আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভোগবাদ, র্দূনীতি ও কর্পোরেট বাণিজ্য (তৃতীয় পর্ব)


[ বিশ্বায়নের ডামাডোলে বিশ্বজুড়ে আজ চলছে ভোগবাদ দর্শনের প্রচন্ড দাপট। মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত জনগোষ্ঠীর মনন আজ "ভোগেই তৃপ্তি"- এ বেদবাক্যে উজ্জীবিত। চারদিকে 'চাই, চাই আরো চাই" ধ্বনি। খোদ আমেরিকা থেকে শুরু করে পৃথিবীর গরীবতর দেশ এ বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর একাংশ পর্যন্ত এই ভোগবাদ দর্শনকে ক্রমান্বয়ে করে নিচ্ছে জীবনের ব্রত। এ ভোগবাদ দর্শনের স্বরূপ উন্মোচনের লক্ষ্যেই এ লেখার অবতারণা।

কয়েকটি পর্বে এ লেখাটি সম্পন্ন হবে। বিষয়টি সম্পর্কে আপনাদের মন্তব্য কাঙ্খিত। ] দ্বিতীয় পর্ব : Click This Link প্রথম পর্ব: Click This Link তৃতীয় পর্ব ভোক্তার মানসভূমে ভোগবাদকে উসকে দেওয়ার বড় একটি হাতিয়ার হচ্ছে ভোগ্যপণ্যের ব্র্যান্ড সৃষ্টিকরণ। প্রায় প্রতিটি কর্পোরেটই আজকাল তাদের ভোগ্যপণ্য কিংবা পরিষেবাকে ব্যান্ডে রূপান্তরিত করতে বিশেষ প্রয়াস চালায়। অনেক কর্পোরেটেই রয়েছে ব্র্যান্ড ম্যানেজারের নেতৃত্বে পণ্য কিংবা পরিষেবাকে ব্র্যান্ডে রূপান্তরিত করার বিশেষ কার্যক্রম।

কর্পোরেট বাণিজ্যে এই ব্র্যান্ড এতো গুরুত্ব পেয়েছে যে ব্যবসা বাণিজ্য শিক্ষার উচ্চতর পর্যায়ে ব্র্যান্ড ব্যবস্থাপণা একটি পৃথক বিষয় হিসেবে ইতোমধ্যেই বিশেষ মর্যাদা লাভ করেছে। স্বীকার্য্য, কোন পণ্য কিংবা পরিষেবাকে ব্র্যান্ডে রূপান্তরিত করতে পণ্য প্রস্তুতকারক কিংবা পরিষেবা প্রদানকারীদের যথেষ্ঠ ঝামেলা পোহাতে হয়। বিশেষ করে ব্র্যান্ডে রূপান্তরিত করার প্রাথমিক পর্যায়ে পণ্য কিংবা পরিষেবান গুণগত মানের দিকে বিশেষ নজর রাখতে হয়। তবে তার চেয়ে বড় বিষয় হয়ে দাঁড়ায় বিজ্ঞাপণে প্রভূত পূঁজির বিনিয়োগ- যা বৃহৎ কর্পোরেটের পক্ষেই সম্ভব। অবশ্য পণ্য কিংবা পরিষেবা একবার ব্র্যান্ডে পরিণত হলে আর পেছন ফেরে তাকাতে হয় না, স্বল্পতম সময়েই কর্পোরেটগুলো কোটি কোটি টাকা মুনাফা করতে শুরু করে।

যা হোক, সাধারণ ভোক্তাদের কাছে পণ্যের গুণাবলী, উপযোগিতা নয় বরং ব্র্যান্ডেড পণ্যের ভাবমূর্তিই বড় হয়ে দেখা দেয়। যেমন ধরুন, তরুন প্রজন্মের কাছে নাইক, পলো, রিবোক ইত্যাদি ব্র্যান্ডেড টি সার্টের আবেদন অন্যান্য ননব্র্যান্ডেড টি সার্টের চেয়ে অনেক বেশী। অথচ, কম মূল্যের ননব্র্যান্ডেড টি সার্ট উল্লেখিত ব্রান্ডেড টি সার্টের চেয়ে গুণগত মান অনেক ভাল হলেও তরুণদের মনে তা খুব একটা আবেদন সৃষ্টি করে না। মূলত: টি সার্টে খচিত ব্রান্ডের চিহ্নই (সিম্বল) তাদের কাছে অধিকতর মূল্যবান। মোদ্দা কথা, ভোগবাদী সমাজই সৃষ্টি করেছে এই অসুস্থ মানসিকতা।

এ সমাজে মানুষকে বিচার করা হয় সে কি ধরণের (কত দামের) ভোগ্যপণ্য ব্যবহার করে সেই বিচারে। পশ্চিমা বিশ্বে তাই জাগুয়ার, বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ ইত্যাদি দামী ব্র্যান্ডেড গাড়ির অধিকারীদেরকে সমাজে বিশেষ মর্যাদা লাভ করতে দেখা যায়। মানবিক গুণাবলীর মাপকাঠিতে মানুষকে মর্যাদা দেওয়ার রেওয়াজ ভোগবাদী সমাজে ক্রমশ: অপসৃয়মান। চলবে....
 


আরো পড়ুন


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।