আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফাস্টফুড কালচার - ২

Real knowledge is the knowledge about "The Real", or at least, that which leads to "The Real" - rest is just conjecture!

পৃথিবীতে গত প্রায় দেড় হাজার বছর ধরে, যত কালচার বা সংস্কৃতি বা ঐতিহ্য আবহমান, সেগুলোকে ঢালাও ভাবে দু’টো প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়: ইসলামী কালচার (বা ইসলামী ঐতিহ্য) এবং জাহিলী কালচার (বা জাহিলী ঐতিহ্য)। ইসলামী ঐতিহ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে পরিবার, পারিবারিক বন্ধন এবং (মুসলিম) সম্প্রদায় ভিত্তিক (community based) সামাজিকতার কর্মকান্ড। এই ইসলামী ঐতিহ্যের জন্য পশ্চিমা কাফির সভ্যতা থেকে আগত সর্ব-সাম্প্রতিক ব্যাধি “ফাস্ট ফুড কালচার” বা “ফাস্ট ফুড সংস্কৃতি” অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক ও মারাত্মক। কিন্তু গভীর দুঃখ, অনুশোচনা ও দুশ্চিন্তার বিষয় হচ্ছে এই যে, গবাদি পশুর মত গড্ডালিকা প্রবাহে এবং ভোগ-সুখের জোয়ারে গা ভাসিয়ে দেয়া দেশের সুবিধাবাদী নাগরিক জনসংখ্যার কথা বাদ দিলেও, যারা ইসলামী ঐতিহ্যের ও মুসলিম সমাজের নৈতিকতার অতন্দ্র প্রহরী হবার কথা - সেই ‘আলেম-উলামাগণ বা ইসলামপন্থীরাও ব্যাপারটা সম্বন্ধে একদমই অসচেতন এবং উদাসীন। এর কিছু সঙ্গত কারণও আছে অবশ্য।

সাধারণ যুক্তিতে মনে হতে পারে যে, আমার উপার্জন যদি হালাল হয় - আর যে মাংস দিয়ে বার্গার বা সসেজ বানানো হচ্ছে, তা যদি হালাল হয়ে থাকে (যদিও আমাদের দেশে, সেগুলো হালাল না হবারও যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে - তবু আপাতত তর্কের খাতিরে ধরে নিচ্ছি যে, সেগুলো সব হালালই) তাহলে সমস্যা কোথায়? আসুন আমরা একে একে সমস্যাগুলো ভেবে দেখি: ১)একটা পরিবার বা সংসার কি? সেখানে কি কি উপাদান প্রয়োজনীয়? এসব নিয়ে ভাবতে গিয়ে ইতিহাসের সূচনালগ্ন পর্যন্তও যদি পেছনে চলে যাওয়া যায়, তবে দেখা যাবে, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে একজন পুরুষ এবং একজন নারী মিলে যে ঘর বাঁধবে, সেটাই হবে সংসার বা পরিবারের ভিত্তি। সেখানে তাদের মাঝে তাদের সন্তানেরা এসে সেই পরিবারের পরিসর ক্রমে বৃদ্ধি পাবে। পরিবারের এই কাঠামোতে সহজাত ও স্বভাবগত ভাবেই আগে পুরুষ বাইরে যেত শিকার করতে বা খাদ্য যোগাড় করতে - নারী সন্তান পালন সহ ঘরোয়া ব্যাপারগুলোর দায়িত্ব পালন করতো। এরপর শেষ নবী(সা.)-এঁর মাধ্যমে প্রদত্ত বিধান মতে, ইসলামে নারী-পুরুষের দায়িত্বের ভাগা-ভাগি মোটামুটি একই লাইন বরাবর হয়েছে বলেই বলা যায়। উত্তরাধিকার, সম্পত্তি ও সম্পদের মালিকানার অধিকারসহ নারীকে বেশ কিছু যুগান্তকারী অধিকার ইসলাম দিয়েছে ঠিকই, কিন্তু উপার্জন বা জীবিকা সংগ্রহের দায়-দায়িত্ব থেকে বলতে গেলে তাকে সম্পূর্ণরূপেই অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

