আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সমকালের ঈদসংখ্যায় কবিগুরুর শান্তিনিকেতন



রবীন্দ্রনাথ। বাংলার সাথে মিশে আছেন যে মানুষটি। সেই মানুষটির নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। প্রকৃতিকে যিনি নিজের সাথি করে নিয়েছিলেন। বাংলার প্রকৃতিকে যিনি মানুষের অন্তরে জীবন দান করেছিলেন।

মানুষকে শুনিয়েছিলেন প্রকৃতিক ভিতরে বাজতে থাকা মিউজিক। সে মিউজিকে মাতাল হয়ে ওঠে সকলে। সেই রবীন্দ্রনাথ, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ হাজার-লাখো মানুষের অন্তরে লালিত হন। তিনি আরও জীবন্ত হয়ে থাকেন- তারই নির্মিত শান্তিনিকেতনে। যেই নিকেতনে অপার শান্তি তার নামই তো শান্তিনিকেতন হবে এমনটাই তো স্বাভাবিক।

যেখানে শিক্ষাগ্রহণ করেছেন বহু গুণিজন। আর নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে চলেছেন দেশের জন্য-দশের জন্য। আর সেই সাথে আরও জীবন্ত হয়ে উঠছেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এই শান্তিনিকেতন নিয়েই এবারের সমকালের ঈদসংখ্যায় বিশেষ আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে শিক্ষালাভ করা চারজন গুণিশিল্পী তাদের স্মৃতিকথা বলেছেন।

তারা সেখানে কিভাবে গেল, কি হলো সেখানে, কিভাবে পড়াশুনা করলেন, সেখানকার পরিবেশ প্রকৃতি এই সব বলেছেন। শান্তিনিকেতনকে যেন তারা আরও জীব্ন্ত করে তুলেছেন। এই চার গুণী রবীন্দ্রশিল্পীবৃন্দরা হলেন- পাপিয়া সরোয়ার, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, লিলি ইসলাম এবং অদিতি মহসিন। চারজন চারধরনের শিরোনামে লিখেছেন তাদের অভিজ্ঞতার কথা। প্রথমে, সোনার কাঠি ছোঁয়ার মতো শিরোণামে লিখেছেন পাপিয়া সরোয়ার।

তিনি তার লেখার শুরুতেই গানই তার ভালোবাসা বলে উল্লেখ করেন। আর সেই ভালোবাসা হলো- রবীন্দ্রসঙ্গীত। পাপিয়া ছোটবেলা থেকেই গানকে ভালোবাসতেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি প্রকৃতির প্রতি একটি আলাদা ভালোবাসা অনুভব করতেন। আর সেই কথা বলতে গিয়ে বলেন, পারিবারের সব সুন্দর পরিবেশের পাশাপাশি বাইরের প্রকৃতিও ছোটবেলা থেকেই বড় বেশি টানত।

সব ঋতুর আলাদা গন্ধ, আলো-অন্ধকার, জোছনাভেজা রাত, মেঘলা আকাশ, বৃষ্টি, সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত- সবই এখনও আমাকে প্রচন্ডভাবে নাড়া দেয় শহরের এই ইট, কাঠ, হৈচৈয়ের ভেতর থেকেও। পাপিয়া ছায়ানটে ১৯৬৭ সালে শুরুতে গান শেখা শুরু করেন। কিন্তু পড়াশুনা শেষ না করেই ছয়ানট থেকে চলে আসেন বুলবুল একাডেমীতে। ঠিক ঐ সময় ভারত সরকারের বৃত্তি পান তিনি। প্রথম সেখানে যান ১৯৭৩ সালে ।

সেখানকার পরিবেশও তাকে মুগ্ধ করে। শান্তিনিকেতনের নাম তিনি বহুবার শুনেছেন। বহু নামকরা শিল্পীদের কথা শুনেছেন যারা শান্তিনিকেতনের শিল্পী। সেই মানুষগুলোর পাশাপাশি চলে যাওয়া তার জন্য ছিল পুরো স্বপ্নের মতো। পাপিয়া সরোয়ার আর গর্বিতবোধ করেন কারণ তিনিই ছিলেন সঙ্গীত ভবনের প্রথম বাংলাদেশি শিক্ষার্থী।

