আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্বামী নিয়ে দুই স্ত্রীর টানাটানি

তক

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে: একটি বিয়ের ঘটনা নিয়ে সিলেটে তোলপাড় চলছে। দুবাই ফেরত স্ত্রীর মামলায় জেলে গেলেন দুবাই প্রবাসী বিলাল আহমদ। আর দ্বিতীয় স্ত্রী তরুণী ফারহানাকে অবশেষে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে পিত্রালয়ে। তবে পুলিশ বলছে, পুরো ঘটনাটি রহস্যঘেরা। সঙ্গে থাকা ব্যক্তিদের প্ররোচনা কিংবা প্রতারিত হয়েই বড় বউ মামলা করতে পারেন।

তদন্ত ছাড়া কিছুই বলা যাচ্ছে না বলে পুলিশ কর্মকর্তারা মনে করেন। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রামদা গ্রামের সুরুজ আলীর ছেলে বিলাল আহমদ দুবাই প্রবাসী। দীর্ঘদিন ধরে তিনি প্রবাসে বসবাস করছেন। প্রায় ২ বছর আগে বিলাল আহমদের সঙ্গে বিয়ে হয় বিশ্বনাথের হামিদ বেগের মেয়ে হাস্না বেগম হেনার। বিয়ের পর ভালই চলছিল তাদের সংসার।

এক পর্যায়ে হেনাকে নিয়ে দুবাই চলে যায় বিলাল আহমদ। প্রায় এক বছর পর তারা দেশে ফিরে আসেন। ৭ই আগস্ট দেশে ফেরার পর হেনাকে পিত্রালয়ে পাঠিয়ে দিয়ে সিলেট শহরতলির মোল্লার গাঁও গ্রামের ফারজানা বেগমকে বিয়ে করেন বিলাল আহমদ। তিনি নতুন স্ত্রীকে নিয়ে উঠেন সিলেট শহরের গার্ডেন টাওয়ারের ৪৫-২ নং ফ্লাটে। এদিকে, ৩১শে আগস্ট বিলাল বাড়িতে ফোন করে তার প্রথম স্ত্রীকে জানায়, তার তো শরীর খারাপ।

এজন্য ডাক্তার দেখাতে সিলেটে আসতে হবে। স্বামীর ফোন পেয়ে দেবরকে নিয়ে সিলেট আসছিল হেনা। কিন্তু তাকে ডাক্তারের ওখানে না নিয়ে স্বামীর বাড়ির লোকজন গার্ডেন টাওয়ারে নিয়ে যান। ওখানে গিয়ে তিনি দ্বিতীয় স্ত্রীকে দেখতে পান। এ সময় উত্তেজিত হয়ে উঠলে স্বামীর বাড়ির লোকজন তাকে মারধোর করে আটক করে রাখে।

গতকাল সকালে পুলিশ গার্ডেন টাওয়ারে পৌঁছে দুই স্ত্রীসহ বিলালকে থানায় নিয়ে আসে। অবশেষে দুই স্ত্রীকে ছেড়ে দিয়ে প্রথমে ৫৪ ধারায় আটক রাখা হয় বিলালকে। পরে প্রথম স্ত্রীর মামলায় বিকালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ব্যাপারে প্রথম স্ত্রী হাস্না বেগম জানিয়েছেন, তার সঙ্গে বিয়ের পর আমাকে প্রবাসে নিয়ে প্রথমে দেহ ব্যবসায় জড়ানো চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাতে আমি রাজি না হওয়ায় আমার উপর নির্যাতন করা হয়।

তিনি বলেন, এখন আমাকে না জানিয়েই বিয়ে করা হয়েছে। এছাড়া বার বার ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। বিদেশেই আমার পরিবারের পক্ষ থেকে ৩ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। তবে লকআপে থাকা বিলাল আহমদ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, আমাকে ব্লাকমেইল করা হয়েছে।

এছাড়া আমি অনুমতি নিয়ে বিয়ে করেছি। সব কিছু আমার কাছে প্রমাণ আছে। তিনি জানান, বদরুলসহ কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে আমাকে ফাঁসাতে চাইছে হেনা। এজন্য তিনি হেনার দোষ না দিয়ে তার সহযোগীদের দায়ী করেন। অন্যদিকে, নতুন স্ত্রী ষোড়শী ফারজানা জানান, তিনি কিছুই জানেন না।

তার পরিবারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দেয়া হয়েছে। বিয়ের পর গার্ডেন টাওয়ারে নিয়ে আসা হয়। তিনি জানান, তার সঙ্গে বড় স্ত্রী অমানবিক আচরণ করেছে। সিলেটের কোতোয়ালি থানার সাব ইন্সপেক্টর অঞ্জন মানবজমিনকে জানিয়েছেন, বড় বউ মামলা করায় তিনি মামলা নিয়েছেন। পরবর্তীতে তদন্তে অনেক কিছুই বেরিয়ে আসতে পারে।

এদিকে, দুপুরে বড় স্ত্রী, ছোট স্ত্রী এবং কয়েকজন লোকসহ হোটেল গুলশানের একটি কক্ষে বসে সমঝোতার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল। কিন্তু মিডিয়া কর্মীদের কারণে তা সম্ভব হয়নি বলে উপস্থিত লোকজন জানান।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।