আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমরা খেলিনা, পারিও না, দেখি আর চেঁচামেচি করি শুধু! বাঙ্গালের ক্রীড়ানৈপুন্য ও বিশ্বকাপ।

নৌকা আর ধানের শীষে ভোট দিয়ে সোনার বাংলার খোয়াব দেখা আর মান্দার গাছ লাগিয়ে জলপাইর আশা করা একই! বিস্ময়ের ব্যাপার হল দিনের পর দিন আমরা তাই করছি!!
তাদের যে পরিমান পতাকা সারা বাংলাদেশে উড়ছে তা বোধ করি খোদ ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনায়ও উড়ছেনা। এমনকি টুর্নামেন্টে যোগদানকারী বা তা নয় ভূ-পৃস্টের এমন কোন দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় খেলা দেখার জন্য ছুটি ঘোষনা করা হয়েছে তা ও বিরল। কারো জানা জানা থাকলে আওয়াজ দিবেন। এমনি ফুটবল উম্মাদনায় মদমত্ত বাঙ্গাল। অথচ এ খেলাটিতে আমরা কখনোই বিশ্বকাপে খেলতি পারিনি, কেয়ামতের আগে যে কভূ পারব না তা বলে দেয়া যায়।

কেননা, আসলে আমরা খেলিনা। মোটাদাগে আমরা ক্রীড়াবিমুখ জাতি। হ্যাঁ, আমাদের ব্যাপক ক্রীড়াচর্চা, তবে তা মাঠে নয়। ড্রইং রুম, বেড রুম, চা দোকান, বাস, অফিস বা মহল্লার গলিতে। নিউজ, স্পোর্টস চ্যানেল, স্পোর্টস পাতা, ম্যাগাজিন, ওয়েব সাইট ও গাল-গল্পের বরাতে আমরা ধুন্ধুমার ক্রীড়াবিশারদ! তবে সরেজমিনে খোলা মাঠে ভালমত একটা দৌড়ও আমরা কালে ভদ্রে দিইনা।

ঠায় দাড়িয়ে থাকি রিকশার জন্য, হাঁটিনা! ঢাকা শহরের অবস্থা সবচে করুন। যে প্রজন্ম এখন ছাত্রাবস্থায় আছে তা পুরাপুরিই ফার্মের মুরগীর জীবন বেছে নিয়েছে বা বাধ্য হয়েছে। সচেতন বা নারীমহলে বাহু দেখানোর জন্য কেউ কেউ জিমে গেলেও "খেলাধুলা" নামক বস্তুটা জাতীয় অভিধান থেকে নির্বাসীত। আমাদের শৈশবে (এরশাদ আমল) গ্রামেগন্জে রোজ বিকেলেই সিজন ভেদে ফুটবল, কাবাডি, ভলিবল খেলা হত। এখন তা বিলুপ্ত।

শুকনো সিজনে ক্রিকেট ব্যাট নিয়ে কিছু ছোকড়া সময় কাটায় বটে তবে তা গোছালো কিছু না। গ্রামে বা শহরে বঙ্গীয় নারীকূল চিরকালি ক্রীড়াবিমুখ। ৭ম শ্রেনী পার হতে না হতেই তার কৈশোর 'যুবতী'র মেঘে ঢাকা পড়ে যায়। এসে যায় নানাবিধ বিধিনিষেধ। তবে সমবয়সী ছেলেরাও যে অনেক কিছু করতে পারে তা না।

জিপিএ ৫, প্রাইভেট, কোচিং, ইন্টারনেট, শপিংয়ের ব্যস্ততার অত্যাচারে খেলাধুলার ফুরসৎ মিলবে ক্যামনে। আর মিললেও মাঠ টা কই। ঢাকাশহ বড় শহরগুলোতে কংক্রিটের খাঁচা বানানোর বল্গাহীন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ওখানে নাকি মানুষ থাকবে! বলি, মানুষের চেয়ে ঢের ভালো আছে চিড়িয়াখানার প্রানীরা বা ফার্মের প্রানী। ওরা অন্তত: পড়শীদের সাথে পরস্পর কথা বলে, আড্ডা মারে।

ঢাকার মানুষ তা ও বন্চিত! খানিকটা ব্যতিক্রম হলেও গাঁয়ের চালচিত্র একই। চা দোকানে আড্ডা মারা ছাড়া উল্লেখ্য কোন বিনোদন নেই। খেলাধুলা বারমাসে একদিন বা এ পর্যায়ে। তবু অজ্ঞাতকারনে আমাদের ক্রীড়াসমর্থনের জোয়ারে সয়লাব নানান জাতি নানান দেশ। সুদুর ল্যাটিনের ২টি দেশের জয়-পরাজয়ে আমাদের অনেকেরই অনেক কিছু যায় বা আসে! আসলে যাওয়া বা আসার মত কিছু না থাকলে অনেকের যা হয় আর কি!
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।