এভাবেই তিনি গল্প করেন তার শান্তিনিকেতনের জীবন নিয়ে। একে একে বলে চলেন সেখানকার অভিজ্ঞতাগুলো নিয়ে। হোষ্টেল জীবন, সেখানে রান্নাবান্নার কথা। তার রচনায় সবচাইতে বড় জাগয়া নিয়ে ছিল সেখানকার গুরুজনেরা। তিনি লিখেছেন তাদের আন্তরিকতার কথা।

অসুস্থ থাকা অবস্থাতেও তাঁরা ক্লাস নিতেন। তাঁরা সব কিছুকে অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করতে জানেন। শুধু দায়িত্বপালনের জন্যই দায়িত্ব পালন করতেন না। আর এ কারণেই সঙ্গীত ঢুকে গেছে তার রক্তে। তার অন্তরে।

এর সমস্ত সফলতা শুধু তার গুরুজনদের। শান্তিনিকেতন সম্পর্কে- তিনি বলেন, শান্তিনিকেতনের সুবাদে আমার জীবনের সঙ্গে সঙ্গীত যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। সঙ্গীতের সাধনা বলতে কী বোঝায় শান্তিনিকেতনে গিয়ে এ কথা খুব ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছি। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে আমার পড়াশুনা শেষ হয় ১৯৭৭ সালে। স্নাতক শ্রেণীতে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হই।

দ্বিতীয় লেখাটি “মোহরদি’কে ঘিরেই আবর্তিত” শিরোনামে জনপ্রিয় রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার। তিনিও একই ভাবে বলেছেন, ছোটবেলা থেকেই শান্তিনিকেতন সম্পর্কে একটা মোহর কথা। সেখানকার পরিবেশ-প্রকৃতির সাথে মিশে গেছে গান। এ সম্পর্কে তিনি উল্লেখ করেন, শান্তিনিকেতনের আকাশ-বাতাস, গাছপালা-প্রকৃতি আর জীবনের সঙ্গে গান এমন সহজভাবে মিশে গেছে যে, তা নাগরিক জীবনের মতো কখনও আরোপিত মনে হয় না। গান গাওয়ার কথা ভাবতে হয় না।

গান আপনাআপনি চলে আসে। শান্তিনিকেতনে গান শেখানোর পদ্ধতিও সহজ। পাঠভবনে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা পড়াশুনার সঙ্গে সঙ্গে গান শিখতে শিখতেই বেড়ে ওঠে। আমরা যারা সঙ্গীতভবনের গান শিখছি, তারাও সারাদিনই একটা গানের পরিবেশের মধ্যে বসবাস করছি। তার লেখার শিরোনাম দেখেই বোঝা যায়, তিনি তার পছন্দের একজন শিক্ষককে কেন্দ্র করেই লিখেছেন লেখাটি।

সত্তরের দশকের মাঝামাঝি কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী। সেই কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় সঙ্গীত ভবনের অধ্যক্ষরুপে শান্তিনিকেতনে আসেন। সেই কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়-ই হলেন, সকলের মোহর’দি। মোহর’দির রূপের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে রেজওয়ানা লিখেছেন, কী অপূর্ব সুন্দরী! যেন স্বর্গের কাছে মর্ত্য যা চায়, সেই রূপ পবিত্র শুভ কল্যাণী প্রতিমা। সদ্য স্নাত, ভেজা চুল পিঠে ছাড়ানো, সাদা রঙের শাড়ী পরা, প্রসাধনহীন, নিরাভরণ।

এই মোহরদিকে নিয়ে পুরো রচনা জুড়ে আলোচনা করেছেন বন্যা। বাংলাদেশিদের প্রতি মোহরদির ভালোবাসার কথা বলেছেন। তবে ব্যস্ততার জন্য খুব একটা কাছে পাওয়া হতো না মোহরদিকে। কিন্তু নব্বয়ের দশকে মোহর’দি স্বয়ং ডাক পাঠান রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে। তখন খুব কাছ থেকে দেখা হয় গুরু মোহর’দিকে।

