আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাজনগরের ইউএনও নিজ হাতে পেটালেন শিক্ষার্থীকে



রাজনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীকে নিজ হাতে পেটালেন ইউএনও। শুধু তাই নয়। দুইশ’ শিক্ষার্থীকে কান ধরে উঠবস করালেন। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বললেন, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা মাটিতে লুটিয়ে না পড়বে ততক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের এ শাস্তি চলবে। এ সময় উপস্থিত শিক্ষকরা ছাত্রদের পক্ষে ক্ষমা চাইলেও তিনি শিক্ষকদের কথা রাখেননি।

স্থানীয় ও স্কুল সূত্রে জানা যায়, গতকাল এনজিও সংস্থা এফআইভিডিবি-এর উদ্যোগে রাজনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস’ উপলক্ষে আয়োজন করা হয় এক অনুষ্ঠানের। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোখলেছুর রহমান সরকার, জনস্বাস্থ্য বিভাগের প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন, এফআইভিডিবি কর্মকর্তা সত্য নারায়ণ নাইডু ও স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ। সকাল সোয়া ১১টায় অনুষ্ঠান শুরু হলে বিদ্যালয়ের ১৯৪ শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এনে গোল করে দাঁড় করানো হয়। এ সময় একই বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর দুই ছাত্রী মিলি রানী ও স্বর্ণালী স্কুলের বারান্দায় দাঁড়িয়ে হাত ধোয়ার কৌশল প্রদর্শন করছিলেন। মিলি ও স্বর্ণালীর প্রদর্শন দেখে সহপাঠীরা হাসাহাসি ও সামনে এগিয়ে আসার চেষ্টা করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এবং শিক্ষকসহ সবাইকে বকাঝকা করেন।

একপর্যায়ে উপস্থিত সব শিক্ষার্থীকে তিনি বলেন, সবাইকে কান ধরে উঠবস করতে হবে। এ সময় তিনি বলেন, তোমরা তো আমাকে চিনো না। শাস্তি কাকে বলে শিখিয়ে দেবো! শিক্ষার্থীরা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ মেনে উঠবস করতে থাকে। ২০-২৫ বার উঠবস করার পর প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পক্ষে ক্ষমা চেয়ে তাদের শাস্তি মওকুফের আবেদন জানান। নির্বাহী কর্মকর্তা এ আবেদনে সাড়া না দিয়ে তখন তার চোখ পড়ে যায় পিছনের দিকে বসে পড়া এক ছাত্রের দিকে।

প্রধান শিক্ষককে দিয়ে তাকে আনান এবং গালে পিঠে চড়-থাপ্পড় লাগান। পিটুনি খেয়ে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র সামাদ হোসেন দৌড়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করলে উপজেলা নির্বাহী তাকে ধরতে তার পিছু নিয়ে প্রহার করেন। নির্বাহী কর্মকর্তার এই আচরণে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সবাই হতভম্ব হয়ে যান। এ ঘটনা এলাকায় তোলপাড় চলছে। ঘটনা শোনার পর অনেক উদ্বিগ্ন অভিভাবক ছেলেমেয়েদের খবর নিতে স্কুলে আসেন।

এ সময় এ বিদ্যালয়ের এসএমসির সদস্য আনোয়ারুল হক বলেন, কসরতের দৃশ্য দেখে কোমলমতি শিশুরা একটু হাসাহাসি করবে- এটাই স্বাভাবিক। স্কুলে বাচ্চাদের শাস্তি প্রদান নিষিদ্ধ থাকলেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিশুদের উপর কিভাবে এমন নির্মম অত্যাচার করলেন- তা আমরা ভেবে পাচ্ছি না। প্রধান শিক্ষক সামছুল ইসলাম বলেন, হাত ধোয়া প্রদর্শন দেখে হাসাহাসি করছিল ছাত্রছাত্রীরা, আমরা শিক্ষকরা কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছিলাম। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান সরকার বলেন, কসরতের দৃশ্য চলাকালে শিশুরা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছিল। তখন আমি তাদের শান্ত করার জন্য ধমক দেই।

মুরব্বি হিসেবে তাদের শেখার জন্য আমি এটুকু তো করতেই পারি। সূত্র মানবজমিন

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।