আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গোলাপেরা এখন জেলে....।



বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠতম বিদ্যাপিঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। আমাদের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তি সংগ্রামের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের সাথে মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে উত্তর বঙ্গের এ তীর্থভূমির ইতিহাস। বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী হত্যার নারকীয় অধ্যায়ের সূচনা রাবির প্রক্টর অধ্যাপক শামছোজ্জোহাকে হত্যার মধ্য দিয়ে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এ অঞ্চলের হাজার হাজার হত দরিদ্র মানুষের রুটি রুজির ব্যবস্থা। এসব মানুষের সাথে কথা না বললে কেউ বিশ্বাসই করতে পারবেনা তারা কতটা সরল ও সৎ।

আজ এ গরীব মানুষদের মুখে হাসি নেই। চাঁদাবাজদের দৌরাতেœ তারা অতিষ্ট। তাদের কেউ কেউ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসা গুটিয়ে চলে গেছেন গ্রামের বাড়িতে। কেউবা যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যলয়ের প্রত্যেকটি আবাসিক হলে ৭০০-৮০০ জন ছাত্র ধারন মতা থাকলেও বর্তমানে সেখানে অবস্থান করছে ৫০ কি ১০০ জন।

ইবলিশ চত্ত্বরকে ঘিরে প্রতিদিন বিকালে এখন আর আড্ডা জমে না। মেয়েদের মধ্যে যে কয়জন হলে আছেন তারাও সন্ধ্যার আগেই রুমে ফিরে যান। ছাত্রদের পদচারনায় মুখরিত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দিকে তাকালে যেন মনে হয় জনমানবহীন ফাঁকা কোন দ্বীপ, আবাসিক হল গুলোতে এখন অবস্থান করছেন আসপাশ এলাকার বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছাত্ররা। হলে সিট দেওয়ার বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে ২-১০ হাজার টাকা, নেতাদের নির্দেশের একটু হের ফের হলেই আবাসিক ছাত্রদের পিটিয়ে তুলে দেয়া হয় পুলিশের হাতে, পুলিশ যেন সেই অপোই থাকে, যাচাই বাছাই না করে শুধু জেল হাজতেই নেয় না মাঝে মধ্যে শুনি রিমান্ডের গাল গল্পও। হল প্রশাসনের প থেকে শিার্থী প্রতি সিট ভাড়া প্রতিমাসে ১১০ টাকা ধার্য করা হলেও একটি বিশেষ ছাত্রসংগঠনের ছাত্রনেতাকর্তৃক এখন নেয়া হচ্ছে ৫০০-১০০০ টাকা।

হলে থাকা স্বল্প সংখ্যক সাধারণ শিার্থীদের অনেকেই এখন হল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। শিার সেই পরিবেশ এখন আর নেই হলে। প্রতিটি হলে জমে উঠেছে মাদক ব্যবসা। কেউ মাদক সেবন না করতে চাইলে তাকে ভিন্ন রাজনৈতিক আদর্শের বলে সন্দেহ করা হয়। হলের কে গড়ে তোলা হয়েছে একটি ছাত্র সংগঠনের অফিস।