সন্তানকে সত্যিকার "মুসলিম" হিসেবে বেড়ে ওঠার ব্যাপারে তৈরী করার গুরু দায়িত্ব মায়ের উপর বর্তায় এবং ইসলামী মতে সংসারে সন্তান প্রতিপালনই হচ্ছে সত্যিকার অর্থে নারীর মুখ্য দায়িত্ব। বাইরের ঝড়-ঝাপটা ও খরতাপ থেকে পুরুষ তার পরিবার নামক একান্ত আপন দুর্গ বা রাজ্যকে সর্বতোভাবে সুরক্ষা করবে - পক্ষান্তরে নারী সেই পরিবার, সংসার বা ঘরকে পুরুষ তথা সন্তান-সন্ততির জন্য এক স্নেহশীল, শান্তিপূর্ণ ও কোমল আশ্রয়স্থল হিসেবে তিলে তিলে গড়ে তুলবে। ভালো অভিব্যক্তির অভাবে আমি “তিলে তিলে” কথাটা বল্লাম । আমি বলতে চাইছিলাম যে, বহু বছর, মাস, দিন ও ক্ষণের স্নেহ-মমতায়, যত্নে ও সাধনায় একটা সংসারের সাজানো বাগান গড়ে ওঠে। কোন পরিবারের গৃহে যত আসবাবপত্র বা ব্যবহার্য রয়েছে - দৈবাৎ কোন উপায়ে ধরুন যদি সবকিছু এক ঘন্টার ভিতর জড়ো করা যেত তাহলে কি ব্যাপারটা এক হতো? না, মোটেই না! যেমন ধরুন কোন মা হয়তো বলেন, “আমার ছোট মেয়েটার বয়স যখন ৪ বছর, তখন সে পাশের বাসা থেকে ঐ শিউলি ফুলের গাছের চারাটা এনে, ওখানে লাগানোর আব্দার জানায়।

তারপর ঐ চারাটা দিনে দিনে বড় হলো - আমার মেয়ের শোবার ঘরের জানালার ধারে একসময় সেটা একটা পরিপূর্ণ শিউলি ফুলের গাছে পরিণত হলো। একসময় যখন শরৎকালে ফুল আসতে শুরু করলো, তখন মেয়েটা ভোর রাতে সবার অজান্তে ঘুম থেকে উঠে সেই ফুলগুলোর ঝরে পড়ার দৃশ্য দেখতো। ....” এখন ধরুন ঐ একই মহিলার বাসায়, কেউ হঠাৎ একদিন বড় ও পূর্ণ একটা শিউলি ফুলের গাছ এনে লাগিয়ে দিলেন - ব্যাপারটা কি এক হলো? ঐ পরিবারের সদস্যদের হৃদয়ে কি দু’টো গাছের ব্যাপারে একই ধরনের অনুভূতি থাকবে? কখনোই না! home ও house-এর মাঝে তফাৎ এখানেই । আমাদের বুঝতে হবে যে, মা যখন তার স্বামী-সন্তানের জন্য রান্না করেন, সেই রান্নায় বা রান্না করা খাবারে তার স্নেহ, মায়া, মমতা ও ব্যক্তিগত অনুভূতি মাখানো থাকে। সকালে তিনি যখন প্রথম রান্না ঘরে ঢোকেন, তখন থেকে নিয়ে রাতে খাবারের পাট চুকে যাওয়া পর্যন্ত তার মাথায়, কে কোনটা খেতে পছন্দ করে, কার কোন খাবারটা প্রয়োজন (যেমন ধরুন দুধ/ডিম), কে কোনটা (যেমন ধরুন ঝাল) খেতে পারে না - ইত্যাদি ব্যাপার ঘুরতে থাকে।

