আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিটলামী আর বিটলামী

সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ আমার হাবিজাবি লেখা পড়ে কারো মেজাজ খারাপ হলে আমি দায়ী নই!!

আমি বোধহয় তখন ক্লাস টু তে পড়ি। আমাদের বাসায় আমার দুই চাচা আর কাজিনের দল বেড়াতে এলো। বাসায় বেশ হুলুস্থুল! । আমি ছোট দেখে আমাকে আড্ডা থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য পড়তে বসতে বলা হলো। আমিও কম পাজি না, এক কোণায় বই নিয়ে খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ার ভান করে খুব মনোযোগ দিয়ে ওদের প্যাচাল শুনতে লাগলাম।

বড় মানুষেরা যে এত তুচ্ছ বিষয় নিয়ে হাহা হিহি করতে পারে সেটা সেদিনই বুঝতে পারলাম। যাই হোক সবাই হঠাৎ করে মুহম্মদ জাফর ইকবালের 'আধ ডজন স্কুল' বইটা নিয়ে আলোচনা করছিলো। সবার কথা থেকে যা বুঝলাম তা হলো, জাফর ইকবাল ছোট থাকতে কোন এক কারণে তাদের বাসার কুয়ার ভেতরের পানি সেচে ফেলা হয়েছিলো, সেই কুয়ায় তার মামা নেমেছিলো এবং কুয়ায় কিছু হাবিজাবি খেলনা পেয়েছিলো। তখন জাফরের বড় ভাই-বোন স্কুলে ছিলো। ওরা স্কুল থেকে আসার পর জাফর ইকবাল খেলনা গুলো নিয়ে বড় ভাই-বোনের কাছে গেলো আর জিজ্ঞেস করলো, বলতো, "আজ মামা কুয়ায় নেমেছিলো কি নামেনাই?" ওরা দুইজন "ভাড়ার ঘরে কে রে? আমি কলা খাইনা টাইপ প্রশ্ন শুনে মুচকি হেসে বললো, "নেমেছিলো"।

জাফর ইকবাল অবাক হয়ে বললো তোমরা কিভাবে জানো? ভাই-বোন উত্তর দেয়না। তারপর জাফর জিজ্ঞেস করে, "বলতো এই খেলনাগুলো কুয়া থেকে পাওয়া গেছে নাকি অন্য কোন জায়গা থেকে?...?" এরকম হাজারো প্রশ্ন! এইরকম বোকার মতো প্রশ্ন আর সবার তুমুল হাসি শুনে আমিও পড়ার ভান করা বাদ দিয়ে হেসে ফেললাম, আর তখনি আমাকে ঘর থেকে বের করে দেয়া হলো কারণ, আমার সামনে পরীক্ষা। আমিও কম বিটলা না, ভালো মানুষের মতো চলে এলাম, তবে তাদের বোকা বানাবোই এটা ঠিক করে রাখলাম। তিন-চার দিন পর আবার আমার চাচারা এলো, আমি দুই হাতে মুখ ঢেকে তাদের সামনে গিয়ে বললাম, "বলেন তো কালকে আমার দাঁত পড়েছে কি পড়ে নাই?" চাচাদের তো সে কি হাসি! সবাইকে ডেকে এনে বললো "দেখ, ওইদিনের মতো... হা হা হা!"। সবাইকে ইচ্ছা মতো হাসতে দিয়ে আমি বিজয়ীর ভঙ্গিতে আস্তে আস্তে মুখ থেকে হাত সরালাম।

ইইই করে দাঁত দেখিয়ে দিলাম, দাঁত কিন্তু পড়েনাই সবাই কেমন বোকা বোকা চোখে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো। আসলে এই বয়সেই এমন বিটলামীর উপরে বিটলামী করবো তা কেউ আন্দাজও করতে পারেনাই

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।