আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাবরি মসজিদ মামলার রায়: মুসলিম ও হিন্দুদের মধ্যে জমি ভাগাভাগি

অবাক হৃদয়

ভারতের অযোধ্যায় ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ নিয়ে রায় ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এলাহাবাদ হাইকোর্টের তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত প্যানেল এ রায় ঘোষণা করেছেন। বিচারপতিরা হচ্ছেন এস ইউ খান, ডি ভি শরমা ও সুধির আগারওয়াল। রায়ে বাবরি মসজিদের জমি সমান তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে। মুসলিম ওয়াকফ বোর্ড, নিরমহি আখড়া এবং রামনালা পার্টিকে সমান তিনভাগে ভাগ করে দেয়া হয়েছে ২ দশমিক ৭ একর জমি।

বাবরি মসজিদের রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ভারতজুড়ে নেয়া হয়ে কঠোর নিরাপত্তা। অযোধ্যার ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত সৈন্য। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী, সাধারণ সম্পাদক রাহুল গান্ধী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি, রেলমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এ রায় মেনে নেওয়ার আহবান জানিয়েছেন। তারা দেশবাসীকে সব ধরনের সহিংসতা এড়িয়ে আদালত ও রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা এবং শান্তি বজায় রাখার আহবান জানান। এদিকে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক নেতারা বলছেন, তারা আদালতের রায় মেনে নেবেন।

রায় ঘোষণার মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির বৈঠক বসার কথা রয়েছে। বৈঠকে বসবেন ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপির নেতারাও। মঙ্গলবার অবসরপ্রাপ্ত আমলা রমেশ চন্দ্র ত্রিপাঠির রায় পেছানোর আবেদন নাকচ করে দেন প্রধানবিচারপতি এইচএস কাপাডিয়া। তিনি অনলাইনে এ আদেশ দেন। ফলে বাবরি মসজিদের ভূমি বিরোধ নিয়ে মামলার রায় ঘোষণা করতে যাচ্ছেন সুপ্রিম কোর্টের লখনৌ বেঞ্চ।

প্রধান বিচারপতি কাপাডিয়া বলেন, দীর্ঘ যুক্তিতর্ক বিবেচনা করে ত্রিপাঠির আবেদন খারিজ করে আমরা রায় ঘোষণা করতে যাচ্ছি। ১৬ শতকে নির্মিত বাবরি মসজিদ অযোদ্ধায় ২ দশমিক ৭ একর জমিতে অবস্থিত। হিন্দুরা এ জমি অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার বলে দাবি করে আসছে। এ জমি তাদের দেবতা রামের জন্মভূমি বলেও হিন্দুরা দাবি করে। অন্যদিকে মুসলমানদের দাবি, এ জমি সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডের।

এ বিরোধকে কেন্দ্র করে ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর উগ্র হিন্দুরা এ মসজিদটি ভেঙ্গে ফেলে। এরপর ভারতজুড়ে হিন্দু-মুসলিম জাতিগত দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। এতে প্রায় ২ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। এ রায়কে ঘিরে ভারতজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার নিরাপত্তা কর্মী । ১৯টি জায়গাকে স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এছাড়া মহারাষ্ট্র, কেরালা, কর্ণাটকা ও মধ্যপ্রদেশেকে সহিংসতাপ্রবণ বলা হয়েছে। ভারতীয় বিমান বাহিনীর উড়োজাহাজ ৮টি জায়গায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেকোন মুহূর্তে যেকোন জায়গায় সেনা পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি আছে। এসএমএস নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দিল্লি ও হায়দারাবাদের সংরক্ষিত জায়গায় গাড়ি পার্কিং নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

উত্তর প্রদেশ সরকার রায়ের জন্য লক্ষ্ণৌর আদালত চত্বরে বিপুলসংখ্যক সেনা সদস্য মোতায়েন করেছে। আদালতের ভেতর থাকছে ১ জন এসপি, ৬ জন এএসপি, ২২ জন ডিএসপি, ১৪৪ জন এসআই, ১০৪ জন এএসআই, ৮০৭ জন কনস্টেবল ও পিএসি-র ২০০ জওয়ান। রেলমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, গুজবে কান দেবেন না। শান্তি বজায় রাখুন। সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, মামলার রায় যাই হোক না কেন, গুজবে কান দেবেন না।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বুধবার দুপুরে রাজ্যের নিরাপত্তা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক শেষে বলেন, আমি রাজ্যবাসীর কাছে শান্তি ও সম্প্রতি বজায় রাখার আবেদন করছি। কলকাতার পুলিশ কমিশনার গৌতমমোহন চক্রবর্তী বলেন, কলকাতার ৪৮টি থানার ১৮টিকে সংবেদনশীল বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এখানে পুলিশের বিশেষ বাহিনী ও র‌্যাপ মোতায়েন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, রাজ্য জুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় বিশেষ নজরদারি থাকবে।

ঢাকা, ৩০ সেপ্টেম্বর (শীর্ষ নিউজ ডেস্ক) যদি কারো কাছে আরো আপডেট থাকে, শেয়ার করুন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.