আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নেপাল ভ্রমণ: পর্ব-১



এবারের ঈদ উল ফিতরের ছুটিটা নেপালে কাটাতে চেয়েছিলাম। এজন্য অনেক আগেই পরিকল্পনা করি যেভাবেই হোক ঈদে নেপাল যাব। কিন্ত চাইলেই তো আর সবকিছু হয়ে ওঠে না। আমার না হয় পাসপোর্ট আছে। কিন্ত আমার বউ এবং বাচ্চার পাসপোর্ট করা ছিল না।

মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট করে ফেললাম। এরপর খোঁজ নেওয়া শুরু করলাম নেপালে যাওয়ার প্যাকেজ টুর কোম্পানিগুলার। কথা বললাম ওদের কর্মকর্তাদের সঙ্গে। মাউন্টেইন, রেইনবো ট্রাভেলসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ তো হলো। কিন্ত ওরা যে রেটের কথা বলে সেটা শুনে মাথায় হাত।

এত টাকা দিয়ে যাওয়া ঠিক হবে কিনা সাতপাঁচ ভাবতে লাগলাম। উপায় একটা পাওয়া গেল। আমার শ্যালক পড়ছে বরিশাল মেডিকেলে। ওদের বন্ধুদের অনেকে নেপালি। কাঠমান্ডু ওদের বাড়ি।

ব্যস। সব সমস্যার সমাধান। শ্যালককে জানাতেই ও সব ব্যবস্থা করে দিল। কাঠমান্ডু তে হোটেল ভাড়া থেকে শুরু করে ঘোরাঘুরির জন্য গাইডও হতে আপত্তি নেই তাদের। অতএব নিশ্চিন্ত মনে এবার বেরিয়ে পড়া।

বাংলাদেশ বিমান এবং ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ এই দুটি বিমানই শুধু নেপাল যায়। ইউনাইটেড অনেক ছোট বিমান হওয়াতে অনেকে পরামর্শ দিল বিমানে যেতে। মাত্র ১৯ হাজার টাকা টিকিট (ঈদের কারণে এটাই অনেক বেশি, আসলে ভাড়া ১৭ হাজার টাকা)। টিকিট কেটে নিয়ে এলাম। অত:পর একদিন ভোরে (১২ আগস্ট) বিমানবন্দরের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়লাম আমি এবং আমার পরিবার।

সকাল ১০টায় ফ্লাইট। ইমিগ্রেশন পার হওয়ার সময় পুলিশ কর্মকর্তা বললেন ডলার এনডোর্সমেন্ট করা নেই। আমি বললাম সমস্যা নেই। ডলার আছে আমার কাছে। এরপর বলল যান, ঘুরে আসুন।

এরপর বিমানে ওঠার অপেক্ষা। ওয়েটিং রুমে দেখি আমাদের মতো অনেক বাঙালি পরিবার যাচ্ছে নেপাল ঘুরতে। আমার ছোট্টো মেয়ে মৌলির সঙ্গে অনেক বাচ্চার ভাব হয়ে গেল। ওরা ঘুরতে, খেলতে লাগল আপন মনে। ঠিক দশটা বাজার দশ মিনিট আগে বিমানে উঠলাম।

আমি এর আগে বিমানে উঠলেও আমার বউ আর বাচ্চার এটাই প্রথম বিমান ভ্রমণ। ওরা খুব এক্সাইটেড ফিল করছিল। বাবু আমাকে শিখিয়ে দিচ্ছিল কিভাবে সিট বেল্ট বাঁধতে হবে। কিভাবে অক্সিজেন মাস্ক পরতে হবে জরুরী সময়ে। আসলে বিমান বালা যেভাবে শিখিয়ে দিচ্ছিল সেভাবেই সে আমাকে দেখাচ্ছিল।

একটু পর বিমান চলা শুরু করল। সাঁই করে বিমান উঠে পড়ল আকাশে। ঢাকা শহর দেখা যাচ্ছিল একেবারে খেলনা বাড়ির মতো। প্রায় ৩৪ হাজার ফুট উঁচু দিয়ে আমরা চলে এলাম কাঠমান্ডু ত্রিভূবন বিমানবন্দরে। বিমানের ভেতর দিয়ে দেখা যাচ্ছিল পাহাড়ের খাজে খাজে কীভাবে বসতি গড়ে উঠেছে।

পাইলট আমাদের বিমানবন্দরে স্বাগত জানাল। ধন্যবাদ জানাল বাংলাদেশ বিমানে ভ্রমণের জন্য। আমরা আগেই শুনেছিলাম অন এরাইভেল ভিসা দেয় নেপালে। এজন্য ঢাকা থেকে শুধু দুই কপি ছবি এনেছিলাম সবার জন্য। ভিসার ফরম বিমান থেকেই দিয়েছিল।

সেগুলা পূরণ করে লম্বা লাইনে দাঁড়ালাম। সে কি লম্বা লাইন! আসলে পর্যটন এর দেশ হওয়াতে কেউ সেখানে ভিসা নিয়ে যায় না। প্রায় ঘন্টা দেড়েক অপেক্ষার পর আমাদের পাসপোর্টে ভিসার ছাপ মিলল। এরপর লাগেজ সংগ্রহ করে বাইরে এসে দেখি আমাদের অভ্যর্থনা জানাতে এসেল এলনা ও প্রিটি। ওরা আমার শ্যালকের সঙ্গে বরিশালে পড়াশুনা করছে।

ওদের আনা ট্যাক্সি ক্যাবে উঠে দু ধারেরর মনোরম নৈসর্গিক দৃশ্যাবলী দেখতে দেখতে চললাম হোটেলের উদ্দেশে। (বাকি পর্ব আগামীকাল পড়ুন)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।