি আমাকে কখনও ভালবাসনি তবে?
তুমি আমার স্বপ্ন হরন করে নিতে পারনা এভাবে।
তুমি এমন করোনা অমি। আমি তোমাকে জানি, তোমাকে এই ১বছরে অনেকখানি দেখেছি। তোমার মধ্যে খারাপ লাগার মত তেমন কিছু নেই। কিন্তু তারপরেও সবকিছু মিলিয়ে যখন এক করতে যাই মিলাতে পারি না ঠিক। কোথায় যেন একটা সমস্যা।
আমি তোমাকে ঠিক বোঝাতে পারব না।
তাহলে নূর ঠিক বলেছে। নূর বলেছিল তোমার সময় শেষ হয়ে গেলে ঠিক চলে যাবে-আমার কথা একবারও ভাববে না। আমি কি তবে তাই ধরে নেব?
না না। তোমাকে চেনা, তোমাকে জানা আমার কোন কিছুই মিথ্যে নয়, তোমাকে ভাললাগা কোনকিছুই মিথ্যে নয়, তোমাকে কাছে পেয়ে আমার ভাললাগা কোনকিছুই খাটো করে দেখোনা প্লিজ।
আমি ঠিক পারছিনা তোমার কাছে থাকতে এটা আমারি ব্যর্থতা।
আচ্ছা ঠিক আছে লিরা তোমাকে আর বলতে হবে না। আমি বুঝে গেছি। কোনকিছুই মনের আহবানের বাইরে গিয়ে করা ঠিক নয়। আমার হয়ত কিছুদিন কষ্ট হবে, আমি হয়ত ভেঙ্গে পড়ব, আমি হয়ত নিজের জগতে আর মানিয়ে চলতে পারব না, আমি হয়ত নিজেকে শান্তনা দিতে পারব না-কেন আমি পারিনি, আমাদের ধর্মটাতো আলাদা ছিল না, আমাদের ভাষাটাতো আলাদা ছিল না।
ঠিক আছে তুমি ভাল থেক। তোমার নিরুদ্দেশ যাত্রা ভাল হউক। শুভকামনা।
অমি প্লিজ তুমি…লিরা কথা শেষ করতে পারে না, অমি থামিয়ে দেয়। আমাকে তোমার কষ্ট করে উপদেশ দিতে হবে না।
এসো তোমাকে এগিয়ে দেই।
লিরা মাথা নিচু করে আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়ায়।
কিছুদিন পর অমির মোবাইলে ম্যাসেজ আসে একটা। লিরা লিখেছে…অমি ঢাকা ছাড়ছি একটু পর। বাসে বসে আছি।
আমি সকল কিছুর জন্যে সরি। পারলে ক্ষমা করো। তোমাকে ফেইসবুকে একটা মেইল করেছি। সময় থাকলে দেখো। মঙ্গল কামনায়- - লিরা।
অমি নূরের সাথে টাওয়ারে বসেছিল। নূর অনেক বকাঝকা করেছে অমিকে। অমি কিছু বলেনি। বলবেই বা কেমন করে। নূর যা বলেছিল তাইতো হয়েছে।
অমির মন ভাল থাকার কোন কারন নেই। পড়াশুনাতেও ঢিলেমি হয়েছে এই ক’দিন। একটু ভেঙ্গে পড়েছে হয়তঃ। তক্ষনি ম্যসেজটা এলো। নূর দেখল।
বলল-বাদ দেতো লিরা ফিরা। এখন চল ক্যান্টিনের দিকে যাই। অমির খুব ইচ্ছা করছিল রুমে গিয়ে মেই্লটা পড়ে।
কিছুক্ষন পর রুমে ফিরে মেইলটা পড়ে হা হয়ে গেল।
অনেক অনেক অনেক প্রিয় অমি,
জানি ভাল নেই।
ভাল থাকার কথাও না। আমি আসলেই অনেক অনেক সরি।
কি করব বল নিজেকে লুকাতে গিয়ে তোমাকে কষ্ট দিয়েছি কতটা তা তুমি আমার থেকে বেশী জাননা। আমার অনেক ভয় ছিল তোমাকে হারানোর। আর তাইতো আমার মত করে তোমাকে পেতে চাইনি।
কি ভেবেছ? তুমি একাই ভালবাসতে পার?
