আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাকিস্তানঃ মুখোশ যেখানে সাধারন, নৈতিকতা যেখানে মুমূর্ষু

মুক্ত আকাশ দেখব বলে বয়ে চলা। আকাশ কেন মুক্ত হয় না।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ আমার দেখা হয়নি। তখন আমার জন্মই হয়নি। কিন্তু আমার নিকটজনদের কাছে মুক্তিযোদ্ধের কথা প্রতিনিয়ত শুনেছি।

তাদের অবর্ননীয় দুর্ভোগের কথা শুনে মনে ব্যাথা পেতাম ছোটবেলায়। আর আজ আমাদের জানা মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান নামক দেশটি আমাদের উপর কতটা পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে। আমার ঘরে ১জন মুক্তিযোদ্ধা আছেন। তাঁর প্রতি আমার বিনম্র শ্রদ্ধা। আমার মায়ের বড় ভাইকে পেটে নিয়ে এগ্রাম থেকে ওগ্রাম দৌঁড়ে বেড়ানো বা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আর বাংলাদেশী রাজাকারদের হাত থেকে বাঁচার জন্যে পালিয়ে বেড়নোর কথা যখন শুনেছি তখন শুধুমাত্র ঘৃনা জন্মেছে তাদের জন্যে।

এইরকম পরিবেশে আমার বেড়ে ওঠা। কোন অজুহাতেই আমি পাকিস্তান বা পাকিস্তানপন্থিদের মেনে নিতে পারিনা। সেদিন আমার বড় ভাইটি বাঁচেনি। যাই হউক আমার বক্তব্য এইসব নিয়ে নয়। আমরা দেশের বাইরে এখানে খুব বেশি বাংলাদেশী নেই।

প্রায় ৩০/৪০ জন মাস্টার্স আর পিএইচডি করতে এসেছে কোরিয়ান বৃত্তি নিয়ে। এখানে অনেক অনেক পাকিস্তানিও আছে। তারাও আমাদের মতোই। পাকিস্তানের এলিট শ্রেনী, শিক্ষায়, আচরনে(!)। আছে আরও অনেক ভিনদেশী।

সবার সাথেই আমাদের চেনা জানা। এখানে বিদেশী কম বিধায় এখাঙ্কার পার্বনে সবার সাথে দেখা হয়। পাকিস্তানীরা নামাজী। প্রায় সবাই নামাজ পড়েন বা পড়ার চেষ্টা করেন বা দেখানোর চেষ্টা করেন। বাংলাদেশের বুয়েট থেকে একটা মেয়ে এসেছে বৃত্তি নিয়ে।

ভাল ছাত্রী। তাকে পাকিস্তানীরা কেও দেখতে পারে না। কারন হল সে জিন্স পড়ে, টি শার্ট পড়ে। বাংলাদেশী ছেলেদের ওরা বলে বাংলাদেশী মুসলিম মেয়ে হয়ে মেয়েটি কেন এই পোশাক পড়বে। তোমরা বাংলাদেশীরা কিছু বলতে পার না? তোমরাতো সত্যিকারের মুসলিম নও—তোমরা মডারেট মুসলিম।

সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল—যারা যারা মেয়েটাকে নিয়ে এতো কথা বলে তাদের প্রায় সবাই মেইল করে, মোবাইল এ ম্যসেজ পাঠায় বন্ধুত্বের আহবান জানিয়ে বা প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বা বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়ে বা দেখা করার কথা বলে বা ফোনে বন্ধুত্বের কথা বলে। মেয়েটি সব প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় বলে আরও বেশী করে রটনা রটায় এরা। ধর্ম পালন যার ব্রত সেই ছেলেটি পরীক্ষায় নকল করার দায়ে ধিকৃত হয়, ফুটবল খেলার মাঠে তার অশ্রাব্য গালিগালাজ শুনে আহত হওয়া ছাড়া কিছুই বলার থাকে না। আমাদের বাংলাদেশী বোনটি ওদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে যখন প্রায় দিশেহারা তখনি ২টা পাকিস্তানী মেয়ে আসে পড়তে। একজন হিজাব পড়ে চলাফেরা করে আর একজন জিন্স আর টি শার্ট।

তখন থেকে ওরা শান্ত হয়। বাংলাদেশী মেয়েটা বেঁচে যায়। কিন্তু এই শেষ নয়। একদিন কোরিয়ান একটা অনুষ্ঠানে পাকিস্তানী ২ মেয়ে যায়। এক কোরিয়ান জিজ্ঞেস করে তোমরাতো মুসলিম, এক দেশের মানুষ কিন্তু ২ জনের পোশাক ২ রকম কেন।

জিন্স পড়া মেয়েটির ঝটপট উত্তর ওর স্বামী এখানে থাকে তাই হিজাব পড়ে আর আমার স্বামী এখানে থাকেনা তাই আমি পড়ি না। এই সপ্তাহে কোরিয়াতে ‘Thanks Giving Day’ এর ছুটি চলছিল। পাকিস্তানীরা খেলাধুলার আয়োজন করেছে এন্ট্রি ফি’র মাধ্যমে। বাংলাদেশীরা প্রায় সব খেলাতেই নাম লেখায়। শুধু ব্যাডমিন্টন খেলা্য নৈতিকতা নিয়ে বলছি।

বাংলাদেশের শাওন-ডালিম, আনোয়ার-মালয়েশিয়ান ১জন, তিতাস-রাজু জুটি নাম দেয়। শাওন-ডালিম জুটির খেলা পরে আনোয়ার-মালয়েশিয়ান জুটির সাথে। শাওন-ডালিম জিতে ২য় রাউন্ডে ওঠে যায়। তিতাস-রাজু’র খেলা পাকিস্তানী জুটির সাথে। কিন্তু খেলা যখন শুরু হবে দেখা যায় একজন পাকিস্তানী আর একজন জার্মান (যে কিনা সবচেয়ে ভাল খেলে, যার সাথে আমাদের জিতা সম্ভব নয় এবং যে নির্দিষ্ট সময়ে নাম লেখায়নি, টাকাও দেয়নি, যার সাথে আমাদের খেলার কথা নয়)।

আসলে পাকিস্তানীরা বুঝতে পারছিল ওরা হেরে যাবে। যাই হউক তিতাস-রাজু জুটি হেরে যায় জার্মান খেলোয়ারের প্রায় একক কৃতিত্বে। আমরা আশাবাদী হয়ে বসে আছি আমাদের ২য় দল অন্তত জিতবে। এবার ২ নম্বরী করে শাওন-ডালিম জুটির সাথে পাকিস্তানী আর জার্মান জুটির খেলা দেয়। এবং বাংলাদেশীরা আবারো হেরে যায়।

অপরদিকে ২ পাকিস্তানি জুটি খেলে একটা ফাইনালে ওঠে। পড়ে আমরা আর থাকিনি খেলার মাঠে। ওদের এই এলিট শ্রেনী যদি এরকম নৈতিকতা বিহীন হয় তাহলে খুব সহজেই অনুমেয় সাধারন মানুষের কি অবস্থা। (অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্য গ্রহনযোগ্য নয়। রাজাকার/আলবদর/পাকিস্তান লাভারদেরো প্রবেশ নিশেধ এই লেখায়)


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।