আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডানা মেলে উড়ে যাওয়ার ইতিহাস

নিঃস্বার্থ মন্তব্যকে ধন্যবাদ, সাময়িক ভাবে আমি মন্তব্যে নেই
১ আমারও উড়ে বেড়ানোর ইচ্ছে ছিল। জীবনের প্রথম কবিতা লিখেছি তাই নিয়ে। কবিতাটা স্কুলের প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরষ্কার পেয়েছে। পুরষ্কার পাওয়ার জন্য সে কবিতা লিখিনি। বরং ঝামেলাহীন চিন্তাহীন একটি উড়ন্ত পাখী হতে চেয়েছি।

প্রথমে চেয়েছি বাজপাখি হতে, একসময় ছোট টুনটুনিকেও ভাল লাগে। নিয়মিত প্রার্থনাঘরে যেতাম যাতে ঈশ্বর পাখী বানানোর কথাটা ভালভাবে শুনতে পায়। কাজ হয়নি দেখে মেঝেতে না খেয়ে পড়েছিলাম। আমার জেদ সফল হয়। হঠাৎ চারদিক আলো করে দেবদূত এলেন।

বললেন, এইতো এসেছি, তুমি যদি নিশ্চিত হও মানুষের সেরা জীবনটা বদলে পাখী হতে, তাহলে তোমাকে পাখী বানানো হবে। বলো কি রঙ চাও? আর কি ধরনের পাখী হতে চাও? আমি সুযোগ পেয়ে পুরো ইচ্ছেটা বলি। আমার আজন্ম সাধ বাতাসে উড়ে যাওয়ার। পাখী, বাদুড় বা প্রজাপতি কোন কিছুতেই আপত্তি নেই। কিন্তু সঙ্গে সুদীর্ঘ আয়ু আর বিনা আয়াসে রাশি রাশি খাবার চাই ।

শেষবারের মতো মানুষের সুবিধাগুলোও ভাবি। যেমন প্রিয় টুনটুনি পাখীটা দু'দিন আগে পৃথিবী ছেড়ে চলে যায়। তাকে খেয়ে ফেলে বাজ। বাজের শরীরও বয়সে মরো মরো। ওরা যে এত কম বাঁচে জানা ছিল না।

তাছাড়া পাখীরা নাকি সখ করে ওড়ে না। খাবার খুঁজে নিতে বাধ্য হয়ে ডানা ঝাপটায়। খাবারের কষ্টটা ভাল লাগেনি। শুধু ডানার জন্য আয়ু বিসর্জন দিতেও মন চায় না। রুষ্ট হয়ে ফিরে যায় দেবদূত।

তারপর অনেকদিন মানুষ হয়ে পথ হেটেছি। মাঝে মাঝে পাহাড়ের গুহায় যেতাম। ইকারুসের আস্তানায় পড়ে ছিল তার হাতের পালক। লুকিয়ে সেগুলো নিজের হাতে পরে নিয়েছিলাম। নাড়িয়েছি।

কিন্তু উড়িনি। কেউ এভাবে ওড়ে না। জেনেছি মানুষ কখনই এত সহজে উড়বে না। ২ ইতিহাসে কত শত বছর ধরে পথের দু'ধারে ইকারুসেরা মরে পড়ে আছে। সুখে থাকতে থাকতে শেষ আশাটা মাথা চাড়া দেয়।

আবারও সাধনায় লুটিয়েছি - কেঁদেছি - যদি এই বাদামী চামড়ার মানুষটা অন্তত: একটি বার উড়ে যায়! ঈশ্বর এত কিছু পারেন। সামান্য এই ইচ্ছেটা কি তার কাছে জুটবে না? উড়ন্ত শরীর, সাজিয়ে রাখা খাবার আর একটু দীর্ঘ আয়ু? গভীর রাতে প্রার্থনায় ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। মাঝ রাতে জেগে উঠেছি। কী অবাক! নিজেকে উড়তে দেখলাম। পর্যাপ্ত আয়ু আর বাদামী শরীরের দুধারে ফিন ফিনে পাখীর ডানা।

থরে থরে রাখা পনির সাজানো টেবিলে। যেন কোন অন্ধকার সরাইখানার অভিবাসী আমি। চারদিক অন্ধকার। প্রদীপ কিনতে গেছে সাকীর সহচর। অথচ আমি স্পষ্ট চোখে দেখছি রুটি, মদ, সাজানো খাবার।

আমি শুধু উড়তে চেয়েছি। কষ্টহীন ডানা চেয়েছি। পাখী হতে বলিনি। তাই তেলাপোকা হয়ে দিব্যি আছি । অন্ধকারে তেলাপোকার চেয়ে ভাল আর কে দেখে, আর লোভী হয়ে কে বেঁচে থাকে অনায়াসে পাওয়া নর্দমার খাবারে? ------ ড্রাফট ১.০ / ব্লগার বাবুল হোসেইনের পোস্টে মন্তব্যকৃত
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।