আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধর্মই কি সভ্যতার শুরু?

একসময় দেখলাম, সবই কল্পনা, বাস্তবতায় শূন্য পৃথিবী।

মানুষ ঠিক কত বছর আগে এসেছে এই পৃথিবীতে তা বলা কঠিন। কোন বিজ্ঞানী এই ব্যপারে সঠিক কোন হিসেব দিতে পারেনি। অর্থাৎ ইতিহাসের একটা অংশ কালো অন্ধকারে ঢাকা পড়ে গেছে। ধর্মগুলোর বক্তব্য অনুযায়ী আদম এবং হাওয়া হলো আদি মানব মানবী।

কিন্তু এই কথাটাও যে সত্য নয়, বরং বানানো, তা বুঝতে পারা যায়, যখন আমরা ইতিহাসের অন্ধকারে নিমজ্জিত হই। যদি আদম ও হাওয়া আদি মানব মানবীই হবেন, তাহলে আদম হাওয়া ঠিক কোন সময়ে এসেছিলেন? আর তারপরের ইতিহাসের হদিস কই? ধর্মগ্রন্থগুলোতে খুব সু-চতুর ভাবে এই বিষয়টি উপেক্ষিত হয়েছে। আমি আদি মানব মানবী হিসেবে তাই আদম আর হাওয়াকে মানতে চাইনা। মানুষ যে সময়ই প্রথম এসে থাকুক না কেন, মানুষের আদি পিতা মাতা আদম ও হাওয়া যে নয়, তা নিশ্চিত। তার আরেকটি ছোট্ট কারণ হলো, একেক এলাকার মানুষ একেক রকম।

ইউরোপীয়দের সাথে ভারতীয়দের মিল নেই। তেমনি ভাবে, আফ্রিকানদের সাথে আমেরিকানদের কোন মিল নেই। তবু ধর্ম বলেছে, বলেই আমরা এই অসত্যটাকে মেনে আসছি, কোন যুক্তি ছাড়াই। তা হোক, তাতে কোন সমস্যা নেই। তবে, মানুষ ধর্মের আগে বর্বর ছিল, ধর্মের পরেও বর্বর ছিল।

ধর্ম মানুষকে পরিবর্তন করতে আসেনি। ধর্ম এসেছিল, মানুষের মনে মনুষত্য সৃষ্টি করতে, যা অনেকাংশেই ব্যর্থ হয়েছে। খ্রীষ্ট ধর্মের আগমনের পর যারা জেসাসকে ক্রুশবিদ্ধ করেছিল অর্থাৎ সেই রোমানরা, ক্রমেই খ্রীষ্ট ধর্ম গ্রহণ করেছে। কিন্তু তারপরে তারা কি সভ্য ছিল? এমন কোন নজির কেউ দেখাতে পারবে না যে তারা যুদ্ধ করেনি, মানুষ মারেনি, এবং যুদ্ধাহত মানুষের ধন সম্পত্তি লুট করেনি। একই চিত্র ইসলাম ধর্মের ব্যপারেও সত্য।

শোনা যায় ইতিহাস থেকে, সুলতান মাহমুদই আসলে প্রথম মুসলমান যিনি ভারতে আসতেন ধন সম্পত্তি লুঠ করতে, এবং ভারতের কোন রাজার সাধ্য ছিল না সুলতানকে ঠেকায়। কিন্তু সেই লুটতরাজ তো রয়েই গিয়েছিল। আসলে সেই সময় এইটা মানুষের কালচার ছিল। এইজন্য মানুষকে দোষ দেওয়া যায় না। তবে ধর্মের উচিৎ ছিল সেই বিষয়গুলোকে বাঁধা দেওয়া।

কিন্তু ধর্ম কখনই মানুষকে সেই পথ থেকে সরাতে পারেনি। বৃটিশ সাম্রাজ্যও ছিল অসভ্যতার সভ্য রূপ। বৃটিশরা ছিল চাতুরিতে অভিনব। তারা শিক্ষিত ডাকাত। সভ্যতার পুর্ণতা পায় আসলে রেঁনেসার সময়।

ফ্রেঞ্চ বিদ্রোহ বা ফরাসী বিপ্লবের মাধ্যমে। যেই বিপ্লব আসলে বয়সে এখনও তরুণ। ১৭৮৯ সালে ফ্রান্সের বিপ্লবে ফ্রান্সের রাজার পতন ঘটে এবং গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়। এইখান থেকেই আসলে আইনের উৎপত্তি। তবে মজার ব্যাপার হলো খ্রীষ্ট পূর্ব থেকেই "গল" অর্থাৎ ফ্রান্সের মানুষদের সবাই বর্বর হিসেবে জানত।

সেই তারাই কিনা সভ্যতার আলো জ্বালালো। ক্রমেই বৃটিশ সাম্রাজ্য এর প্রভাব পড়তে থাকে। এবং এক সময় বৃটিশরাও সভ্য হতে শুরু করে। বৃটিশদের ছাতির তলে থেকে আমরাও সভ্য হয়েছিলাম। যদিও আমাদের সভ্যতা উচ্চ মার্গীয়, সেটা বোঝার ক্ষমতা আমারও হয়নি।

ধর্মের অবদান এইটুকুই যে ধর্ম অসভ্যতার মধ্যে সভ্য হতে বলে গেছে। আর সভ্য হতে কম করে হলেও আমাদের এক হাজার বছর লেগে গেল।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.