তিনি রান্না সেরে অপেক্ষায় পথ চেয়ে থাকেন, কখন তার স্বামী বা সন্তানেরা খাবার জন্য ঘরে ফিরে আসবে - একই ভাবে গৃহিণী/মা পথ চেয়ে আছেন ভেবে স্বামী/সন্তানেরা যথাশীঘ্র সম্ভব ঘরে ফিরে আসার চেষ্টা যে করবে, তা বলাই বাহুল্য। বিশেষ ঋতুতে উত্তপ্ত কুক্কুরীর সাথে মানব জননীর তফাৎটা এখানেই - কুক্কুরী তার উত্তাপের ফসল পেট ঝেড়ে খালাস করে দিলেই মোটামুটি ভাবে মুক্ত। সন্তানের জন্য মানব জননীর স্নেহ, মমতা ও দায়িত্ব আমৃত্যু বজায় থাকবার কথা। পারিবারিক বন্ধনের স্থায়ীত্বে , মা কর্তৃক রোজকার এই খাবারের আয়োজন এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ঘরের খাবার ছেড়ে ‘ফাস্টফুড কালচার’-এ আসক্ত হওয়াটা অনেকটা - নিজ স্ত্রীকে ছেড়ে যৌন বাসনা চরিতার্থ করতে বেশ্যার কাছে যাবার মত ব্যাপার।

এটা ঠিক যে, ক্ষুধার মতই যৌন বাসনা একটা basic instinct বা মৌলিক প্রবৃত্তি - কিন্তু এর নিবৃত্তির পন্থার মাঝে এমন কিছু পার্থক্য রয়েছে, যা মানুষকে ইতর প্রাণীকুল থেকে আলাদা করে ‘আশরাফুল মখলুকাত’ বলে পরিচয় দান করে। স্বামীর কথা স্মরণ রেখে সমাধা করা দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি কাজে - যেমন ধরুন রান্না বা স্বামীর জন্য একটা সোয়েটার বুনার মত সাদামাটা কাজেও - দাম্পত্য জীবনে সুখী ও পরিতৃপ্ত একজন স্ত্রীর স্নেহ-মমতা, ভালোবাসা এবং হ্যাঁ, এমনকি যৌনবোধও সুচারুরূপে মিশে থাকতে পারে। অথচ, উভয় ক্ষেত্রেই দৈহিক সংসর্গের একটা ব্যাপার রয়েছে - এই যুক্তিতে বেশ্যার সাথে সংম্পর্কের সাথে কি দাম্পত্য সম্পর্কের কোন তুলনা হতে পারে? নিশ্চয়ই না! তেমনি পারিবারিক আয়োজনের ‘ঘরের খাবার’ এবং ‘ফাস্টফুড’, উভয় দ্বারা ক্ষুধার উপশম হতে পারে, এই যুক্তিতে দুটো ব্যাপারকে এক করে দেখা যাবে না। যে সমাজে ‘ফাস্টফুড কালচার’ প্রতিষ্ঠিত, সেখানে যে কারো - যখন খুশী, যেখানে খুশী, যা খুশী এবং যতটুকু খুশী খাবার স্বাধীনতা ও ব্যবস্থা রয়েছে - variable কেবল একটাই - অর্থ। একটা মুসলিম সমাজে ‘ফাস্টফুড কালচার’ প্রতিষ্ঠা লাভ করার ব্যাপারটা, অনেকটা আজকাল যে ভাবে বিশাল অট্টালিকাসমূহ নিঃশব্দে ভিতর থেকে ভেঙ্গে ফেলা হয়, সে ধরনের ব্যাপার হবে।

