আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কুরবানী ও হজ্জঃ ত্যাগের ফতোয়া মতান্তরে ভাবনা



কুরবানী ঈদ আসন্ন। পশুবলির এই মহোসবের পরে পশু মাংস ভক্ষণের যে কার্ণিভাল আসছে তার মূল স্পিরিট ধরে রাখতে সক্ষম কী আমরা। যারা ঘুষের পয়সায় গরু কিনবেন,টেন্ডার সন্ত্রাসী বা রাজনৈতিক চাঁদায় দুম্বা কিনবেন তাদের এই কুরবানী বৃথা যাবে। ঘুষের পয়সার গরুর মাংস সিদ্ধ হয়না। এই ঈদে এলাকার নব্যধণিক দুর্নীতিবাজের বাসায় গিয়ে প্লেটে গোমাংস নিয়ে ধস্তাধস্তি করে পরীক্ষা করতে পারেন।

এই ধরণের দুর্নীতির পয়সায় কেনা গোমাংস আয়ত্ত করতে গিয়ে অনেক নিরাপরাধ মানুষ বাঁধানো দাঁত হারিয়েছেন। প্রকৃতি শিক্ষাদেয়,এতোগুলো বন্ধুর পরিমিত দাওয়াত থাকতে চাঁদাবাজের বাসার ঘুষের জলসাঘরে কেন। এই ঈদে দুর্নীতি মামুদের এড়িয়ে চলা জরুরী। কারণ কোলাকুলির মধ্যে দিয়ে দুর্নীতির ভাইরাস সংক্রমণের আশংকা থাকে। কোলাকুলির সময় দুর্নীতিবাজ চিহ্নিত করণের সুযোগ থাকে।

ঢাকার দুর্নীতিপ্রবণ আবাসিক এলাকার মসজিদে দুর্নীতি দমন কমিশনের কিছু ভিজে বেড়াল জাতীয় পরিদর্শক পাঠিয়ে পরীক্ষা প্রার্থনীয়। যাদের চেহারা টিভিতে দেখছেন দুর্নীতিবাজ হিসেবে তাদের নিয়ে সময় নষ্ট করে লাভ নেই। ভিজে বেড়াল জাতীয় অসেলিব্রেটি দুর্নীতিগ্রস্তদের সঙ্গে কোলাকুলি করা জরুরী, অবশ্যই ভাইরাসের ব্যাপারে সচেতন থেকে। মামু সৎ হলে তাকে কোলাকুলির সময় টেনশন তৈরী হবে না, মামুর শাসপ্রশাস ঠিক থাকবে। মামু দুর্নীতিগ্রস্ত হলে তার বুক হাপরের মতো ওঠানামা করবে।

দুর্নীতির বাতাসে মামুদের বুক হাপরের মতো ওঠানামা করে। দুর্নীতিগ্রস্তদের পাঞ্জাবীতে আতরের গন্ধ শরীরের করাপশন চিকন ঘামের সঙ্গে বিক্রিয়া করে মৃতদেহের নির্যাস তৈরী করে। একটি উতসবের দিনে এসব পরীক্ষা নিরীক্ষার কী দরকার? উতসবে আয়োজনে ঘুষ খোর চাঁদাবাজদের সাথে ডাল-ভাত,দুধভাত,মদভাত হয়ে আমরা অর্থলোভে নষ্ট মানুষদের রিকগনিশন দিই। যে কারণে আমাদের মদত পেয়ে তারা আমজনতার রক্তঘাম চুষে কুমীর হতে থাকে। তাই এই ঈদে ঘুষজীবী বন্ধুদের না বলুন।

একটা কুমীরের বাসায় ক্যানিবাল উতসবে যোগ দিয়ে লাভকি। ঘুষখোরদের বাসায় আপনি না গেলে ঋণখেলাপী বা ঘুষজীবী ঈদ পুণর্মিলণী আড্ডায় সরকার মামুর দেয়া বিনাশুল্কের হাতি নিয়ে হাজির হবে। আমরা ফ্রি লোডার জাত। হাতির বনেট থেকে শিভাস বেরুতে দেখলেই আল্লাদে আটখানা হয়ে যাবো। গরীব মানুষের লিভার সিরোসিসের কারণ ঘুষজীবী বন্ধুরা।

