আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দায়ী কি শ্রমিকেরা?

পোশাকশ্রমিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার, বিদেশি ক্রেতা ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) নজর দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন পোশাকশিল্পের ব্যবসায়ী নেতারা।
আজ শনিবার জাতীয় সংসদ ভবনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে এক গণশুনানিতে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর পক্ষ থেকে নেতারা এ কথা বলেন। পোশাকশিল্পের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ এ দুটি সংগঠনের নেতারা অবশ্য বলেন, এ ব্যাপারে শিল্পমালিকদেরও দায়িত্ব আছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইসরাফিল আলমের সামনে বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর প্রতিনিধিরা। বক্তব্য উপস্থাপন শেষে সংগঠনের নেতারা চলে যান।

গণশুনানিতে তাঁরা শ্রমিকদের বক্তব্য শোনেননি।
শুনানির একপর্যায়ে ব্যবসায়ীরা কারখানা ভবনের নিরাপত্তা ও নির্মাণকাজের ত্রুটির বিষয়টি দেখার ক্ষেত্রে তাঁদের দায়িত্বের বিষয়টি এড়িয়ে গেলে ইসরাফিল আলম তাঁদের কাছে প্রশ্ন রাখেন, ‘দুর্ঘটনার জন্য ভবনমালিক দায়ী নন, প্রকৌশলী দায়ী নন, আপনি দায়ী নন, তাহলে দায়ী কে? দায়ী কি শ্রমিকেরা?’ এমন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর ব্যবসায়ী নেতারা দেননি।
শুনানিতে বিকেএমইএর প্রতিনিধি মো. হাতেম বলেছেন, বাংলাদেশে পোশাকশিল্প খুব পরিকল্পিভাবে গড়ে ওঠেনি। বহু শিল্প-কারখানার মালিকের নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। হঠাৎ করে তাঁদের পক্ষে ঢাকার বাইরে কারখানা স্থাপন করা কঠিন।

একতলা বা দোতলা ভবনের ওপর কারখানা করা যাবে না বলে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ফোরামে যে বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে, তা বাস্তবতাবর্জিত বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
বিজিএমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট রিয়াদ বিন মাহমুদ বলেন, ঢাকার কাছে জমির অনেক দাম। এত দাম দিয়ে জমি কিনলে অনেকের জন্য প্রকল্প লাভজনক হবে না। তবে বিজিএমইএ ও বিকেএমইর নেতারা মুন্সিগঞ্জের বাউসিয়ায় ‘গার্মেন্টস ভিলেজ’ করার সুযোগ দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।
বিজিএমইএ ও বিকেএমইর প্রতিনিধিরা বলেন, এই সংগঠন দুটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী।

কোনো কর্তৃপক্ষ নয়। সংগঠনের সদস্যপদ দেওয়ার সময় তাঁরা দেখেন, আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের রাজউক, ফায়ার সার্ভিসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান থেকে ১১টি সনদ আছে কি না। তাঁরা আরও বলেন, ক্রেতারা এক সেন্ট, দুই সেন্ট নিয়ে দর কষাকষি করেন। ব্যবসা করার ক্ষেত্রে বিদেশি ক্রেতাদের নৈতিকতা মানা দরকার বলেও তাঁরা মন্তব্য করেন। সাভারে ভবনধসে ব্যাপক প্রাণহানির পর পোপ এখানকার শ্রমিকদের জীবনকে ‘ক্রীতদাসের জীবন’ বলে যে মন্তব্য করেছেন, তার নিন্দা জানান তাঁরা।


শুনানির একপর্যায়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইসরাফিল আলম ব্যবসায়ী নেতাদের কাছে জানতে চান, কর্মপরিবেশ, স্বাস্থ্যনিরাপত্তা দেখার দায়িত্ব তাদের কি না। জবাবে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা বলেন, শুধু কাজের ক্ষেত্র দেখলে হবে না। শ্রমিকেরা বাড়িতে কেমন থাকছেন, সেটাও দেখতে হবে। সেই দায়িত্ব এনজিওগুলো নিতে পারে।
৩০ মের মধ্যে দোতলা বা তৃতীয় তলার ওপরে যেসব কারখানার জেনারেটর আছে, সেগুলো সরিয়ে ফেলতে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


শুনানিতে মালিক ও শ্রমিকপক্ষ ছাড়াও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডাসহ বিদেশি প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.