আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জয়তু আওয়ামী লীগ....জয়তু ছাত্রলীগ.........................



ছাত্রলীগ একটি স্বতন্ত্র সংগঠন। তাই ছাত্রলীগের অপকর্মের দায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের নয়। আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীন কোন্দল, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, খুন-খারাবি, লুটতরাজ, টেন্ডারবাজি, চাদাঁবাজি, ছাত্রীদের শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণ কুর্কীতি, দখলবাজি, বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মসূচীতে হামলাসহ সারাদেশে চলমান অপকর্ম বন্ধে এবং নিয়ন্ত্রণে আওয়ামী লীগের কলা-কৌশল ভেস্তে যাবার প্রেক্ষিতে ডিজিটাল আওয়ামী সরকার ছাত্রলীগের অপকর্মের দায় এড়াতে ফন্দি-ফিকিরে ব্যস্ত। এমনকি নির্বাচন কমিশনে আওয়ামী লীগের দলীয় নিবন্ধনের শর্ত অনুযায়ী ছাত্রলীগকে নিয়ন্ত্রণের গণতান্ত্রিক অধিকার আওয়ামী লীগের নেই বলেও দাবি করা হচ্ছে! আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বেপরোয়া হয়ে সারাদেশেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ছাত্রীদের শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণ কুর্কীতি, দখলবাজিতে মেতে ওঠে আর অভ্যন্তরীন কোন্দলে জড়িয়ে পড়ে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ-সংঘাতে। এসব ঘটনার কারণে সরকার এবং আওয়ামী লীগকে বার বার বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়।

কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় ব্যর্থতার একপর্যায়ে খোদ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক নেত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান। সর্বশেষ গত জানুয়ারিতে ছাত্রলীগকে নিয়ন্ত্রণে আনতে দলের তিন সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, বিএম মোজাম্মেল হক এবং আহমেদ হোসেনকে দায়িত্ব দেন তিনি। তারা ছাত্রলীগের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকও করেন। কিন্তু তবুও থামেনি ছাত্রলীগের বেপরোয়া আচরণ। বরং তারা দেশের সরকারের ভিতর আরেক সরকার রূপধারণ করেছে।

সর্বশেষ গত সোমবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি আর সাধারণ সম্পাদক দু’পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহত অবস্থায় কাউকে কাউকে ৩-৪ তালা বিল্ডিং এর ছাদ থেকে নিচে ফেলেও দেয়া হয়...কী নিষ্ঠুরতা..কী বরর্বতা। জাবির সংঘর্ষের ঘটনার ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেন, "ছাত্রলীগের যারা অপকর্ম করবে তাদের গ্রেপ্তার করার নির্দেশ আমি আগেই দিয়েছি। এমন নির্দেশের পরও কিছু ঘটে গেলে কী করার আছে!" বাহ! স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশের পর কিছু ঘটে গেলেও তার করণীয় কিছুই নাই! ব্যর্থতার বিষয়টি তার মন্তব্যে স্পষ্টভাবে ফুটেঁ উঠলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বহাল তবিয়তেই আছেন। পক্ষান্তরে বিরোধী দলগুলোর রাজনৈতিক কর্মসূচীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশ না মেলে উপায় নেই পুলিশ লীগের।

