আসেন দুর্নীতি করি। আর এই দুনিয়াটাকেই খুচাই!
পয়লা পার্ট
দোকলা পার্ট
সবসময়েই ভাবতাম আসমানের দিকে চাইয়া কি বিশাল আকাশ, কত উদার! কোনো কিছুরই অভাব নাই তার। দিনের বেলায় মেঘের নীচে সুন্দর সুন্দর পাখির ড্যান্স রাইতের বেলায় তারাগো চোখ টিপি। মজাই মজা। খালি আমি এক মহান ব্যাকুব যে খালি আসমানের খুশিতেই খুশি, নিজের কুনো খুশি নাই।
নতুন জায়গায় আইসা একখান জিনিস শিখছি কখনো বিজি টাইমে ডড়াইতে নাই, যখনই ডড়াইবা তখনই মালিক কইবো তুমি আকাইম্মা। মালিকের পেমেন্টে কুনো ঝামেলা নাই খালি আশা ছিলো মালিকের বৌ সুন্দরী নাইলে তার কন্য সুন্দরী। মাগার দুইখানেই গুড়েবালি। মালিকের বৌ সুন্দরী ঠিক আছে কিন্তু সেই টাইপ না সো এইটা ভাবতেও গিন গিন করে আর তার কন্যার বয়স মোটে ৬ বছর। অলওয়েস পক পক।
অভাগাগো টপ লিস্টে আমার নাম দেয়াটা অখন পুরাই যুগের চাহিদা হইয়া গেছে।
যেদিন জয়েন করলাম সেদিন থিকাই শুনতাছিলাম এক আফগানী মাইয়া ১ মাসের ছুটি লইয়া ২ মাস ধইরা লাপাত্তা। আফগানিস্তান গেছে, যদিও এই দেশের পাসপোর্ট মাগার তালেবানের কাছে পাসপোর্ট ব্যাপার না, ওগো দরকার মাল, হাতে পাইলে বানায় দেয় খাল। বড়ই চিন্তায় আছিলো মালিকে। আমারে পরথমে কইছিলো খালি তন্দুরীর কাম করবা মাগার এইখানে আইসা দেখি কুকের কাজও করতে হইতাছে।
মালিকও হেল্প করে, তার বৌ ও হেল্প করে মাগার আমার স্পিডের সাথে তাগোটা সিনক্রোনাইজ হয় না আর তাগো কোয়ালিটির সাথে আমার কোয়ালিটি। যাই হোউক, একদিন বইসা বইসা রেস্টুরেন্টের শেলারে নেট কপচাইতাছিলাম হঠাৎ পিছে আইসা কইলো কে জানি,"ভাইজি কোথায়?"
আমি তো মাইয়া মানুষের গলা শুইনা ঢোক গিললাম, কারন মনিটরে ইউটিউবে স্কুটারের মিউজিক ভিডু দেখতাছিলাম আর হাত দিয়া কান চুলকাইতাছিলাম। পিছে তাকাইয়া দেখলাম এক স্বর্নকেশী, লম্বায় আমার কাছাকাছি, ফিগার মাশাল্লাহ.....পুরাই.......এডাল্ট ফিল্মের...থাক আর গেলাম না। ঢোক গিললাম।
কাম শুরু হইলো তার পরের দিন থিকাই, নাম মরিয়ম।
পয়লা জয়েন কইরাই ভাবীর কাছে কইলো আমারে নিয়া,"পোলা তো দেখি পুরা দৌড়ের উপর, এত দৌড়ায় কেমনে? এত কাম করে কেমনে?"
ভাবীজান যখন আমারে কইলো আমার ছাতীখান আর দুই হাত ফুইলা গেলো। ভাবলাম বাতচিত শুরু করি:
: কি নাম?
: মরিয়ম।
: খ্রিষ্টান?
: না মুসলমান।
: এইডা কেমুন নাম? নাম খান কি দুই নম্বর?
: মানে? তুমার তো রনি, তুমি মুসলমান কেমনে?
: আমার নাম আলি আহাম্মদ...আহাম্মদ মানে জানো?
: জানি আমারে বলতে হইবো না!
: রোজা রাখছো? সারা দিন তো খালি খাই খাই। আল্লাহ গুনাহ দেয় না? শিয়া না সুন্নী?
: সুন্নী অবশ্যই, আর রোজা রাখি না তোমার কি?
: আস্তাগফিরুল্লাহ মিন জালেক।
কখনো কোরান শরীফ পড়া হইছে?