আমি ভালবাসতে জানি না? তোমাকে এমন করে কেন ভালবাসলাম নিজেও ভেবে অবাক হয়ে যাই। ক্যরিয়ার নিয়ে ভাবতে ভাবতে ভালবাসার কথা ভাবিনি কখনো। আর তুমি আমাকে কেমন করে হারিয়ে দিলে। তোমাকে না বলে কয়ে না পেলে অনেক বেশী কষ্ট হত। আর তাইতো মিথ্যে বলে চলে আসলাম।
যখন তুমি আমার মেইল পড়বে তখন আমি ঢাকা ছেড়ে যাব নিশ্চিত। কাছে থাকলে এই মেইল পড়ে জানি তুমি ছুটে আসতে। সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলে। ভালবাসাটা অন্তরেই মরে যাক।
তুমি ভাল থেকো।
লিরা
অমি কি বলবে কি করবে ভেবে পায় না। মাথায় হাত দিয়ে বসে রইল।
পরদিন সকালে লিরা বাংলাদেশ বর্ডার যখন পার করছে তখন ৯টা বেঁজে ১০ মিনিট। মনটা খুব খারাপ, অমিকে এভাবে ফিরিয়ে দিয়ে লিরা একদম ভাল নেই। যাই হউক অনেক অনেক কষ্ট স্বীকার করার চেয়ে এইটুকু না হয় করলই।
বাংলাদেশ বর্ডার পার হয়ে, নো ম্যান্স ল্যন্ডে ধরে হাঁটছে, কিছুই আসলে ভাল লাগছে না। ভারতীর ইমিগ্রেশন পার হয়ে ব্যাগটা হাতে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। সামনে পেট্রোপোল…টাকা বদল করার দোকান। লিরা এগিয়ে যাচ্ছে, সামনে চোখ পড়তেই হাত থেকে বড় ব্যাগটা পড়ে যায়। একি ভুল দেখছেনাতো।
অমি এখানে কেমন করে আসবে? ধুর মাথাটাই মনে হয় খারাপ হয়ে গেছে লিরার। এই দিনের বেলাতে স্বপ্ন দেখছে।
অমি কাছে এলো। অমন করে দেখার কিছু নেই। আমি সত্যি সত্যি অমি।
চাইলে অনেক কিছুই করা সম্ভব। কি ভেবেছিলে আমাকে ফাঁকি দিয়ে নিজেকে আড়াল করবে। পারলে? আমার ইচ্ছা ছিল এবার যখন তুমি দেশে ফিরবে আমি কলকাতা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে যাব। তাই ভিসা করে রেখেছিলাম। সেটা যে এভাবে কাজে লেগে যাবে বিশ্বাস করতেও কষ্ট হয়।
নূরের মামা ১ঘন্টার নোটিশে ফ্লাইটে টিকিটের ব্যবস্থা করেছেন। নূরটা আমার জন্যে অনেক দৌঁড়েছে।
কি ব্যাপার এখনও অমন অবাক হয়ে কি দেখছ? চল তোমার মা-বাবাকে ফোন কর। তাদের জামাই আসছে একটু ভাল মন্দ রান্না করে রাখা উচিত। হাহাহাহাহাহা।
আমি সরি অমি তোমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্যে। তুমি এতটা ভালবাসতে পার আমি ভাবিনি। আমায় ক্ষমা করো প্লিজ-লিরা কেঁদে দেয়।
অমি কাছে আসে-লিরার হাতটা ধরে আর বলে মিলনই মৌলিক।
চতুর্থ পর্বঃ Click This Link
তৃতীয় পর্বঃ Click This Link
২য় পর্বঃ Click This Link
প্রথম পর্বঃ Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।