এয়ারফোন লাগিয়ে বসে আছি ধানমন্ডির একটি রেস্তোরায়।
হঠাৎ হুরমুর করে তিনটে মেয়ে ঢুকে পড়ল। কোন টেবিলে বসবে সেটার সিদ্ধান্ত নিতেই যে সময় লাগলো তাতে করে এই সময়ের মধ্যে নির্ঘাত দশ
তলা বিল্ডিং থেকে হেঁটে হেঁটে নামা যাবে। যাই হোক,
সৌভাগ্য অথবা দুর্ভাগ্যক্রমে ওরা আমার
টেবিলের সামনের টেবিলেই বসল।
টুম্পা তুই ওদিকে বস আমি এদিকে বসবো, রিংকী তুই আমার পাশে আয়।
বুঝলাম তাদের একজনের নাম টুম্পা আর একজনের নাম রিংকী। অন্যজনের নাম
এখনো পাইনি। টুম্পা হাতে মোবাইল নিয়ে কল দিতে দিতে বসে পড়ল।
: ‘কিরে তোর পাঙ্খা কতদূর?’
জানতে চাইলো রিংকী।
: ‘পাঙ্খা না ছাই, এটা একটা রাম ভোদাই।
একেবারে মালিহার
প্রথমটার মত’। বলল টুম্পা।
: ‘কি? রাতুল? রাতুল অনেক কিউট ছিল’। বলল
মালিহা।
বুঝলাম, অন্য জনের নাম মালিহা।
: কিউট ছিলনা সেটাতো বলিনি। বললাম রাতুল
বোকা ছিল।
: হুম, একটা স্টুপিড।
তিন জনই হাসতে হাসতে লুটোপুটি খাবার
উপক্রম।
: ‘কিরে কিছু
খাবো নাকি বাসি পেটে বসে থাকবো?’
রিংকী গুতো দিল টুম্পাকে।
: ‘খাবিনা কেন? অর্ডার দে’। টুম্পা বলল।
: ‘ঐবারের রাকিবের মত তোর পাঙ্খাও
যদি না আসে তাহলে?’
মালিহার প্রশ্ন।
: ধুরো এটা রাকিবের মত এত ত্যাঁদর না।
এটা একটা কিউট
ভোদাই।
উঠতে বললে ওঠে বসতে বললে বসে।
: ‘অকে বস। তাহলে খেতে কোন বাঁধা নেই’।
বলল মালিহা।
: ‘আমি কিছু জানিনা পাঙ্খা সাহেব না এলে বিল
দেবে টুম্পা’।
বলল রিংকী।
হঠাত মেসেজ রিংটোন বেজে উঠলো।
: ‘বলেছিলামনা এটা একটা ভোদাই, ঠিকই
চলে আসবে।
এই যে মেসেজ পাঠিয়েছে, ও এখন পান্থপথে। আর
কয়েক মিনিট
লাগবে।
এবার কি খাবি খা’।
এবার
রিংকী জোড়ে জোড়ে ওয়েটারকে ডাকতে শুরু করলো।
দ্রুত ওয়েটার চলে আসলো। তারপর ওয়েটারের সামনেই
তিনজন কি খাবে না খাবে তা নিয়ে রীতিমত
গবেষণা শুরু
করে দিল। ওয়েটার বলল, ম্যাডাম আপনারা সিদ্ধান্ত নিন
কি খাবেন তারপর আমি আসছি।
ওয়েটারের কথায়
টুম্পা রীতিমত চোখ গরম করে বলল, দাঁড়ান
হয়ে গেছে। এবার
টুম্পা নিজেই অর্ডার করলো। টুম্পার
দেখা দেখি রিংকী আর
মালিহা ও অর্ডার করলো। এই তিনটে মানুষ
এতগুলো খাবে কিভাবে তা আমি চিন্তা করেও
কোন কুল
কিনারা পাচ্ছিলামনা। যাইহোক ওয়েটার অর্ডার
নিয়ে চলে গেল।
: ‘কিরে তোর পাঙ্খা কতদূর?’
জানতে চাইলো মালিহা।
: ‘দ্যাখ, ও না আসলে কিন্তু আমি এক টাকাও
বিল দেবোনা’।
বলল রিংকী।
: ‘আরে বললামনা ও একটা রাম ভোদাই। ও
না এসে পারবেই
না।
তোরা ইচ্ছামত খা’। বলল টুম্পা।
এরমধ্যে খাবার চলে এল। খেতেশুরু করার
আগে কাঁটা চামচ
দিয়ে যোদ্ধাদের তলোয়ার বানিয়ে ইচ্ছা মতন
যুদ্ধ করে নিল
তিনজন। বেশ হাসির রোল পড়ে গেল।
আশপাশের
লোকজন
তাদের দিকে তাকালো। সেদিকে তেমন গুরুত্ব
দিলনা টুম্পা,
রিংকী আর মালিহা।
আমি এয়ারফোন খুলে উঠে পরলাম। রেস্টুরেন্ট
থেকে বাইরে বের হলাম। সামনের রাইফেল স্কয়ার
ধরে হাঁটতে লাগলাম।
কিছুদুর যাবার পরে কি যেন
ভেবে আবার
ফিরে গেলাম রেস্টুরেন্টে।
কাউন্টারে গিয়ে জানতে চাইলাম ১৩ নাম্বার টেবিলের বিল কত?
ম্যানেজার বলল, ৫৬০০ টাকা।
বিলটা দেবো কি দেবোনা সেটা ভাববার জন্য ১০ সেকেন্ড সময় নিলাম। তারপর ভাবলাম গত তিন মাস
ধরে যে মেয়েটা আমাকে শুধুমাত্র একটা রামভোদাই
ভেবেছে তাকে আজ রামভোদাই বানানোর
সুযোগটা হাতছাড়া করি কিভাবে?
ম্যানেজারকে ধন্যবাদ
দিয়ে বাইরে বেড়িয়ে পড়লাম।
Courtesy: আপেল ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।