ঐ সব demolition প্রক্রিয়ায় কোন শব্দ হয়না এবং বিল্ডিং-এর ধ্বংসাবশেষ নিঃশব্দে বিল্ডিং-এর নিজ পরিসীমার মাঝেই ভিতর দিকে ধ্বসে পড়ে। মুসলিম পারিবারিক বন্ধন ও সামাজিক নিয়ম-নীতিকে নিঃশব্দে ভেঙ্গে ধূলোয় মিশিয়ে দেয়ার ব্যাপারে, ‘ফাস্টফুড কালচার’ নীরব বিপ্লবের মাধ্যমে সাধারণ ভাবে যা অসাধ্য মনে করা হয়, তা অনায়াসে সাধন করতে পারে। এজন্যেই আব্দুল্লাহ্ হাকিম কুইকের মত বিশ্ববরেণ্য ‘আলেমগণ যখন মক্কায় কুফফারের ‘ফাস্টফুড চেইন’-এর শাখা খোলার দুঃসংবাদ বর্ণনা করেন, তখন তাঁদের কন্ঠ স্বজন হারানো ব্যাথায় ও দুঃখে অশ্রুসিক্ত হয়ে ওঠে। পবিত্র কুর’আনে ১৬:৮০ আয়াতে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’লা, মানুষকে দেয়া তার নিয়ামতের ভিতর “মানুষের জন্য তার গৃহকে শান্তি ও প্রশান্তির স্থল হিসেবে নির্ধারণ করা” - এই ব্যাপারটাকে অন্যতম একটি বলে বর্ণনা করেছেন। আমাদের যাদের আজ একখানি গৃহ আছে বা একটা পরিবার আছে - আমরা ব্যাপারটাকে অবধারিত বা granted বলে ধরে নিই।

অথচ কুফফার-স্বর্গ ও সমৃদ্ধির স্বর্গ মার্কিন মুল্লুকের শিকাগো, নিউ ইয়র্ক বা ফিলাডেলফিয়ার মত শহরগুলোর ভূগর্ভস্থ রেল লাইনের দুধারে কত গৃহহীন মানুষ যে জীবন যাপন করছে, তা জানলে এবং তা নিয়ে ভেবে দেখলে আমরা বুঝতাম যে, সারাদিনের কাজের শেষে ফিরে আসবার জন্য একখানা গৃহ থাকা বা পরিবার থাকা কত বড় সৌভাগ্যের বিষয়। যে সমাজে ‘ফাস্টফুড কালচার’ প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়, সেখানে প্রথমেই যে পরিবর্তন আসে তা হচ্ছে - খাবারের সময়ে এবং খাবারের জন্য বাড়ী ফেরার তাগিদ ও প্রয়োজনীয়তা বোধ না হওয়া। উদাহরণ স্বরূপ একটা কলেজ/ইউনিভার্সিটিতে পড়া ছেলে বা মেয়ে হয়তো তার মূল কাস ও প্র্যাক্টিকেলের মাঝখানের ৩ ঘন্টা সময়ে, তড়িঘড়ি করে বাড়ী আসতো দুপুরের খাবার খেতে। এখন ‘ফাস্টফুড কালচার’-এর বদৌলতে তার কলেজ বা ডিপার্টমেন্টের সামনেই হয়তো ‘ডাবল বার্গার’, ‘ চিকেন ব্রোস্ট’, ‘ফিলে অফ ফিশ’ ইত্যাদি চমকপ্রদ নামের সব ‘ফাস্টফুড’ পাওয়া যায় - সুতরাং সে ওখানেই বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে দিতে দুপুরের খাবারটা সেরে নেয়। এভাবে একে একে, আমাদের sample পরিবারের যারা দিনের বেলায় বাইরে থাকেন, তাদের সবাই হয়তো বাইরে খেতে অভ্যস্ত হয়ে উঠবেন।

