আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টিওটোরিয়াল :: কিভাবে লিখবেন একটি তালগাছবাদী পোস্ট

পাখি এক্সপ্রেস
বড় করে দেখতে ::: প্রথম অংশ ::: ==> লেসন ১ প্রথমেই আপনি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিন - " আমি যাহা বলিবো, তাহা তালগাছের মত স্থির থাকিবে এবং আমি যেদিকে যাইবো, সেও সেদিকেই যাইবে"। মন্তব্য : যদি এমন সিদ্ধান্তে আসতে পারি, তবে মাশআল্লাহ! আমরা পরের লেসনে যাবো। ==> লেসন ২ এমন একটি বিষয় বের করুন, যাতে আপনার নিজ ধর্মের চৌদ্ধগুষ্ঠির কারো কোন অবদানই নেই। এমনকি আপনার চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়ার আগে এর সম্পর্কে কোন কল্পনাও করেননি। শর্ত ১ : অবশ্যই বিষয়টির সাথে আপনার ধর্মের পূর্ব সাংর্ষিক সম্পর্ক থাকতে হবে।

শর্ত ২ : তালগাছের কথা মনে রাখতে হবে। ==> লেসন ৩ "পৃথিবীর যাবতীয় সৃষ্টি রহস্য অনেক আগেই মহান কাবজাব (ধরে নিলাম আমাদের ঈশ্বরের নাম "কাবজাব") তার মহা পবিত্র গ্রন্থ আল ক্যারফা তে লিখে দিয়েছেন। " - এ বংশের একটি লাইন দিয়ে লেখা শুরু করুন। যা শুনাতে শক্তিশালী তালগাছের মতো মনে হবে। শর্ত ১ : অবশ্যই তালগাছের কথা মনে রাখতে হবে।

==> লেসন ৪ মূল বিষয় নিয়ে লেখার প্রতি তিন লাইন পর পর "সুতরাং এটি কি প্রমাণ করে না যে, মহান কাবজাব সর্বজ্ঞাতা, সর্বজ্ঞানী" টাইপের মিডনোট দিতে হবে। এক্ষেত্রে সবসময় "সুতরাং" ব্যবহার করা যাবে না। মাঝে মাঝে "অতএব" "তাই" "তদ্রুপ" এসব শব্দও ব্যবহার করতে হবে। শর্ত ১ : তালগাছের কথা মনে আছে কিনা চেক করে নিতে হবে। ==> লেসন ৫ অন্য কোন ভাষা থেকে অনুবাদ করার সময় নিজের সুবিধা অনুযায়ী অনুবাদ করে নিবেন।

যেন ইংরেজি Little শব্দটি অনুবাদ করার সময় অবশ্যই বর্তমান প্রেক্ষাপটকে প্রাধান্য দিবেন। আপনি বরং এর কোন বাংলা শব্দ ব্যবহার না করে bit অথবা byte শব্দগুলোও ব্যবহার করতে পারেন। তবেই আপনার ধর্ম গ্রন্থ সময়োপোযোগী হবে। শর্ত ১ : তালগাছের কথা মনে আছেতো? ==> লেসন ৬ লেখার মাঝে অপরিচিত কোন স্ব-ধর্ম বিশারদের নাম আনার সময় অবশ্যই "বিখ্যাত" "সুবিখ্যাত" "প্রখ্যাত" শব্দগুলোর অবতারণা করতে হবে। এবং এসব তথ্য অবশ্যই নিজেদের ওয়েব সাইট ছাড়া অন্য কোথাও যেন না থাকে।

শর্ত ১ : তালগাছের কথা ভুলে থাকলে চলবে না। ==> লেসন ৭ লেখা শেষের সময় "এতো প্রমাণের পরও কি অবিশ্বাসীরা অস্বীকার করবে মহান কাবজাবকে? এ তো এখন দিবালোকের মতো সত্য যে- সিলিকন ভ্যালিতে বিশ্বের নামকরা সব আইটি প্রতিষ্ঠানের অফিস হবে, এমন কথা তিনি (মহান কাবজাব) বহুকাল আগেই মহা গ্রন্থ ক্যারফা তে বলে দিয়েছেন। " - এরকম একটি লাইন দিয়ে শেষ করতে হবে। শর্ত ১ : নিশ্চয় তালগাছের কথা ভুলে যাননি। ::: দ্বিতীয় অংশ ::: ==> লেসন ১ এবারতো শুরু হবে মন্তব্যের পালা।

আপনাকে খুবই সতর্ক থাকতে হবে। এ কাজটি সহজ করে নেয়ার জন্য আপনাকে কিছু বিষয় ঠিক করে নিতে হবে। ০০ (১) স্বপক্ষের দুর্বল/সবল মন্তব্যগুলোর জবাবে সিমিলারি তথ্য দিয়ে বৃহত মন্তব্য করতে হবে। ০০ (২) স্বপক্ষের ছোট মন্তব্যের জবাবে "আসুন তাদের জন্য মহান কাবজাবের কাছে প্রার্থনা করি" টাইপের কথা বলবেন। ০০ (৩) বিরোধী পক্ষের শক্তিশালী মন্তব্যগুলো বিনা দ্বিধায় মুছে দিবেন।

প্রতিবাদ এলে ধর্ম আক্রমনের অভিযোগ আনবেন। একই সাথে অশালীনতার অভিযোগও আনতে পারেন। ০০ (৪) প্রতিপক্ষের অপেক্ষাকৃত যুক্তি নির্ভর মন্তব্যের জবাবের আগে কী-বোর্ডে ২৫০ গ্রাম সরিষার তেল ঢেলে নিন। দীর্ঘ লম্বা বিশাল পিছলা মন্তব্য করতে হবে। যাতে করে কথার আগাগোড়া খুঁজে পাওয়া না যায়।

এবং খুঁজে পেলেও ধরতে না পারে। অর্থাৎ আমরা সবাই বাইম মাছ হয়ে যেতে হবে। ০০ (৫) একটার পর একটা প্যাঁচ ধরতে থাকলে মন্তব্য করা থেকে রেহাই পেতে আপনারই লেখা পূর্বের কোন লেখার click this link দিয়ে দিবেন। ০০ (৬) এতোকিছুর পরও যদি বিরোধী শয়তান জালেমগুলো পিছু না ছাড়ে, তখন "পুরো পোস্ট না পড়ে মন্তব্য করা" র অভিযোগ আনতে হবে। এবং "আপনি বোধহয় পুরো পোস্ট পড়েননি।

পড়লে এ ধরনের মন্তব্য করতেন না। " অথবা "আপনি পুরো পোস্ট আবার পড়ে আসুন" ধরনের মন্তব্য করতে হবে। ০০ (৭) একপর্যায়ে মন্তব্যের জবাব দেয়া বন্ধ করে দিতে হবে। তবে তার আগে "অতএব বিষয়টি প্রমাণ হয়ে গেছে" অথবা "তর্কের আর কিছুই নেই, বিরোধী পক্ষ এখন পর্যন্ত একটি বিষয়ের বিপরীতেও শক্তিশালী কোন যুক্তি দাঁড় করাতে পারেনি" - টাইপের মন্তব্য করে ফেলতে হবে। এবং সম্ভাব্য উত্তরদাতাদেরকে ব্লক করে রাখতে হবে।

ফলাফল এবার আপনি দেখুন আপনার তালগাছটি আপনার পাশেই তিনপায়ে দাঁড়িয়ে আছে। সংযুক্তি : মৌলানা হয়রান ছাহেবের ঐতিহাসিক সাক্ষাতকার (ফানপোস্ট)
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।