আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাইকেল জ্যাকসন (১)

www.cameraman-blog.com/

আজ মাইকেল জ্যাকসনের ১ম মৃত্যুবার্ষিকী। সময় কি দ্রুত চলে যায়। মনে হচ্ছে এই সেদিন মাত্র শুনলাম তার অজ্ঞান হয়ে হাসপাতালে যাওয়ার কথা। তারপর সেই অমোঘ বার্তা। কিং অফ পপস আর নেই।

টেলিভিশনের পর্দায় প‌্যারিসের কান্না দেখে নিজের চোখের পানিকে বাধ মানাতে পারিনি। আশির দশকের শুরুতে মাইকেল যখন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে আমি তখন সদ্য কৈশোরোত্তির্ণ এক তরুণ। বাংলাদেশে ব্যান্ড সঙ্গীত সবে ডানা মেলা শুরু করেছে। কি আড্ডা, কি পার্টিতে কিংবা কনসার্টে মাইকেল জ্যাকসন তখন এক অবধারিত নাম। বন্ধুদের অনেকেই তখন তার সেই বিশেষ ভঙ্গীমার নাচে বিশেষ পারঙ্গম।

আমরা নাদানরা মাঝে মধ্যে মুনওয়াকের ব্যর্থ চেষ্টা করি। মাইকেল এখন শুধূই স্মৃতি। তার স্মৃতির প্রতি ... ============================================ মাইকেল জোসেফ জ্যাকসনের জন্ম ১৯৫৮ সালের ২৯শে আগষ্ট আমেরিকার ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের শিকাগো শহরের উপকণ্ঠে গ্যারি নামের এক শিল্পাঞ্চলে। আফ্রিকান-আমেরিকান দম্পতি জোসেফ ওয়াল্টার জো জ্যাকসন এবং ক্যাথারিন এস্থার স্ক্রুজ এর ১০ সন্তানের মধ্যে মাইকেল ছিলেন ৮ম। মাইকেলের ছিল ৩ বোন (রেবি, লা টয়া, জ্যানেট) আর ৫ ভাই (জ্যাকি, টিটো, জারমেইন, মার্লোন, রেন্ডি), আরেক ভাই ব্র্যানডন জন্মের অল্পক্ষণ পরেই মারা যায়।

মাইকেলের বাবা জো জ্যাকসন ছিলেন ষ্টিল মিলের শ্রমিক এবং তিনি একটি R&B ব্যান্ড ফ্যালকনের সাথে পারফর্ম করতেন। ছোটবেলায় মাইকেলের সাথে তার বাবার সম্পর্কটা খূব একটা মধূর ছিল না। মাইকেল একসময় বলেছিলেন ছোটবেলায় নিরবিচ্ছিন্ন সঙ্গীত সাধনার সময় তার বাবা তাকে শারীরিক এবং মানসিক যন্ত্রণা দিতেন, যদিও তার বাবার কঠোর নিয়মানুবর্তিতা তার সাফল্যের পিছনে বিরাট ভূমিকা রেখেছিল বলে স্বীকার করেন মাইকেল। ২০০৩ সালে বাবা জো জ্যাকসন স্বীকার করেন ছোটবেলায় মাইকেলকে তিনি নিয়মিতই কোমরবন্ধনী (বেল্ট) দিয়ে চাবকাতেন। মাইবেল তার এই যন্ত্রণাক্লিষ্ট শৈশব নিয়ে প্রথম খোলাখূলি কথা বলেন অপরাহ উইনফ্রের সাথে, যা প্রচারিত হয় ১৯৯৩ সালের ফেব্রুয়ারীতে।

বাবাকে দেখলে তার বমি পেতো এবং একা একা কাদতেন বলেও স্বীকার করেন মাইকেল। মাইকেলের বাবাও স্বীকার করেন তিনি অনেকবারই থ্যাবরা নাক নিয়ে ছেলেকে উপহাস করেছেন। আর একারণেই হয়তো মাইকেল তার চেহারা আর গায়ের রং নিয়ে খূতখূতে ছিলেন সারা জীবন। দূঃস্বপ্ন দেখা ঘুমের সমস্যা, শিশু সূলভ আচরণ সবই তার যন্ত্রণাক্লিষ্ট শৈশবের ফল বলে মনে করা হয়। ১৯৬৪ সালে মাইকেল আর মার্লোন জ্যাকসন ব্রাদার্স এ যোগ দেন ব্যাকআপ হিসেবে।