সকাল থেকে রাত সারাদিন একটি মানুষের সাথে থেকে মুগ্ধ হন বন্যা। তাঁর গুরু মোহর’দিকে নিয়ে বলেন, নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে, স্নেহে, প্রেমে তিনি আমাকে তৈরি করেছেন আগামীতে পথচলার জন্য। তিনি রবীন্দ্রনাথকে চিনতে শেখান প্রতিটি গানের মধ্যে নিবিড় উপলব্ধি দিয়ে। আমিও এক অলিখিত দায়িত্ব আর অধিকারবোধ অনুভব করি আমার মধ্যে। যেন মোহরদি আমার।

রবীন্দ্রনাথকে আগে দেখিনি। গান, কবিতা, গল্প, নাটক, আমার দেশের সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে-প্রতিবাদ-প্রতিরোধের আলোছায়ায় স্বপ্ন প্রদোষে তার উপস্থিত ছিল। দূর থেকে তার হৃদয়ে তার উপলব্ধি ক্রমশ নিবিড় হচ্ছিল; কিন্তু দূরত্ব ঘোচেনি। মোহরদির হাত ধরে সে দূরত্ব ঘোচালাম। দূরের মানুষ যেন কাছে এলো।

মোহরদি নিয়ে গেলেন সেই চিরচেনা মানুষটির চেনা গল্পের কাছাকাছি। আমার শান্তিনিকেতনের স্মৃতিকথা তাই মোহরদিকে ঘিরে আবর্তিত। তৃতীয় লেখাটি হলো- ভোরের মহুয়া আর গন্ধরাজ। লিখেছেন “লিলি ইসলাম”। একই ভাবে তার লেখাতেও উঠে এসেছ শৈশব।

ছোটবেলা থেকেই শান্তিনিকেতনে পড়বার একটা স্বপ্ন তিনি বুকে লালন করেছেন। ১৯৮১ সালে শান্তিনিকেতনে সঙ্গীত বিভাগে তিনি ভর্তি হন। শান্তিনিকেতন সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে লিলি ইসলাম বলেন, নামের মতই শান্তির শীতল পরশ মাখানো স্থান শান্তিনিকেতন। প্রকৃতির সঙ্গে শান্তিনিকেতনের যে গভীর একটা সম্পর্ক আছে, সেটা ছোটবেলায় লোকমুখে শুনেছি। কিন্তু শান্তিনিকেতনে গিয়ে তা স্বচক্ষে অবলোকন করলাম।

যেন প্রকৃতির নিবিড় হাতে গড়ে ওঠা কোন স্বপ্নরাজ্য। সেখান কোন কৃত্রিমতার ছোয়া নেই। সবখানে প্রকৃতির ছোঁয়া। এই লেখা পড়তে গিয়ে আমরা জানতে পারি, লিলি ইসলাম যে হোষ্টেলে থাকতেন সেই হোষ্টেলে খুন্তি দাস গুপ্ত নামে একজন থাকতেন। যিনি সুচিত্রা সেনের দূর সম্পর্কের আত্বীয় ছিল।

এছাড়া, তাদের বান্ধবীদের মধ্যে সবার আগে কে ঘুম থেকে উঠে রেওয়াজ কক্ষে পৌছাতে পারবে এমন প্রতিযোগিতার গল্পও মুগ্ধ করবে সকলকে। মাঝে মাঝে তারা ঘুরতে যেত অজয় নদীর পাড়ে। সবাই মিলে সাইকেলে চড়ে যেত অজয় নদী ভ্রমনে। মজার ঘটনাটা বর্ণনা ছিল শান্তিনিকেতনের সিনামা হলকে নিয়ে। মাত্র এক টাকায় সিনেমা দেখা যেত।

সাঁওতাল পল্লীতে শান্তিনিকেতন অবস্থিত। তাই সাঁওতালরা সিনেমা দেখতে আসতো। তাদের সাথে বিভিন্ন দুষ্টুমী করে তাদের বিরক্ত করতো। আর মজার বিষয় ছিল, যখন বৃষ্টি হতো, তখন মাইকিং করা হত। বলা হত, আপনারা সবাই পা উঠিয়ে বসুন।

তার মানে হলো, বৃষ্টির পানি ভেতরে ঢুকে গেছে। এধরনের আনন্দময় মুহূর্তগুলো বলতে গিয়ে লিলি ইসলাম বলে উঠেন, ….কখনও আমার মধ্যে একঘেয়েমি আসতো না। শান্তিনিকেতনের মধ্যে প্রতিদিনই নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করতাম। এ ছিল অন্যরকম অনুভুতি। গুরুদের কথা বলতে গিয়ে তার লেখাতেও উঠে আসে মোহরদি।

