আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভোরের কাগজ- সাপ্তাহিক বেড়ানো ফিচার পাতা প্রকাশ তারিখ- ২৩.০৯-২০১০ সেপ্টেম্বর ( প্রতি বৃহস্পতিবার )



লেখা ও ছবি: মর্তুজা আশীষ আহমেদ মায়াবী ইনানী সৈকতটা পাথুরে। বালির মাঝে মাঝে কে যেন ছোট-বড়-মাঝারি বিভিন্ন আকৃতির পাথর সাজিয়ে রেখেছে। ইচ্ছে করলে মাঝারি সাইজের পাথরের ওপরে বসা যায়। পাথরগুলো জোয়ারের সময় খুব পিচ্ছিল থাকে। বসতে গিয়ে আমাদের দলের কয়েকজন সমুদ্রের লোনাপানিতে পড়ে গেলো।

এ নিয়ে আমরা বেশ মজাই করছিলাম। প্রচন্ড রোদ চারদিকে। কিন্তু আকাশ ফাঁকা নেই। পুরো আকাশজুড়ে কালো মেঘের আনাগোনা। এই সময়টা বেড়ানোর সিজন নয় বলে মানুষজন কেউ নেই চারদিকে।

অন্য সময়ে আমাদের মতো আরো কিছু পর্যটক হয়তো চোখে পড়তো। আকাশে অনেক মেঘ। সূর্যের আলোর সঙ্গে মেঘ খেলা করছে। সঙ্গে সাগরের ঢেউয়ের গর্জন। সমুদ্রতীরে বালির পাশাপাশি বড় পাথরে ঢেউ আছড়ে পড়ছে।

কিছুক্ষণ বসলেই মন উদাস হয়ে যায়। এই সময়ে এমন অপরূপ জায়গা একটাই। ইনানী বিচ। সাগরের সঙ্গে পাথুরে বিচ যেখানে খেলা করে আর দূরের আকাশ মনকে উদাস করে দেয়। এই সময়ে ইনানী বিচ এমনই সুন্দর।

মেঘের সঙ্গে রোদের খেলা আর সাগরের ঢেউ আপনাকে নিয়ে যাবে এক অদ্ভুত মায়াবী জগতে। এখন দুএকটা গাংচিল চোখে পড়তে পারে। পৃথিবীর অন্যান্য সমুদ্রতীরের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রতীরের এটা একটা পার্থক্য। এখানে গাংচিল তেমন একটা দেখা যায় না। তা না হোক।

সমুদ্র সবাইকে কাছে টানে। কয়েকদিনের ছুটি পেয়ে ভাবছিলাম কোথায় যাওয়া যায়। বাইরে কোথাও ঘুরতে যেতে চাইলে সবার আগে যে জায়গার কথা মাথায় আসে তা হচ্ছে কক্সবাজার। কিন্তু ইদানীং কক্সবাজারে পর্যটক এতো বেশি যায় যে কক্সবাজারের সেই নির্জনতা পাওয়া যায় না। তাই বলে সমুদ্রকে মিস করতে চাইছিলাম না।

যেই ভাবা সেই কাজ, সমুদ্রও থাকবে আর তার সঙ্গে সৈকতের নির্জনতাও। এমন একটি সি বিচ হচ্ছে ইনানী বিচ। ইনানী বিচ কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দক্ষিণে। এখানে ভাটার সময়ে আসলে পাথুরে সৈকত চোখে পড়বে। অনেকটা সেন্ট মার্টিনের প্রবাল সৈকতের মতো।

তবে ভাটার সময় পানিতে নামার দুঃসাহসিকতা দেখানো উচিত হবে না। ইনানী বিচ দেখার জন্য এই বিচে থাকতে হবে এমন কোনো কথা নেই। কক্সবাজার শহরে থেকেও এই বিচ দেখা সম্ভব। কক্সবাজার থেকে এখানে আসার জন্য সিএনজি ক্যাব বা ব্যাটারিচালিত ক্যাব ভাড়া পাওয়া যাবে। ভাড়া দু-তিনশ টাকা লাগতে পারে।

সকালে আর সন্ধ্যার একটু আগে এই বিচ এক অদ্ভুত মায়াবী বর্ণ ধারণ করে। এটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন হবে। যারা একটু বেশি সময় ধরে ইনানী বিচে অবস্থান করতে চান তারা সঙ্গে খাবার-দাবার নিতে পারেন। কারণ খুব মানসম্পন্ন খাবার এখানে পাওয়া যাবে তা কিন্তু নয়। কক্সবাজার বাংলাদেশের অন্যতম হ্যাচারির শহর।

তার নিদর্শন এখানেও দেখা যাবে। এখানে পোনা তৈরি করার চেয়ে পোনা সংগ্রহ করা জেলেদের বেশি দেখা পাওয়া যাবে। যাদের ফটোগ্রাফির প্রতি আগ্রহ আছে তাদের জন্য ইনানী বিচ খুব ভালো জায়গা। ইনানী বিচে ঘুরছি আর ভাবছি যদি এখানে থেকে যেতে পারতাম তাহলে মন্দ হতো না। কিন্তু থেকে যাওয়া তো সম্ভব নয়।

ভাবতে ভাবতে বকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেলো। তাই চলে যেতে হলো কক্সবাজারের হোটেলে। যেখানে উঠেছি। তবে অবসর সময় ছুটি কাটাতে ইনানী বিচে আবারো আসবো এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।