: এই তোতা পাখি, যাও কাম করো। আমার লগে লাইন মাইরো না।
এইটা কইয়া ঝামটা মাইরা দেখি চইলা গেলো। আমি ভাবলাম একটু ওয়েট করি, দেখি কুনো ইশারা পাই কিনা। মাইয়া সোজা ডাইনের রুমে ঢুকলো।
মনে হইলো কুনো ইশারা নাই, মানে নো চান্স। হুট কইরা দেখলাম ওয়ালের ফাকা দিয়া ওর মাথার উপরের অংশ চোখ পর্যন্ত মানে আমারে দেখলো। আমি তখন বইলা বসলাম,"আমার চেহারা এতো খারাপ না, আর আমি সুন্নী আসছি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থিকা, অখনো কুনো গার্ল ফ্রেন্ড নাই!"
ও রুমের ভিতর যাইতে যাইতে বলল,"যাও ডুবকে মরো!"
ও এইখানকার ল্যাঙ্গুয়েজ আর ইংলিশ আর হিন্দি ভালাই জানে। ওর মাতৃভাষা পুশতু যার কিছু কিছু বুঝি মনে হয়। তয় ওর সাথে বাতচিত হওয়া শুরু হইলো হিন্দিভাষায়।
খোদার কসম দুই লাইন হিন্দি কইলে অখন চোপা ব্যাথা করে।
তার পরের দিন আমি শেলারে আবারও নেটে বইসা জিমি ইট দ্যা ওয়ার্ল্ডের মিউজিক ভিডু জোরে ছাইড়া দেখতাছিলাম, হঠাৎ পিছে তাকাইয়া দেখি মরিয়ম আর সাথে দুইটা মাইয়া। তার মধ্যে একখান মাইয়া পুরাই অসাধারন, যেমুন পেন্সিল ফিগার তেমনি সুন্দর। আর চিপায় একখান ভুটকি গাট্টু। মরিয়ম আমারে দেখাইয়া কইলো,"এইটা হইলো বোলতা হুয়া পোপাট (বাচাল তোতা পাখি), সারা দিন পক পক করে, নাম রনি।
এখন রনি সাহেব তোমাদের জন্য খাসির গোস্ত পাকাইয়া দেবে। কি রনি, কোনো সমস্যা?"
: না কুনো সমস্যাই নাই, যদি এই সুন্দরীর নাম জানতে পারতাম তাইলে দিনটাই রোষনাই হইয়া যাইতো!
ভাবছিলাম এই মাইয়া এইখানকার, হিন্দিতো দূর কি বাত ইংলিশ জানবো কি না সন্দেহ। কিন্তু হুট কইরা মাইয়া একখান হাসি দিয়া বইলা বসলো,"মেরা নাম হ্যা মারি। আব সে মিল কার খুশ হুয়ি। আব ক্যায়সা লাগ রাহা হে (আমার নাম মারি।
আপনার সাথে দেখা হয়ে খুশি হলাম। এখন এখন কেমন লাগছে!)"
আমি আরেকবার টাস্কি খাইলাম। এইভাবে নানা ছল ছুতোয় নানান শয়তানিতে মরিয়মের সাথে আমার একখান ভাব হইতে লাগলো। ম্যারি আর আসে নাই কিন্তু ম্যারির কথা সারা দিন কইতাম।
: ম্যারি তুমার কেমুন বোইন?
: বোইন মানে বোইন।
: তুমার নাম মরিয়ম আর ওর নাম ম্যারি। দুইটার নামের ওরিজিন দেখি এক। এই চীটারি কতদিন ধইরা চালু রাখছো। মাইষেরে নিজের নাম নিয়া আর কত মিছা কইবা?
: মিছা কথা মানে? মাইন্ড ইউর ল্যাঙ্গুয়েজ। আমার নাম মরিয়ম এইটা সবাই জানে, পারলে তুমি ওকে ফোন করে দেখতে পারো!
: তলে তলে এতদূর, সব কিছু দেখি সেট করা।
বলি সবাইরে কি বুদ্ধু পাইছো?
: তুমি কেমনে শিওর হও সবকিছুতে?
: আমি লজিক খাটাই।
: তুমি কিভাবে সব জানো?
: কারন আমি জানি।
: তুমি আর কি জানো বলো তো?
: দেখতে থাকো!
সমস্যা শুরু হইয়া গেলো। সমস্যা হইলো আমি ওর পেটের কথা সব বাইর করা শুরু করলাম, কিছু কথা অনুমান কইরা খোচা দিতেই দেখি সব বলা শুরু করলো, ওর লাস্ট লাইন অফ ডিফেন্স ভাংতে টাইম লাগলো না।
: তোমার বাবার সাথে আবারও ঝগড়া হলো?
: আর বলো না, কত কিছু করলাম, প্রানপন চেস্টা করছি কিন্তু তবুও বিশ্বাস করছে না।
: কিন্তু তাই বইলা তুমি নিজেরে শেষ করতে পারো না। তুমারও তো কোনো স্বপ্ন আছে!
: না আমার কোনো স্বপ্ন নাই। যখন খুব খারাপ লাগে তখন আমি ঐ আকাশের তারার সাথে কথা বলি, ঐ তারা ছাড়া আমার কেউ নাই।
: কালকে ঈদ, নামাজ পড়বা না?
