আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমি ও বাঘারু(১-৪) : আহমেদ মুনির

চন্দ্রবিন্দু ও আরও অনেকে, হেঁটে হেঁটে, প্রতিটি শব্দ আমাদের, পার হয়ে যায়...
১ বাঘারু এমন কোনো নাম নয় যা মানুষের স্মৃতিকে ঢেকে দিতে পারে গোলাপি মোড়কে। স্মৃতির প্রস্তরফলকে খোদাইকৃত কোনো মূর্তিই শেষ পর্যন্ত ধুলোর আঁচড় থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারেনি। কেননা মাটি আর তার ভেজা রসে পচে ওঠা পাতার পোশাক স্মৃতির শেষ গন্তব্য। তবু কোনো কোনো রাতে শীতার্ত মানুষের কুয়াশা-ঘেরা বিলাপের মধ্যেও বাঘারুজেগে উঠেছে চাঁদের আলো দিয়ে তৈরি নীরব কোনো বাথানে। ২ রাত্রিশেষের অন্ধকারে ঢাকা পড়ে যায় আমার ও বাঘারুর মাঝখানের অপরিচয়ের ব্যবধান।

ভোরের সূর্য দেখার আশায় হাঁটতে শুরু করেছিলো সে। রাত্রির শেষ শেয়ালের ডাক যতদূর যায় ততদূর চলে যাবে বলে। বাথানের মহিষের সঙ্গে মিশে গিয়েছিলো দিন ও রাতের স্বপ্ন। কোনটা কার, গয়ানাথের কিংবা মাদারির, আলাদা করতে পারে বাঘারু কেবল। যেখানটায় আর পাখিরা ওড়ে না, মানুষের ভাষাহীনতার গভীর থেকে সেদিক দিয়ে উঠে এল সূর্য।

তার নতুন আলো জাগিয়ে দিয়ে গেলো বাঘারুর চলে যাওয়া পথটাকে। আর আশ্চর্য, সূর্যটা এত কাছে যে ইচ্ছে করলেই হাত দিয়ে ধরা যায়। ৩ ভোর রাত্রির অন্ধ চোখ খুলে বাঘারু লিখে রেখেছে আলোর নাম। অথচ বাঘারু জানে না কী করে লিখতে হয়। কখনও শেখেনি পাখিদের পিঠে চেপে উড়ে যাওয়া রোদের জ্যামিতি।

আর এই পাখিরা, কী করে উড়তে হয় না জেনেই পাড়ি দিয়েছিলো ভুটান-পাহাড়ের উঁচু কাঁধ। বাঘারুর ছায়া ধরে হাঁটতে হাঁটতে কোথায় চলে যাচ্ছি আমি! ভোরের দিগন্তবিস্তারী বন নতজানু হয়ে আছে আমাদের বিস্ময়ের কাছে। সামনে তিস্তার নীরব চর। তার কালো মাটির উপর খইয়ের মতো ছড়িয়ে আছে অন্য এক ভাষা। ৪ 'মোর দেশ নাই।

মু্ই ইন্ডিয়ার না হয়, বাংলাদেশের না হয়'। না, রাত্রির কোনো সীমান্ত নেই। যেমন নেই ভোরের, প্লাবনের, ঝড়ের। বন্যার আবেগকে রুখতে পারে এমন বিডিআর কোথাও পাবে না। অথবা বিএসএফ জোয়ান কবে তার কালাশ্‌নিকভে ঠেকাতে পেরেছে মাটি চুঁইয়ে ধেয়ে আসা ধানের গন্ধ!
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।