মা বেচারী প্রথম দিকে হয়তো ভাববেন যে, দিনের বেলায় রান্নার কোন প্রয়োজনীয়তা আর রইলো না - তারপর এক সময় হয়তো তার মনে হতে পারে যে, সংসারে দিনের বেলায় ঘর পাহারা দেয়া ছাড়া তার নিজেরই আর কোন প্রয়োজনীয়তা রইলো না! এভাবে - সামাজিক, অর্থনৈতিক ও শিক্ষাগত যোগ্যতার তারতম্যে - একসময় তার মনে হতে পারে তিনি একটা চাকুরী করলেই পারেন, অথবা, ‘মহিলা সমিতি’ জাতীয় কোন সংস্থায় যোগ দিয়ে, এদেশের নিগৃহীত নারী সমাজ - যাদের সারা দিন কেবল রান্না ঘরেই কেটে যায়, তাদের ‘মুক্তির পথ’ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে পারেন। অথবা, এমনও হতে পারে যে, নিঃসঙ্গতা কাটাতে তিনি প্রায়ই নিউ মার্কেটের মত জায়গাগুলোতে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়াতে পারেন এবং অন্যদের মত তিনিও দুপুরে ‘ফাস্টফুড’ দিয়ে তার দুপুরের আহার পর্বটা সেরে নিতে পারেন। এভাবেই ‘ফাস্টফুড কালচার’ প্রথমে পরিবারের ভিতকে আলগা করে ক্রমে পরিবারের ধ্বংস সাধনের বাকী কর্মকান্ডগুলোকে সহজ করে দেবে। উদাহরণস্বরূপ দেখুন ‘ফাস্টফুড কালচার’-এ অভ্যস্ত একটা পরিবারের গৃহিণী অর্থহীন ভাবে ইতিউতি বিচরণ করতে গিয়ে, সহজেই একটা পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তে পারেন - কারণ বাড়ীতে তার দায়-দায়িত্ব যেমন কম হবে, তেমনি পরিবারের সদস্যদের ভিতর ভাবের আদান প্রদান কমে গিয়ে নিজেদের মাঝের স্নেহ-মমতার বন্ধনও অনেকখানি আলগা হয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। এছাড়া তার অবসরও হবে অনেক বেশী - জীবনটা তার জন্য ‘বোরিং’ হয়ে ওঠাটাই স্বাভাবিক।

কোন পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বেলায়ও একই কথা প্রযোজ্য - বাড়ীতে ফেরার তাগিদ নেই বলে আপনার ভার্সিটি পড়ুয়া ছেলেটি হয়তো তার ‘গার্ল-ফ্রেন্ডের’ সাথে কোন ‘ফাস্টফুড জয়েন্টে’ বসে, তার সাথে নিজের ব্যভিচারসুলভ সম্পর্ক চর্চা করতে পারবে অনায়াসে। এভাবে কোন পরিবারের সদস্যরা যদি দিনের একটি খাবার (বা meal), যে যার মত বাইরে খেতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন, তবে দিনের সব খাবার যে যার মত বাইরে খাওয়াটা স্বাভাবিক মনে হওয়াটা কেবল সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে! আর তা যখন হবে, তখন ঘর ও সংসার দু’টোকেই বাহুল্য মনে হতে পারে। যারা সিঙ্গাপুরের জীবনযাত্রার ধরনকে একটু খেয়াল করে পর্যবেক্ষণ করেছেন, তারা অনুভব করতে পারবেন যে, আমাদের এই রচনার প্রস্তাবনা সে দেশের পটভূমিতে কত সত্যি! আজ সেখানকার সরকার, অশনি সংকেত অনুধাবন করে বিয়ে করার জন্য, সংসার পাতার জন্য এবং ঘর বাঁধার জন্য সরকারী ব্যবস্থাপনায় বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। যারা সিঙ্গাপুরে গিয়েছেন, তারা জেনে থাকবেন যে, সেখানকার জনসংখ্যার অধিকাংশই ঘরে রান্না না করে বাইরে খাওয়াটাই পছন্দ করে। যারা সে দেশে ঘর পাতেন, ‘ফাস্টফুড কালচার’-এর মত অভিশপ্ত আচার-আচরণ তাদের দাম্পত্য জীবনের বন্ধনকে এতই আলগা করে রাখে যে, সংসারে একে অপরকে বিশ্বাস করা বা নিজ সঙ্গীর প্রতি বিশ্বস্ত থাকার পরিবেশই গড়ে উঠা দুরূহ হয়ে দাঁড়ায়।

সেখানকার খবরের কাগজের বিজ্ঞাপনের পাতাসমূহের বিশাল অংশ জুড়ে চও বা প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটরদের বিজ্ঞাপন থাকে - যাদের প্রধান কাজ হচ্ছে অবিশ্বস্ত স্বামী/স্ত্রী একে অপরের অনুপস্থিতিতে কি করছেন সে বিষয়ে গোয়েন্দাগিরি করা। [চলবে.......ইনশা'আল্লাহ্!]

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.