: না। মেয়েদের নামাজ পড়বার এখানে কোনো জায়গা নাই।
: কালকে বাসায় কথা বলবা না?
: রনি তুমি জানো আমার পুরা বছরে এই ঈদের দিনটাই সবচেয়ে খারাপ যায়। এই দিনটা আমি বড্ড নিঃসঙ্গ!
ও কতটা নিঃসঙ্গ সেটা ঈদের দিন বুঝতে পারলাম। রাতে যখন ও বাসায় কথা বললো তখন ও টলছিলো। পুরা ভেঙ্গে পড়েছিলো। ওর পরিবারে একটা কুটিল সমস্যা আছে।
ওর বাবা আপহগানিস্তানে থাকতে ওর মাকে বিয়ে করে। ওর মা ছিলো ইরানী। বিয়ের পর সবার আগে ও হয় ৫ বছর পর ওর ভাই। তারপর যুদ্ধের কারনে ওরা ইন্ডিয়া চলে আসে অন্যান্য আফগানীদের মতো। ওখানে এসে ওর বাবা প্রচুর খাটাখাটনি করে, ওর বাবার অত্যাচারের কারনে ওর মা একদিন সব ছেড়ে চলে যায় সাথে নিয়ে যায় ওর ছোট্ট বোনটিকে।
তারপর আর যোগাযোগ নেই।
বছর না ঘুরতেই ওর বাবা আবারও বিয়ে করে। মরিয়ম তখন রাগে দুঃখে আফগান বর্ডারে চলে যায়, ঢুকতে পেরেছিলো কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে পড়ে যায় তালেবানদের হাতে। তারপর গ্যাংরেপ তারপর জেনেভার সাহায্যকর্মী তারপর জেনেভা তারপর মিউনিখ তারপর ইউরোপের পাসপোর্ট হোল্ডার এখন এখানে। জানতে পারে ওর বাবা আর নতুন মার ঘরে আরেক ভাই হয়।
ও ওর বাবার সাথে যোগাযোগ করে ওর নিজের ভাইটিকে আনবার জন্য আর ওর মার খোজের জন্য, কিন্তু কেউ দিতে পারে না। ওরে ভাইটিকে আনতে গিয়ে কিছু ভুল ইনফোর জন্য ধরা খেয়ে যায়। এর জন্য এখনও ওর বাবা ওকে দুষছে। বলছে বাবাকে মরিয়মের হাসব্যান্ড দেখিয়ে নিয়ে আসতে।
এই অফারটা দেয় ঈদের দিনই।
বলছে এরকম ঘৃন্য অফার কেউ কোনোদিন দেয় নি। আমি স্তব্ধ হয়ে যাই। কাজের কারনে সময় দিতে পারিনি যখন ও কাদিছিলো, ওদিকে রেস্টুরেন্টে প্রচুর ভীড়। আমি আর ভাবী মিলেও সামলাতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছিলাম। যখন কাজ শেষ হলো:
: আজ তোমার কি হয়েছিলো?
: রনি, যখন আমার সবচেয়ে বেশি তোমাকে দরকার ছিলো, তখন তুমি ছিলে না আমার পাশে না।
বলতে বলতে ওর চোখ দিয়ে পানি পড়ছিলো, ওর সাদা গাল বেয়েনদীর মতো ঝড় জড় জরে পড়ছিলো। মনটা চাইছিলো দুহাত দি্যে ওর চোখের মুক্ত ঝরা পানিগুলো ধরে ফেলি। এতসুন্দর ছবি আমি দেখেছিলাম একবার আবারও দেখলাম। আমার নিজের মাথাটাই নষ্ট হয়ে গেলো। পুরোনো ব্যাথাটা আবারও খোচাতে লাগলো।
সেদিন রাত ভর মাথাটা নস্ট হয়ে গেলো, পাগলের মতো শহরের কোনো একটা গলি খুজছিলাম কান্না লুকোবার জন্য, কিন্তু হায় এই মরা শহর ঈদের দিনেই কার্নিভালের রূপ নেয়। আকাশে তাকালাম, আকাশ ভরা তারা।
চোখ দুটো বন্ধ করে বললাম,"হায় খোদা, একটু কাদতে দাও, একটু বিষন্ন করে দাও কিছুটা ক্ষন, আমাকে ক্ষমা করো। তুমি কি চাও আমাকে একটু জানাও!"
চোখ খুলে তাকাই, দেখি আবারও সেই কার্নিভাল, আবারও সেই সুখের নহর। খোদা আমাকে ভুলতে বলছেন, দেখতে বলছেন জীবনের নতুন রূপ!
জানি না, জানি না!
গড ড্যাম ইট!
(উৎসর্গ ব্লগার এরশাদ বাদশা, অনেক দিন ধরেই মন খারাপ, তার মন খারাপের কারনটা জানা দরকার!)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।