আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জিপিএ-৫ পেয়েও বুয়েটে ভর্তির আবেদন করতে পারবে না অনেক শিক্ষার্থী !

আমি কিছু জানি না......

এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েও অনেক শিক্ষার্থী বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তির আবেদন করতে পারবে না নতুন শর্তের কারণে। বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষার জন্য দুটি পরীক্ষায় সামগ্রিকভাবে জিপিএ-৫ পেতে হবে। সেইসঙ্গে পদার্থ, রসায়ন, গণিত ও ইংরেজি আলাদাভাবে জিপিএ-৫ না পেলে ভর্তি পরীক্ষার জন্যই আবেদন করতে পারবে না। কোন শিক্ষার্থী এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় সামগ্রিকভাবে জিপিএ-৫ পেলেও ওই চারটি বিষয়ের প্রত্যেকটিতে জিপিএ-৫ না পেলে ভর্তি পরীক্ষার জন্যই আবেদন করতে পারবে না। চলতি বছর ভর্তির জন্য আগামী সপ্তাহে বুয়েটের একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক ডাকার কথা রয়েছে।

জানা গেছে, বুয়েটে ভর্তির ক্ষেত্রে এবছর নতুন নিয়ম করা হবে। ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনের জন্য শিক্ষার্থীদের এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেতে হবে। এছাড়া পদার্থ, রসায়ন, গণিত ও ইংরেজিতে আলাদাভাবে জিপিএ-৫ পেতে হবে। গতবছর চারটি বিষয়ে মোট জিপিএ-২০ এর মধ্যে ১৯ চাওয়া হয়েছিল। এ বছর রেকর্ড সংখ্যক শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বুয়েট।

বুয়েট সূত্রে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট বোর্ড থেকে এইচএসসি পরীক্ষার ফল সংগ্রহ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বুয়েট। এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের পর অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে দুইবার পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ থাকলেও বুয়েটে একবারই পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ রয়েছে। বুয়েট সূত্রে জানা গেছে, আবেদনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমাতে ও প্রকৃত মেধাবীদের খোঁজতেই বুয়েট এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। সব বোর্ডে চার বিষয়ে ২০ নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছয় হাজারের কম হলে সেক্ষেত্রে গতবার পাসকরা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ হতে পারে। আর আবেদনকারী ছয় হাজার শিক্ষার্থী পেয়ে গেলে গতবারের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ হবে না এবারও।

বুয়েটে এ বছর ৯৬৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। এ বিষয়ে বুয়েটের ভিসি অধ্যাপক আমম সফিউল্লাহ বলেন, অতি দ্রুত একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক ডাকা হবে। তিনি বলেন, ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে এ বছর কিছু নতুন শর্ত আরোপ করা হবে। আমাদের পরীক্ষা পদ্ধতি সবসময় স্বাতন্ত্র। ভাল শিক্ষার্থী ভর্তি করাই আমাদের উদ্দেশ্য।

আমাদের জায়গা সঙ্কট রয়েছে। আবেদনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ব্যাপক হলে পরীক্ষা নেয়া কঠিন হয়। তিনি আরও বলেন, গত বছর চারটি বিষয়ে ২০ নম্বরের মধ্যে ১৯ চাওয়া হয়েছিল। এ বছর রেজাল্ট ভাল হওয়ায় ২০ এর মধ্যে ২০ই চাওয়া হবে। বুয়েট ছাড়াও অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে এবার ব্যাপক পরিবর্তন আসছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বাধার সম্মুখীন হতে হবে শিক্ষার্থীদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে জোরালোভাবে। সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডীনরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে। এ বছর ভর্তি ফরম অনলাইনে পূরণের আলোচনা চলছে। প্রস্তুতিও চলছে।

শেষ পর্যন্ত প্রস্তুতি শেষ না হলে গত বছরের মতোই এবারও ভর্তি ফরম বিক্রি হবে। তবে চারুকলা অনুষদের ভর্তি ফরম এবারও অনলাইনে পূরণ করতে হবে শিক্ষার্থীদের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিজ্ঞান অনুষদের অন্তর্ভুক্ত ‘ক’ ইউনিটের জন্য এবার ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনের জন্য এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় মোট জিপিটএ-১০ এর মধ্যে কমপক্ষে জিপিএ-৮ পেতে হবে। কলা অনুষদের অন্তর্ভুক্ত ‘খ’ ইউনিটে জিপিএ-৭, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের অন্তর্ভুক্ত ‘গ’ ইউনিটে জিপিএ-৭.৫০ ও বিভাগ পরিবর্তনকারী ‘ঘ’ ইউনিটে জিপিএ ৭.৫০ পেতে হবে। এছাড়া এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় আলাদা আলাদা জিপিএ পেতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন রয়েছে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার। এরমধ্যে কলা অনুষদে ২৫৯২টি, বিজ্ঞান অনুষদে প্রায় এক হাজার পাঁচশ’, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদে ৮৪৪টি ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে প্রায় ৭৫০টি আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক হারুন-উর-রশিদ বলেন, ভর্তি পরীক্ষা একটি চলমান প্রক্রিয়া। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা আন্তর্জাতিক মানের। এ পরীক্ষা পদ্ধতি যাতে সর্বোচ্চ স্বচ্ছ হয় সেলক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।

কিভাবে পরীক্ষা নেয়া যায় সেবিষয়ে আমরা আলোচনা করছি। এছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়াতেও পরিবর্তন আসবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গুচ্ছভিত্তিক পরীক্ষা নেয়া হবে। এ বছর এইচএসসিতে ভাল রেজাল্ট হওয়ায় প্রত্যাশিত জিপিএ-৫ পেয়েও অনেকেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবে না। জিপিএ-৫ পেয়েও অনেককে বাধ্য হয়েই পড়তে হবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২৭ হাজার আসন রয়েছে। ১০টি শিক্ষাবোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৮ হাজার ৬৭১ জন শিক্ষার্থী। আটটি স্কুল বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৫ হাজার ৫১২ জন। জিপিএ-৫ পাওয়া এক হাজার ৬৭১ জন শিক্ষার্থী যোগ্যতা থাকা সত্ত্বে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হবে সিট সঙ্কটের কারণে। এবার ১০টি বোর্ডে জিপিএ-৫ থেকে জিপিএ-৩ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা তিন লাখ ৯৩ হাজার ৯৬৩ জন।

এদের সবাই কোন না কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য প্রতিযোগিতা করবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আসন সঙ্কটের কারণে প্রায় তিন লাখ ৭১ হাজার শিক্ষার্থী অনার্স করতে পারবে না। তাদের ডিগ্রি কলেজ ও সমমান পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে হবে। স্নাতক পর্যায়ে ভর্তির ক্ষেত্রে বড় ধরনের সমস্যা না হলেও অপেক্ষাকৃত কম জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীরা অনার্সে ভর্তির ফরমই কিনতে পারবে না বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দেয়া শর্তের কারণে।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।