আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আপনার ধর্ম-বিশ্বাসকে শুদ্ধ করুন

O Allah! Please lead me from unreal to The Reality!!

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম আস সালামু আলাইকুম! [আগের লেখার ধারাবাহিকতায় - কেবল মাত্র বিশ্বাসী মুসলিম ভাইবোনদের জন্য লিখিত] আমরা আগেই বলেছি যে, আমরা সাধারণ মুসিলমরা প্রায় কেউই, আমাদের ধর্ম বিশ্বাসগুলো কি কি হওয়া উচিত, সেটা যখন শেখার কথা তখন [অর্থাৎ জীবনের প্রারম্ভে] methodologically শিখি না। আর তাই একটা গোটা জীবন ভুল বিশ্বাস পোষণ করেই হয়তো, আমরা কবরে চলে যাই। সম্ভাবনার দিক থেকে এই পরিণতি নিঃসন্দেহে ভয়ঙ্কর। সেজন্য আমরা আমাদের ধর্মবিশ্বাস বা ইসলামী আক্বীদাহ্ সংক্রান্ত সবচেয়ে সমাদৃত কাজগুলোর একটি, 'আল আক্বীদাহ্ আল তাহাভীয়াহ্" থেকে বিশ্বাসগুলোকে পয়েন্ট আকারে তুলে দিতে শুরু করেছিলাম। এরই ভিতর কেউ কেউ আমাকে বলেছেন যে, ব্লগে সময় কাটাতে আসা হালকা মেজাজের ভাই-বোনদের হয়তো এসবের দিকে তাকিয়ে দেখার সময়ই হবে না ।

আমি, "কে জানে?" বলে সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার চেষ্টা করেছি। এত শত শত সদস্যের মাঝে, আমার প্রচেষ্টায়, যদি একজনেরও বিশ্বাস বা আক্বীদাহ্ শুদ্ধ হয়, তবে তাও কি কম প্রাপ্তি? আর যদি কারো তাকিয়ে দেখার সময় নাও হয়, তিনিও অন্তত জানবেন যে, কখনো যদি তার "সময় হয়", তবে তথ্যগুলো তিনি কোথায় পাবেন! আসুন তা তাহলে আমরা 'আল আক্বীদাহ্ আল তাহাভীয়াহ্"-র ৪১ নম্বর থেকে ৫০ নম্বর পয়েন্টগুলো কি, তা একটু পড়ে দেখি: ৪১। শাফায়াত (সুপারিশ, যা মুসলিমদের জন্য সংরক্ষিত), সত্য, যেভাবে সহীহ হাদীসে বলা আছে। ৪২। আল্লাহর সাথে আদম ও তাঁর সন্তানদের কৃত ওয়াদা সত্য।

৪৩। আল্লাহ জানতেন, সময়ের অস্তিত্বের পূর্ব থেকেই, জান্নাতে প্রবেশকারীর সঠিক সংখ্যা এবং জাহান্নামে প্রবেশকারীর সঠিক সংখ্যা। এই সংখ্যা বাড়বেও না, কমবেও না। ৪৪। একই কথা লোকের সমস্ত কর্মের জন্য প্রযোজ্য, যা ঠিক সেভাবে ঘটে যেভাবে ঘটবে বলে আল্লাহ জানেন, প্রত্যেকের জন্যই সে কাজ সহজ হয়ে যায় যেজন্য সে তৈরী হয়েছে, এবং যে কাজ তার ভাগ্য নির্ধারণ করবে, সেই কাজেই তার জীবন শেষ হবে।

যারা ভাগ্যবান তারা আল্লাহর হুকুমেই ভাগ্যবান, এবং যারা দুর্ভাগা তারা আল্লাহর হুকুমেই দুর্ভাগা। ৪৫। আল্লাহর হুকুমের সঠিক প্রকৃতি তাঁর সৃষ্টির এক গোপন রহস্য। আরশের নিকটবর্তী কোন ফেরেশতা বা বাণীবাহক কোন নবীকে এর জ্ঞান দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে বেশী চিন্তাভাবনা ও গবেষণা শুধু ধ্বংস ও ক্ষতির পথ নির্দেশ করে, এবং বিদ্রোহী মনোভাবের মাঝে পরিণতি লাভ করে।