এই ব্যান্ডটি তৈরী করেছিলেন তাদেরই বড় তিন ভাই জ্যাকি, টিটো আর জারমেইন। শুরুতে তারা কঙ্গো আর ট্যাম্বুরিন বাজাতেন। পরে মাইকেল ব্যাকআপ ভোকাল এবং নাচিয়ে হিসেবেও পারফর্ম করতেন। মাইকেলের বয়স যখন আট, সে সময় তিনি বড় ভাই জারমেইন এর সাথে মূল ভোকাল হিসেবেও গাওয়া শুরু করেন। সে সময় ব্যান্ডের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় জ্যাকসন ফাইভ।

১৯৬৬-৬৮ সালে জ্যাকসন ফাইভ আমেরিকার মিডওয়েষ্ট অঞ্চলে ব্যাপক সফর করে এবং চিটলিন সার্কিট নামের এক ক্লাবে নিয়মিতই সঙ্গীত পরিবেশন করতেন। ১৯৬৬ সালে মাইকেলের নেতৃত্বে তারা স্থানীয় এক ট্যালেন্ট শো'তে জয়লাভ করে। ১৯৬৮ সালে মোটাউন রেকর্ড কোম্পানির সাথে চুক্তির আগে জ্যাকসন ফাইভ স্তানীয় এক রেকর্ড কোম্পানি ষ্টিলটাউন এর সাথে বেশ কিছু গান রেকর্ড করে যার মধ্যে অন্যতম ছিল 'বিগ বয়'। রোলিং ষ্টোন ম্যাগাজিন সেসময় মাইকেলের ভূয়সী প্রশংসা করে। বিলবোর্ড টপ ১০০ এ এই ব্যান্ডের প্রথম চারটি সিঙ্গেল ("I Want You Back", "ABC", "The Love You Save", "I'll Be There") স্থান করে নিলে রচিত হয় এক নতুন রেকর্ড।

১৯৭২-৭৫ এই সময়ের মধ্যে মাইকেল জ্যাকসন মোটাউন থেকে চারটি সোলো এলবাম রিলিজ করেন, যার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য ছিল Got to Be There এবং Ben। জ্যাকসন ফাইভের বিক্র ১৯৭৩ সাল থেকে ক্রমাগত কমতে থাকে যদিও এরমধ্যে তারা আরো কিছু হিট গান উপহার দিয়েছিল যেমন "Dancing Machine" এবং "I Am Love", ১৯৭৫ সালে জ্যাকসন ফাইভ মোটাউন ত্যাগ করে। ১৯৭৫ সালের জুনে জ্যাকসন ফাইভ এপিক রেকর্ডের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয় এবং ব্যান্ডের নতুন নাম হয় দ্য জ্যাকসনস। ছোটভাই রেন্ডি এসময় ব্যান্ডে যোগ দেয় আর জারমেইন ব্যান্ড ত্যাগ করে নিজের সোলো ক্যারিয়ার গড়তে ব্যপৃত হন। এইসময় তারা আন্তর্জাতিক ট্যুর করতে থাকে এবং ১৯৭৫-৮৪ সালের মধ্যে আরো ৬টি এলবাম উপহার দেয়।

মাইকেল ছিল ব্যান্ডের মূল সঙ্গীত রচয়িতা, তার লেখা হিট সিঙ্গেলস গুলির অন্যতম ছিল "Shake Your Body (Down to the Ground)", "This Place Hotel," এবং "Can You Feel It"। ১৯৭৮ সালে মাইকেল The Wiz নামের এক মিউজিক্যালে কাকতাড়ুয়া হিসেবে অভিনয় করেন, কিন্তু ছবিটি বক্স অফিসে চুড়ান্ত ফ্লপ হিসেবে বিবেচিত হয়। এটিতে তিনি কুইন্সি জোনসের সাথে কাজ করেন। জোনস এসময় মাইকেলের পরবর্তী সোলো এলবাম অফ দ্য ওয়াল এর প্রোডিউসার হিসেবে কাজ করতে সম্মত হন। ১৯৭৯ সালে একটা জটিল নাচের মূদ্রা করতে গিয়ে মাইকেল তার নাক ভেঙ্গে ফেলেন।

রাইনোপ্লাষ্টি করেও সেটা ঠিকমতো সারানো যায়নি। মাইকেল এসময় তার নিঃস্বাস-প্রস্বাসে অসূবিধার কথা বলেন। এরপর ডা. ষ্টিভেন হফলিন তার দ্বিতীয় রাইনোপ্লাষ্টি করেন। ১৯৭৯ সালে অফ দ্য ওয়াল এলবামটি বের হয়। এর সঙ্ঘীত রচয়িতাদের মধ্যে ছিলেন মাইকেল জ্যাকসন, রড টেম্পারটন, ষ্টিভি ওয়ান্ডার এবং পল ম্যাককার্টনি।