সেখানের নির্দেশেই চলছে বিশ্ববিদ্যালয়। তাদের চোখ রাঙ্গানির কাছে হল প্রশাসন একেবারে অসহায়, জানিনা ২২ হাজার শিার্থীর পিতা শ্রদ্ধেয় ভিসি কি ভাবছেন.. নিজের মনের সাথে সারাণ যুদ্ধ করে তিনি পদের ভয়ে হাসি মুখে সংবাদ সম্মেলন করেন। মাঝে মাঝে আবার সোনার ছেলেদের গ্র“প বিবাদের দায়ভার নিতে হয় সাধারন ছাত্রদের। বেশ কিছু দিন আগে রাষ্ট্রীয় সুবিধাভোগী একটি কথিত বহুল প্রচলিত পত্রিকায়, একজন পররাষ্ট্রনীতিহীন বাম কলামিস্ট হাস্যকর উদ্ভট আশংকা প্রকাশ করেছেন, একটি সুপার পাওয়ার আদু ভাই ছাত্র সংগঠন তার ভাষায় বিরোধী সংগঠনমুক্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে না জানি নিজেদের জন্য নিজেরা হুমকি হয়, তারা না জানি সাধারন মানুষের জন্য বিরক্তির কারণ হয়? আমরা সাধারণ জনগণ ঐ কলামিস্টের অজ্ঞান প্রসুত অন্ধ পপাতিত্ব ও লোক দেখানো সাজানো আশংকাূুলক মায়াকান্নাকে জনসম্মুখে চাটুকার ও ধূর্তের সংকীর্ণ চাটুকারি বৈ অন্য কিছু মনে করতে পারি না, এসব মগজশূণ্য তথাকথিত ছাত্ররা রাজশাহীসহ সারা দেশে অসংখ্যবার নিজেদের রক্ত নিজেরা ঝরিয়েছেন। তাদের হিংস্র আঘাতেই তাদের সংগঠনের অসংখ্য জীবিত নেতাকর্মী হয়েছেন কফিনে শোয়া লাশ।

তথাকথিত বুর্জোয়া মানবতাবাদীদের চোখের সামনে তারা চার তলা থেকে জ্যান্ত মানুষ ছুড়ে ফেলেন হাত পায়ের রগ কেটে গাছে ঝুলিয়ে রাখেন। তারা দায়িত্বরত পুলিশ চাপড়ান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক ঠ্যাঙ্গান। সাম্রাজ্যবাদীদের ক্রিড়নক নারী নেত্রীদের নাকের ডগায় তাদের শিসে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কত মেয়ের শিাঙ্গনে আসা, চোখের সামনে মেয়ের শ্লীলতাহানীর লজ্জা সইতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়েছেন কত অসহায় পিতা! তাদের কল্যানে বিশ্ববিদ্যালয় গুলো পরিনত হয়েছে খদ্দের ব্যবসার রমরমা চারণভূমিতে! তাদের কারনে আজ হুমকিতে হাজার হাজার অসহায় ছাত্রের শিাজীবন। আজ শুধু তারাই তারা। তারামানে ধ্বংস।

তারা মানে টেন্ডার, চাদা, দেহব্যবসা। তারা মানে ভাসমান মৃত লাশ। তারা মানে খুনের নেশায় মত্ত হওয়া উগ্র কোন হায়েনা। সত্যি সেকুলাস! কি সুন্দর তোতা পাখির মত বুলি আওড়ানো...... এসব অকর্মন্য আদু ভাইয়েরা যেন নিজেদের জন্য নিজেরা হুমকি না হয়, তারা নিজেরা কি শুধু নিজেদের জন্যই হুমকি? তারা হুমকি দেশের উন্নয়নের, তারা হুমকি শিাঙ্গনের,তারা হুমকি নারীদের সম্ভ্রমের, তারা হুমকি মানষের জীবনের, সর্বোপরি তারা হুমকি একটি সহনশীল সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের। আজ রাবির দেয়াল গুলো যেন চাপা ােভ নিয়ে অসহায়ের মত দাড়িয়ে আছে।

তাদের দেখে মনে হয়, তারা যেন চিৎকার করে কি বলতে চায়.... সাধারণ ছাত্রদের চোখ কাদের যেন খুঁজে বেড়ায়। কেউ কেউ বলে বুকের উপর চাপা জগদ্দল পাথর সরাতে তারা নাকি গোলাপদের খুঁজছে। কিন্তু গোলাপরাতো এখন আর থাকেনা এখানে। তাদের পাবে কোথায়? মিথ্যা খুনের দায়ভার নিয়ে গোলাপেরা যে এখন জেলে....।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.