আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নির্মম ভূমি দস্যুতা এবং গাজীপুরবাসীর শোকগাথা!!!


একদল নিষ্ঠুর সঙ্গবদ্ধ ভূমিদস্যু গাজীপুর, কাসিমপুর ইউনিয়নের কয়েকটি মৌজার (গোবিন্দবাড়ী, বড়ভবানীপুর, কৌচাকুরি) নিরীহ জনসাধারণের জমি ভূয়া আর এস পর্চা তৈরী করে জোরপূর্বক দখল করে নেয়। দীর্ঘ ২৫ বৎসর বেদখল হয়ে যাওয়া ভূমির মালিকরা প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ধন্না দিয়ে কোন প্রকার সহযোগীতা পায় নি। সততার মূর্তপ্রতিক গাজীপুর এলাকাবাসীর প্রাণপ্রিয় নেতা মাননীয় সাংসদ জনাব মোজাম্মেল হক বিষয়টি অবগত হওয়ার পর নিজ উদ্যোগে এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের জমি ন্যায়বিচারের মাধ্যমে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য মন্ত্রণালয় পর্যায়ে এক তদন্ত আদালত গঠন করেন। উক্ত তদন্ত আদালত সকল তথ্য উপাত্ত যাচাইপূর্বক উৎঘাটিত তথ্যের ভিত্তিতে বিষয়টির সুরাহা করার জন্য জেলা প্রশাসনকে সুনির্দিষ্ট আদেশ প্রদান করেন। (স্বারক নং-ভূ: ম:/মা-৯/নামজারী/১৯/২০০৩-১৪৯১, তারিখ ২০/১২/২০১০)।

গাজীপুর জেলার প্রাক্তন ডিসি কোন প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ না করে বিষয়টি নিয়ে গড়িমসি করেন। মাননীয় সাংসদ বিষয়টি ত্বরান্নিত করার জন্য জাতীয় সংসদের ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসাবে জেলা প্রশাসককে পত্র দেন। (স্বারক নং- জাসং/স্থাক/ভূমি/২০১১-৪৭, তারিখ-২৭/৭/২০১১)। তারপর দীর্ঘ প্রায় ১৫ মাস মন্ত্রণালয় এবং উক্ত চিঠির উপর কোন প্রকার ব্যবস্থা না নিয়ে বদলী হয়ে যাওয়ার সময় তিনি একটি অফিস আদেশের মাধ্যমে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে একটি কমিটি গঠন করে যান। (অফিস আদেশ নং-৩১.২০৬.১১৯.৪৬.০১.০০০.২০১০ তারিখ-২৩/০১/২০১২)।

বর্তমান জেলা প্রশাসক জনাব নজরুল ইসলামের নিকট ভুক্তভোগীরা ধন্না দিলে তিনি বলেন যে, কাজ করার জন্য কমিটিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কমিটির সভাপতি এবং অন্যান্য সদস্যদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে, সকলেই বলে, এই হয়ে যাচ্ছে,” “কালই এ বিষয়ের উপর মিটিং হবে,” কিংবা আগামী সপ্তাহ থেকে কাজ শুরু হবে। ” এ ধরনের অকার্যকর বক্তব্য। বর্তমান ডিসির আগমনের পর মোট ৫১ টি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মধ্যে মাত্র ৪ টি পরিবার তাদের ভিটামাটি ফিরে পেয়েছে বলে জানা যায়। বাকী সবাই এখনও ন্যায় বিচার প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত।

তাদের করুণ আর্তনাদে গাজীপুরের আকাশ, বাতাস আজ ভারাক্রান্ত। তথাপিও প্রশাসন নির্দয়ভাবেই নির্লিপ্ত। এ পর্যায়ে একটি কথা না বললেই নয়, প্রশাসক যখন ভূমিদস্যুদের দোসরে রূপান্তরিত হন তখন তিনি প্রশাসক না থেকে হয়ে যান প্র-শোষক। জনগণ নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে ন্যায় বিচার আশা করে। এ দেশের অধিকাংশ সাধারণ নাগরিক নিরীহ, ভূমি সন্ত্রাসীদের সংখ্যা খুবই কম তবে তাদের শক্তি হচ্ছে প্রশাসনে চাকুরিরত দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, যারা ঘুষের টাকার বিনিময়ে কাজ করেন, নীতি কিংবা দায়িত্ববোধের ভিত্তিতে না।

ন্যায় বিচার ঘুষখোরদের ব্যক্তি স্বার্থের পরিপন্থি বিধায় সাধারণ জনগণ আজ অসহায়। প্রজাতন্ত্রের বিবেকহীন কর্মকর্তারা করেন অন্যায় ও দুর্নীতি আর জনপ্রিয়তা হারায় ক্ষমতাসীন দল। গাজীপুর এলাকার ভূমি হারা নির্যাতিতদের প্রশ্ন, মন্ত্রণালয় থেকে আসা একটি আদেশ কেন এতদিন ধরে জেলাপর্যায়ে কার্যকর করা হচ্ছে না? এ বিষয়টি কি স্থানীয় দুদক দেখছে না? প্রজাতন্ত্রের সরকার নিরীহ জনগণের উপর এহেন নির্যাতন কি করে সহ্য করতে পারে? গণতান্ত্রিক সরকারতো সাধারণ জনগণের- ভূমি দস্যুদের কিংবা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য নয়? জনগণ ভোট দিয়ে দলকে ক্ষমতায় আনে আর এই সব ভূমিদস্যু আর দুর্নীতিবাজদের কারণে জনপ্রিয়তা হারিয়ে ক্ষমতাচ্যুত হয়। এলাকাবাসী মাননীয় সাংসদের সরাসরি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এই অমানবিক বিষয়টি আশু সমাধানের জন্য বর্তমান সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের আবেদন করে। আমাদের প্রাণ প্রিয় মাননীয় সাংসদ বিষয়টি উৎঘাটনকারী একমাত্র তিনিই পারেন এর দ্রুত এবং নিশ্চিত সমাধান করতে।

এলাকাবাসী স্থানীয় প্রশাসনের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে বলে মত প্রকাশ করে।
 

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।