এটি ছিল প্রথম এলবাম যার ৪টি সিঙ্গেলস ইউএস টপ ১০ এ স্থান পায়, যার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য "Don't Stop 'til You Get Enough" এবং "Rock with You"। এই এলবামটি সারা পৃথিবীতে ২০ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছিল। মাইকেল ১৯৮০ সালে "Don't Stop 'Til You Get Enough".এই সিঙ্গেলস এর জন্য ৩টি আমেরিকান মিউজিক এওয়ার্ড জয় করেন। সে বছর তিনি বিলবোর্ড এওয়ার্ড এবং গ্র্যামী এওয়ার্ড ও জয় করেন। সে বছর তিনি ছিলেন সঙ্গীত জগতে সর্বাধিক রয়্যালটি (৩৭%) আয়কারী শিল্পী।

১৯৮২ সালের শেষ দিকে বের হয় মাইকেল জ্যাকসনের থ্রিলার এলবামটি। আমেরিকা তধা বিশ্ব ইতিহাসে এটি ছিল সর্বকালের সর্বাধিক বিক্রিত এলবাম, যা কিনা সারা বিশ্বে ১১০ মিলিয়ন কপিরও বেশী বিক্রি হয়েছে। এই এলবামটি তাকে ৭টি গ্র্যামী এওয়ার্ড এবং ৮টি আমেরিকান মিউজিক এওয়ার্ড এনে দেয়। এর ৭টি গান বিলবোর্ড টপ ১০ এ স্থান করে নেয়, যার মধ্যে ছিল "Billie Jean", "Beat It" এবং "Wanna Be Startin' Somethin"। সেসময় তিনি এলবাম প্রতি ২ ডলার রয়্যালিটি পান।

মাইকেল তার এলবাম থেকে রেকর্ড পরিমাণ লাভও করেন। ১৯৮৪ সালের মে মাসে আমেরিকার ষ্টোরগুলিতে মাইকেল জ্যাকসনের আদলে তৈরী পুতুল ১২ ডলারে বিক্রি শুরু হলে সেটাও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে The Making of Michael Jackson's Thriller এর ভিডিও ক্যাসেট সেসময় ৩৫০০০০ কপিরও বেশী বিক্রি হয়েছিল। এটি ১৯৮৫ সালে বেষ্ট মিউজিক ভিডিও ক্যাটাগরিতে গ্র্যামী এওয়ার্ড পায়। ১৯৮৩ সালের মার্চে মাইকেল জ্যাকসন আবার তার ভাইদের সাথে একত্রে Motown 25: Yesterday, Today, Forever নামে একটি লাইভ টেলিভিশন প্রোগ্রামে অংশ নেন, যেখানে দ্য জ্যাকসনস ছাড়াও মো টাউনের আরো কিছু সফল শিল্পী ছিলেন।

১৯৮৩ সালের ১৬ই মে তারিখে ৪৭ মিলিয়ন দর্শক টেলিভিশনে এই প্রোগ্রামটি উপভোগ করে। মাইকেল তার একক পরিবেশনা বিলি জিন দিয়ে দর্শকদের মোহিত করে। কালো জ্যাকেট আর গ্লভস পরিহিত মাইকৈল প্রথমবারের মতো তার সেই বিখ্যাত নাচের মূদ্রা মুনওয়াক দিয়ে মাতিয়ে ফেলেন সারা বিশ্বকে। এই মুনওয়াক তিন বছর আগে তাকে শিখিয়েছিলেন সোল ট্রেন এর নাচিয়ে এবং সালামারের সদ্স্য জেফরি ড্যানিয়েল। মাইকেলের সেই পারফর্মেন্স দ্য এড সুলিভান শো এ এলভিস প্রিসলি এবং বিটলস এর তুলনামূলক আলোচনার সূত্রপাত করে।

১৯৮৪ সালের ২৭শে জানুয়ারী ক্যালিফোর্নিয়ায় পেপসি'র একটি বিজ্ঞাপন চিত্রের শুটিং এর সময় মাইকেল আবার দূর্ঘটনায় পড়েন। এবার পাইরোটেকনিক ব্যবহারের সময় তার চুলে আগুন ধরে যায় এবং মাথার চামড়া মারত্মকভাবে পূড়ে যায়। মাথার চামড়ার ক্ষত আড়াল করার জন্য মাইকেল আবারও চিকি"সকের স্মরণাপন্ন হন। এসময় তিনি তার নাকে ৩য় বার রাইনোপ্লাষ্টি করান। এই আঘাত থেকে তিনি আর কখনই পূরোপূরি সুস্থ হননি।