ফলাফল উপভোগ করে গরীব ফৃলোডাররা। অথবা ঘুষজীবীর তদীয় পত্নী গয়নার শোরুম স্টারপ্লাস ভাবী হয়ে কলিংবেল কাঁপালে আপনি পারফিউমের ঝাঁঝে হিপনোটাইজড হয়ে যাবেন। ভাবী ফিরে যাবার সময় বাসার নিরীহ ভাবীর মনে ভাইরাস দিয়ে যাবে। ঘুষজীবীসহধর্মিনীরা এই ভাইরাস সংক্রমণে গত তিন দশক বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন। ঘুষজীবীর পিতারা পাড়ার মসজিদে হজে যাবার আগে ও পরে প্রেস কনফারেন্স করে এই ভাইরাসের একটি প্রাতিষ্ঠানিক গ্রহণ যোগ্যতা তৈরী করে।

মক্কার আসওয়াদে চুমু দেবার পর ঘুষজীবীর আব্বাহুজুরের ঠোটাবয়ব চুমু আকৃতি ধারণ করে। বিমান হইতে নামিবার পর হইতে ওই স্পিরিচুয়াল মুখাবয়ব থেকে ফুঁ আসিতে থাকে। ইহা ভয়ংকর সংক্রমণ ঘটায়। পাড়ার টেন্ডারবাজ মস্তকে আলহাজ চাচাজানের ফুঁপড়িবার পর পাপ কিছু কমিয়াছে ভাবিয়া নাটকুরা ইভ টিজিং এ মনোযোগী হয়। মসজিদে পূণ্যভূমির যাত্রা পালার ন্যায় কাহিনীর বয়ান শুনিয়া সসশ্রু কম্যুনিস্ট আংকেল সৎ পুত্রকে হজ্জের টিকেটের চাপ দেয়।

তীর্থ যাত্রার অভিপ্রায়ে পিতা ভাইরাস সংক্রমণ করে পুত্রের মনে। যে দেশের মানুষ খেতে পায়না,জীবন কুশলতা নেই যে জনপদে,সেইখানে প্রতিবেশীকে অভুক্ত রেখে কোন ধর্মীয় আইনে আমরা বাঙ্গালী মুসলমান হজ্জে যাই। হজ্জের একটিও পূর্বশর্ত পূরণ না করে পৃথিবীর শীর্ষ ধনী দেশের পর্যটন খাতে ভিখিরীদেশের মানুষেরা পয়সা ঢালবে কেন? আত্মার কোন শান্তির জন্য। কতো শান্তি প্রয়োজন দুর্নীতিগ্রস্ত আত্মাসমূহের। তুরাগের পাশে টঙ্গীতো আছেই।

ইজতেমার মতো মানব সন্মেলনে মন ভরে না কেন? ভিখিরীর দেশের হজ্জপ্রবণ মানুষ হজ্জের টিকেটের পয়সাটা এতিমখানায় দিলেইতো মনে হয় আল্লাহ বেশী খুশী হবেন । নাকি ফিরে এসে হাজী পরিচয় দিয়ে সমাজে সম্মান বাড়ানোর ব্যর্থ চেষ্টা এটা। কেউ আরবে বেড়াতে গেলে যাক,সেটা ব্যক্তির ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু আলহাজ টাইটেল লাগিয়ে নানা রকম দুর্নীতির মুখোশ পরেন যারা তাদের এই হজ্জ নাটকটি যে আমরা ধরে ফেলেছি সেটা জানাতেই এই লেখার আয়োজন। এই ঈদে কিছু ব্যর্থ পিতা তার টেন্ডার সন্ত্রাসী বা ঈভটিজার পুত্রকে কুরবানী দিলে প্রকৃতির কিছু আনুকূল্য হয়তো বাংলাদেশ রাষ্ট্র পাবে।

ক্রিকেট ছাড়া আর কিছুতেই লাক ফেভার করেনা দেশটির। কারণ ওই দুর্নীতিগ্রস্ত দুই শতাংশ মানুষ। তরুণ দুর্নীতিবাজদের সংশোধনের সম্ভাবনা থাকে। পরিবারে তাকে একঘরে বা এক্সকম্যুনিকেটেড করলে সে আর বাবর হবেনা। কুরবানী দেয়া যায় এক্সকম্যুনিকেটেড করে যে কোন টেন্ডারজীবী রাজনৈতিক ক্যাডার,ঘুষখোর আমলা,ভুমিখোর সেনা কর্মকর্তাকে।

ঋণখেলাপী ব্যবসায়ী,কালো পয়সার নষ্ট মানুষদের সামাজিকভাবে শালীনভাবে বয়কট করেও সামনেবার ট্রান্সপারেন্সী ইন্টারন্যাশনালের পরীক্ষায় পাশ্ মার্ক তিন দশমিক তিন পাওয়া সম্ভব। আশা করছি ঠক বাছতে গাঁ উজাড় হবে না। আমি নিশ্চিত বাংলাদেশের আটানব্বুই শতাংশ মানুষ সৎ জীবন যাপন করে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.