আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাকাচৌর রাষ্ট্রদ্রোহী কথাবার্তাঃ তার খুঁটির জোর কোথায়?

নীরব বয়ান

“……সরকার এমন কোনো পথে চলবে না, যাতে চট্টগ্রামের মানুষ নিজেদের সত্তা থেকে বিচ্ছিন্ন করার প্রয়াস পায় ……., দেশে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার অনুকূল পরিবেশ নেই। তাই সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা যেন নষ্ট না হয়, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব যেন অক্ষুণ্ন থাকে, সরকারকে সেই পদক্ষেপ নিতে হবে”- সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরী আজকে অনেকদিন পর ব্লগে এসে ঢুকলাম। সময় পাচ্ছিনা নিয়মিতভাবে লেখার জন্যে। আজ ব্লগ ও পত্রিকা একসাথে খুলে পড়ছিলাম। হঠাৎ চোখে পড়ল প্রথম আলো’তে প্রকাশিত সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর উপরোক্ত রাষ্ট্রদ্রোহী মন্তব্য।

পত্রিকার খবরে প্রকাশ, সাকাচৌ’র বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দল রাউজানের কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের মালিক নতুন চন্দ্র সিংহের হত্যাকান্ড সম্পর্কে তদন্ত ও তথ্য সংগ্রহ করতে গেছেন । তারা বিভিন্ন জনের কাছ থেকে সাক্ষ্য গ্রহণ করছেন। হত্যাকান্ডের সাথে সাকাচৌ’র সংশ্লিষ্টতা আছে বলে লোকজন জানিয়েছে। তবে এ বিষয়টা নতুন নয়। সাকাচৌ নিজেই বলেন তিনি একজন রাজাকার, রাজাকার হিসেবে তার বেশ সুনাম রয়েছে।

সাকাচৌ বাংলাদেশের রাজনীতিতে বড় একটা ভাঁড় এটা নতুন করে বলার কিছু নেই। কিন্তু তাই বলে কী যখন যা ইচ্ছা ভাঁড়ামি করবেন সেটা কী মেনে নেওয়া যায়? তদন্ত বিষয়ে আজকে সাংবাদিকদের যা বলেছেন তা রীতিমত ভয়ংকর, এবং পুরোপুরি রাষ্ট্রদ্রোহীতার ব্যাপার। সরকারের বিরুদ্ধে হুংকার দিয়ে বলেছেন সরকারের এমন কাজ করা উচিত নয় যাতে চট্ট্রগ্রামের মানুষ নিজেদের সত্তা থেকে বিচ্ছিন্ন করার প্রয়াস না পায়। অর্থাৎ, আকারে ইঙ্গিতে বলতে চাচ্ছেন, প্রয়োজনে তিনি বিচ্ছিন্নতার পথ বেছে নেবেন। প্রকাশ্যে এত বড় কথা বলার সাহস পান কিভাবে? দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।

দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে যারা গলা ফাটান, তারা কোথায়? তারা কী করছেন? সেই স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব ফেরিওয়ালারা অথবা সরকার সাকাচৌর বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নিতে পারবেন কী? প্রসঙ্গক্রমে বলতে হয়, সন্তু লারমা পাহাড়ের জুম্ম জনগণের জন্যে অধিকার আদায়ের জন্যে যখন অস্ত্র ধরেছিলেন তখন অনেকে তাকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’, ‘সন্ত্রাসী’ বিচ্ছিন্নতাবাদী ইত্যাদি বলে গালিগালাজ করেছেন। কিন্তু সন্তু লারমা অস্ত্র হাতে নিলেও এযাবৎ কখনো রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কোন প্রশ্ন তুলেন নি। তিনি বরাবরই রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার প্রতি অবিচল আস্থা রেখে জুম্ম জনগণ ও দেশের অপরাপর অঞ্চলের আদিবাসীদের দাবী সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার দাবী জানিয়ে আসছিলেন। এখনও সেই দাবী জানিয়ে যাচ্ছেন। এখন প্রশ্ন জাগে, সন্তু লারমা অ-বাঙালি বলে কী তাকে রাষ্ট্রদ্রোহী বলে গালিগালাজ করা হয়? আর বাঙালি বলে কী সাকাচৌ’কে রাষ্ট্রীয় আদরে সংসদে ও মাঠেঘাটে যা ইচ্ছা তা বলার ও করার সুযোগ দেওয়া হয়? সাকাচৌ’কে রাষ্ট্রদ্রোহী ঘোষণা করে তাকে কী স্বাধীন বাংলাদেশে বিচারের মুখোমুখী করা যাবে না? আজ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হতে চলেছে - কোথায় গেছেন সেসব স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ফেরিওয়ালারা? পুনশ্চ: কিছুদিন আগে সুপ্রিম কোর্টের পঞ্চম সংশোধনীর রায়ের পর সাকাচৌ বিচারকদেরকে লালমিয়া, সোনামিয়া ইত্যাদি অভিহিত করে বিচার বিভাগকেও চরম কটাক্ষ করেছেন।

সাকাচৌ কী এভাবে বারবার পার পেয়ে যাবেন?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।