আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশের ৯৮% শকুন মরে গেছে ,উপকারী পাখি শকুন বাঁচাতে ডাইক্লোফেনাক নিষিদ্ধের তাগিদ

বন্যপ্রাণীদের বাঁচান, পরিবেশ রক্ষা করুন
[link| অনেক দেরিতে হলেও বিলুপ্তপ্রায় উপকারী পাখি শকুন রক্ষায় গবাদিপশুর ব্যথানাশক ওষুধ ডাইক্লোফেনাক নিষিদ্ধ করার বিষয়টি সরকারি পর্যায়ে আলোচনায় এসেছে। ডাইক্লোফেনাক ওষুধ খাওয়া কোনো মৃত গরুর মাংস খেলে শকুন কিডনি বিকল হয়ে ভুগে অল্প সময়ের মধ্যে মারা যায়। এ ধরনের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মাত্র গত এক যুগে শকুন বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হওয়ার মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। গতকাল রোববার বন বিভাগে আন্তর্জাতিক শকুন সচেতনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভার প্রধান অতিথি পরিবেশ ও বন সচিব মিহির কান্তি মজুমদার বলেছেন, ভারত, পাকিস্তান ও নেপালে ডাইক্লোফেনাক ওষুধ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বাংলাদেশেও তা নিষিদ্ধ করার জন্য সরকারের উচ্চপর্যায়ে আবেদন করা হবে।

মহাবিপন্ন প্রাণী রক্ষায় সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে—এ কথা জানিয়ে সচিব বলেন, শকুনের প্রজননের জন্য অভয়াশ্রয় তৈরি করা হবে। বন বিভাগ, বাংলাদেশ বন্য প্রাণী ট্রাস্ট ও বাংলাদেশ বার্ডস ক্লাব যৌথভাবে এ সভার আয়োজন করে। বাংলাদেশে বন বিভাগ ও বন্য প্রাণী ট্রাস্টের পর্যবেক্ষণে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে আর হাজার খানেক শকুন কোনো মতে বেঁচে আছে। গরুকে খাওয়ানো ডাইক্লোফেনাক প্রতিবেশী ভারতে শকুনের সংখ্যা মারাত্মকভাবে কমে যাওয়ার প্রধান কারণ। কেটোপ্রোফেনও শকুনের জন্য ক্ষতিকর বলে সভায় জানানো হয়।

বিশেষজ্ঞরা ডাইক্লোফেনাকের বিকল্প হিসেবে এখন মেলোক্সিক্যাম ব্যবহারের নির্দেশ দিচ্ছেন, যা পাখিটির জন্য ক্ষতিকর নয়। বন সংরক্ষক (বন্য প্রাণী অঞ্চল) তপন কুমার দে বলেন, শকুনের বসতি এলাকা হিসেবে ব্যবহূত উঁচু গাছগুলো সংরক্ষণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাখি পর্যবেক্ষক ইনাম আল হক বলেন, বিজ্ঞানীরা আগেই বলেছিলেন, শকুন কমে যাওয়ায় বাংলাদেশ ও ভারতে গবাদিপশুর অ্যানথ্রাক্স, যক্ষা ও খুরা রোগ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়বে। পশুর মৃতদেহ শকুন খাচ্ছে না বলে এসব রোগ-বালাই ছড়িয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, ডাইক্লোফেনাকের কারণে বাংলাদেশের ৯৮ শতাংশ শকুন মারা গেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলামও ডাইক্লোফেনাক নিষিদ্ধ করার দাবি করে বলেন, গরুর ব্যথানাশক হিসেবে বিজ্ঞানীরা মেলোক্সিক্যাম ব্যবহারের নির্দেশ দিচ্ছেন, যা শকুনের জন্য ক্ষতিকর নয়। কীটনাশকের বিপদের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ডিডিটির উদ্ভাবককে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু একপর্যায়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই ওষুধ মায়ের দুধে পাওয়া গেল। এর পর যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে ডিডিটি নিষিদ্ধ করা হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক মনিরুল আলম খান বলেন, সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ডাইক্লোফেনাকের মতো ক্লিটোফেনাকও শকুনের জন্য ক্ষতিকর।

সমাপনী বক্তব্যে প্রধান বন সংরক্ষক ইশতিয়াক উদ্দিন আহমেদ বন্য প্রাণীর প্রতি সহনশীল আচরণের জন্য প্রচারণা চালাতে গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানান।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.