বিরোধী দলের ছাত্র সংগঠনগুলোর কর্মসূচীতে বাধা, পুলিশ লেলিয়ে দেয়া এবং ছাত্রলীগের ভয়ানক হামলা প্রশাসনকে নিষ্ক্রিয় রাখাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দক্ষতার প্রসংশা না করে থাকা যায় না। অথচ ছাত্রলীগের অপর্কম নিয়ন্ত্রনে তার নির্দেশ কার্যকর করতে প্রশাসনের ব্যথতায় তিনি দায় এড়াতে চান সহজে। ছাত্রলীগ তাদের দলের না ইত্যাদি ইত্যাদি লেকচার দিয়ে। ছাত্রলীগের জন্য মনে হয় স্বতন্ত্র্য আইন-কানুন আসছে অচিরেই। হয়তো সেই ছাত্রলীগের চূড়ান্ত আইনের বিধানে অপর্কমের জন্য কোন শাস্তির বিধান থাকবে না পক্ষান্তরে বিরোধী দলগুলোর রাজনৈতিক কর্মসূচীতে ভয়াবহ হামলা চালিয়ে কর্মসূচী বাতিলে সক্ষম হবার জন্য পুরস্কার হিসেবে থাকবে নিরাপদে টেন্ডারবাজি, চাদাঁবাজি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত ছাত্রীদের ইজ্জত লুটেঁ আনন্দ উল্লাস করার ছাড়পত্র।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামও প্রকাশ্যেই ছাত্রলীগের দায় এড়িয়ে যাচ্ছেন। তিনি বিভিন্ন সময় বলেছেন, "ছাত্রলীগ স্বাধীন সংগঠন, আমরা তাদের পরামর্শ দিতে পারি, চাপ দিতে পারি না। " সর্বশেষ গত ২৭ জুন বিএনপির হরতাল চলাকালে একজন সংসদ সদস্যে উপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিক্রিয়ায় সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছিলেন, "ছাত্রলীগ-যুবলীগের অপকর্মের দায় আওয়ামী লীগ নেবে না। " একদিকে দায় এড়ানোর প্রতিযোগিতা অন্যদিকে বিনা বাধায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বেপরোয়া অপকর্ম নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যথতা নাকি ইচ্ছার অভাব-প্রশ্ন উঠাই স্বাভাবিক। নাকি বিরোধী দলগুলোর রাজনৈতিক কর্মসূচীতে হামলার জন্য ছাত্রলীগ সরকারের রিজার্ভ বেঞ্চ শক্তি।

প্রয়োজনে ব্যবহার করা যাবে! ছাত্রলীগের অপকর্মে আশাতীত সাফল্য অনুপ্রাণিত হয়ে এবার সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরাও হয়ে উঠছে বেপরোয়া। সর্বশেষে পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধাদান ও মারধরের অভিযোগে ঢাকা-১৬ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লার বিরুদ্ধে সাভারের আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন পুলিশ সার্জেন্ট শরিফুল ইসলাম। অভিযোগে বলা হয়, গত ৩০ জুন বিকেলে ৫টার দিকে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের আশুলিয়া বাজারের কাছে সরাইখানা রেস্টুরেন্টের সামনে কর্তব্য পালনের সময় যানজটে আটকা পড়েন এমপি ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা। এ সময় সাংসদ তার সহকর্মীর মাধ্যমে পুলিশ সার্জেন্ট শরিফুল ইসলামকে নিজের গাড়ির কাছে ডেকে নেন। পরে যানজট নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন ও একপর্যায়ে মারধর করেন।

মামলার এজাহারে সরকারি কর্তব্য পালনে বাধা, সরকারি পোশাকের অমর্যাদা ও সরকারি কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগ আনা হযেছে ইলিয়াস মোল্লার বিরুদ্ধে। এবার কী বলবেন আর কী নির্দেশ দিবেন মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। গত ২৭ জুনের হরতালে ছাত্রলীগের হামলায় মারাত্মক আহত হবার পরও স্পিকারের অনুমতি নিয়ে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য (বিএনিপি) শহীদউদ্দির চৌধুরী এ্যানিকে। তাহলে কী অচিরেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে গ্রেফতার হচ্ছেন ঢাকা-১৬ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লা। নাকি সরকারের বেলায় আইন-কানুন নাই যেমনটা ছাত্রলীগের বেলায়ও।

আইনের প্রয়োগ শুধুই বিরোধী দল এবং ভিন্নমত দমনে! জয়তু আওয়ামী লীগ জয়তু ছাত্রলীগ....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।