গুরু-শির্ষের সম্পর্ক কতটা মধুর হতে পারে তা তিনি শিখেছেন মোহরদির কাছ থেকে। চতূর্থ লেখাটা লিখেছেন, অদিতি মহসিন। শিরোনাম- প্রকৃতির অনেক কাছাকাছি। ১৯৯২ সালে সমাজবিজ্ঞানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর যখন হঠাৎ শান্তিনিকেতনে বৃত্তি পান অদিতি মহসিন। তখন তিনি চমকে উঠেন।

শিল্পের কাছে ছুটে যাওয়ার এক আকুল ইচ্ছা অপরদিকে ভবিষ্যত পরিকল্পনা সব মিলিয়ে অনেকটা সন্দিহান হয়ে পড়েন তিনি। এমন সময় তার বাবা তাকে উৎসাহ দেন। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তো অনেক ছেলেমেয়েরাই পড়াশোনা করে, কিন্তু সবাই কি শান্তিনিকেতনে পড়ার সুযোগ পায়? তুমি যেহেতু পেয়েছ এবং এটা যেহেতু সরকারি বৃত্তি, তাই আমি বলি তুমি যাও। অদিতিও শান্তিনিকেতনের প্রকৃতি নিয়ে কথা বলেছেন। সেখানে তিনি যান শ্রাবণ মাসে।

কিন্তু তখন রাত। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে তিনি অভিভূত হয়ে যান। ঘুম থেকে উঠেই বাইরে দাড়ালাম। তখন মনে হলো শান্তিনিকেতন নিয়ে এতোদিন যেমনটা ঠিক ভেবেছিলাম; মনের মধ্যে ছবি এঁকেছিলাম, ঠিক একই ছবি যেন আমার দু’চোখে দৃশ্যমান হলো। সেই বড় বড় গাছ।

গাছের পর গাছ আর গাছ। আর কিছু দেখা যায় না। রাস্তা, বড় বড় মাঠ। তখন বর্ষা। শান্তিনিকেতন তখন আরও বেশি সবুজ।

শান্তিনিকেতন বর্ষার এক কথায় অপূর্ব। এমন বর্ষা পৃথিবীর কোথাও খুব কমই দেখেছি। এত অপূর্ব বৃষ্টি। গাছের ওপরে অঝোর ধারায় বৃষ্টি পড়তে থাকে। ……… এভাবেই প্রকৃতির সৌন্দর্য অদিতিকে মুগ্ধ করে।

লিলি ইসলামের মতই অদিতি আরেকটি নদীর কথা উল্লেখ করেন। এ নদীর নাম কোপাই নদী। যে নদীটি নিয়েই কবিগুরু লিখেছিলেন, আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে/ বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে। এই নদীতে তারা সবাই সাইকেলে করে ঘুরতে যেত। তবে নিয়ম অনুযায়ী রাত নটার মধ্যে সকলকে হোষ্টেলে পৌছাতে হতো।

আদিতির লেখাতেও মোহরদিকে পাওয়া যায়। তিনিও বলেন, বাংলাদেশি হওয়ার সুবাদে মোহরদির অনেক আদরে ছিলেন। প্রকৃতির খেলায় তৈরী হওয়া শান্তিনিকেতন অদিতির মনের গভীরে বিশাল ছাপ ফেলে রেখেছে তা রচনাটি পড়লেই বোঝা যায়। বাংলা ঋতুর খেলা একমাত্র যেন শান্তিনিকেতনেই উপভোগ করা যায়। শান্তিনিকেতন নিয়ে এই আয়োজন সকলের কাছে কিছুটা হলেও দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো সম্ভব হবে।

আমরা যারা শান্তিনিকেতনকে শুধু লোকমুখেই শুনে এসেছি, তাদের কাছে জীবন্ত হয়ে উঠবে প্রকৃতির কোলে বেড়ে উঠা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন। ------------------------------------------------------ সমকালের ঈদ সংখ্যা ২০১০ মূল্য: ১৫০ টাকা

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.