সেজন্য এ ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করার সময় বা সন্দেহ তোমার মনকে দোদুল্যমান করার ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক থাকবে। কারণ আল্লাহ মানুষের কাছ থেকেই এই হুকুমের জ্ঞান সরিয়ে রেখেছেন এবং এ সম্পর্কে অনুসন্ধান করা থেকে নিষেধ করেছেন, তাঁর কিতাবে এ কথা বলে যে, ‘তিনি জিজ্ঞাসিত হন না তিনি কি করেন সে ব্যাপারে কিন্তু তারা জিজ্ঞাসিত হয়। ’ (সূরা আল-আম্বিয়া ২১:২৩) তাই যে জিজ্ঞাসা করে, ‘কেন আল্লাহ এটা করেছেন?’ সে কিতাবের সিদ্ধান্তের বিপরীতে কাজ করে, এবং যে কেউ কিতাবের সিদ্ধান্তের বিপরীত কাজ করে সে অবিশ্বাসী। ৪৬। এটাই তার সারাংশ যা আলোকপ্রাপ্ত হৃদয়ের অধিকারী আল্লাহর বন্ধুদের জানা প্রয়োজন এবং যা যারা জ্ঞানে দৃঢ় তাদের মান নির্ধারণ করে।

কারণ দুই ধরনের জ্ঞান আছে: যা সৃষ্ট সত্তার পক্ষে উপলব্ধির যোগ্য এবং যা উপলব্ধির যোগ্য নয়। যে জ্ঞান অধিগত করা যায় তাকে প্রত্যাখ্যান করা কুফরী এবং যা অধিগত করা যায় না তার দাবী করাও কুফরী, ঈমান তখনই দৃঢ় হবে যখন উপলব্ধি যোগ্য জ্ঞানকে স্বীকার করা হবে এবং যা উপলব্ধির যোগ্য নয় তা অর্জনের চেষ্টা করা হবে না। ৪৭। আমরা আল-লাওহ (ফলক) এবং কলমে বিশ্বাস করে এবং তাতে যা কিছু লিখিত আছে তাতে বিশ্বাস করি। ফলকে যা ঘটার কথা লিপিবদ্ধ আছে, সমস্ত সৃষ্টি যদি তার বিরুদ্ধে একত্র হয়ও, তারা তা না ঘটাতে সক্ষম হবে না।

শেষ বিচারের দিন পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে, তা লেখার পর কলম শুকিয়ে গেছে। যা কারও পাবার নয়, সে তা পাবে না এবং যা কারো পাওনা রয়েছে, সে তা পাবেই। ৪৮। বান্দার জন্য এটা জানা জরুরী যে তাঁর সৃষ্টিতে যা কিছু ঘটবে তার সমস্তই আল্লাহ জানেন এবং তিনি তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ও সুনিশ্চিতভাবে তার হুকুম দিয়ে রেখেছেন। আকাশসমূহে এবং জমিনে তিনি যা কিছু সৃষ্টি করেছেন, কিছুই এর বিরোধিতা করতে পারে না, বা এতে কিছু যোগ করতে পারে না, বা একে মুছে দিতে পারে না, বা পরিবর্তন করতে পারে না, বা এ থেকে কমাতে পারে না, বা কোনভাবেই এতে কিছু বাড়াতে পারে না।

এটা বিশ্বাসের একটি মৌলিক দিক এবং সমস্ত জ্ঞান ও আল্লাহর একত্ব ও প্রভুত্বের স্বীকৃতির জন্য একটি প্রয়োজনীয় উপাদান। আল্লাহ যেভাবে তাঁর কিতাবে বলেছেন: ‘তিনি সবকিছুই সৃষ্টি করেছেন এবং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নির্ধারণ করেছেন (আল ফুরকান ২৫:২)। এবং তিনি আরো বলেন: 'আল্লাহর আদেশ সবসময়ই নির্ধারিত। ’ (আল আহযাব ৩৩:৩৮)। সুতরাং যে আল্লাহর নির্ধারিত ভাগ্য/হুকুম নিয়ে তর্ক করবে, তার জন্য ধ্বংস রয়েছে এবং তার জন্য, যে অসুস্থ অন্তর নিয়ে এই ব্যাপারে গবেষণায় লিপ্ত হয়।

অদৃশ্যকে জানার ভ্রান্ত চেষ্টায় লিপ্ত হয়ে সে এমন এক গোপন রহস্যকে জানতে চেষ্টা করছে যা কখনোই উন্মোচিত হবে না, এবং তার পরিণতি হচ্ছে অসৎকর্ম পরায়ণের, সে মিথ্যা ছাড়া কিছুই বলে না। ৪৯। আরশ (সিংহাসন) এবং কুরসী (চেয়ার) সত্য। ৫০। তিনি আরশ ও তার নীচে যা আছে, তার সবকিছু থেকে স্বাধীন।

আল্লাহ্ হাফিজ। বিঃদ্রঃ "কুরসীর" আক্ষরিক অনুবাদ "চেয়ার" হলেও, ব্যাখ্যাকারী স্কলারদের মতে, আল্লাহর "আরশ" ও "কুরসী"র কথা যখন বলা হয়, তখন আসলে "কুরসী" দ্বারা পা রাখার স্থান বা foot-stool বুঝানো হয়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.