পেপসি মাইকেলের সাথে এই দূর্ঘটনার ব্যাপারে একটি আপোসরফায় উপনীত হয়। মাইকেল এর সুবাদে প্রাপ্য থেকে ১.৫ মিলিয়ন ডলার ব্রটম্যান মেডিকেল সেন্টারে দান করেন এবং মাইকেলের দানের সম্মানার্থে বর্তমানে সেখানে তার নামে একটি বার্ণ সেন্টার আছে। ১৯৮৪ সালের ১৪ই মে মাইকেল জ্যাকসন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের আমন্ত্রনে হোয়াইট হাউসে যান। এসময় প্রেসিডেন্ট রিগ্যান সুরাসক্ত ও মাদকাসক্তদের চিকিৎসার্থে বিভিন্ন চ্যারিটিকে করা মাইকেলের দানের স্বীকৃতি স্বরুপ পুরস্কার প্রদান করেন। অন্যান্য এলবামের মতো থ্রিলার প্রমোট করার জন্য কোন অফিসিয়াল ট্যুর ছিল না।

১৯৮৪ সালে দ্য জ্যাকসনস তাদের ভিক্টরি ট্যুর এ মাইকেলের নতুন সব সিঙ্গেলস উপস্থাপন করে প্রায় ২ মিলিয়ন আমেরিকানকে মোহিত করে। এই ট্যুর থেকে প্রাপ্ত অর্থ, প্রায় ৮ মিলিয়ন ডলার, বিভিন্ন চ্যারিটিতে দান করে দেয়া হয়। এসময় (১৯৮৫) তিনি গায়ক লায়োনেল রিচির সাথে যৌথভাবে ইউ আর দ্য ওয়ার্ল্ড গানটি রচনা করেন, যেটি আমেরিকা আর আফ্রিকার গরীব মানুষদের জন্য অর্থ সংগ্রহের কাজে ব্যবহার করা হয়। অচিরেই এটি বেষ্ট সেলিং সিঙ্গেলস এর মর্যাদা পায়। সিঙ্গেলসটি সারা পৃথিবীতে প্রায় ৩০ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে আর এর সুবাদে ১৯৮৬ সালের দূর্ভিক্ষপীড়িতদের সাহায্যার্থে কোটি কোটি ডলার দান হিসেবে পাওয়া গিয়েছে।

এই গানটি ৪টি গ্র্যামী এওয়ার্ড জয় করে। মাইকেল জ্যাকসন আশির দশকের শুরুতে প্রাক্তন বিটলস পল ম্যাককার্টনির কাছ থেকে জানতে পারেন যে পল অন্যের গানের কপিরাইট স্বত্বের সুবাদে প্রতিবছর প্রায় ৪০ মিলিয়ন ডলার উপার্জন করেন। ১৯৮৫ সালে এটিভি মিউজিক, যারা বিভিন্ন গানের স্বত্বাধিকারী ছিল, বিক্রির কথা ঘোষণা করা হয়। এরমধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য ছিল নর্দান সংস ক্যাটালগ যাতে লেনন / ম্যাককার্টনির সূরারোপ করা বিটলসের অধিকাংশ গান ছিল। মাইকেল এই ব্যাপারে বিশেষ আগ্রহী হয়ে উঠেন।

পল ম্যাককার্টনি তার এটর্নির মাধ্যমে মাইকেল এর এটর্টিকে জানান তিনি এটিভির ব্যাপারে আগ্রহী না, কারণ দামটা খূব বেশী। কিন্তু পল শেষ পর্যন্ত মত বদলিয়ে বিড করতে আগ্রহী হয়ে উঠেন। লেননের স্ত্রী ইয়োকো ওনোর কাছে একত্রে বিড করার জন্য প্রস্তাব পাঠান, কিন্তু ওনো তা প্রত্যাখান করেন। পল শেষ পর্যন্ত বিড থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করেন। মাইকেল জ্যাকসন ১০ মাসের সূদীর্ঘ আলাপ আলোচনার পর ৪৭.৫ মিলিয়ন ডলারে ক্যাটালগটি ক্রয় করতে সক্ষম হন।

[ক্রমশ ...] প‌্যারিস, ব্ল্যাংকেট আর প্রিন্স

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।