আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একবার যেতে দেনা আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়



কবিগুরুর কাছ থেকে ধার করে লিখতে গেলে লিখতে হয় "অবারিত মাঠ গগন ললাট, চুমে তব পদধূলি; ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড়, ছোট ছোট গ্রামগুলি"। হ্যা, গ্রাম আমার খুবই প্রিয়। ছোট বেলায় এমন বর্ষাকালে কাদার ভিতর অনেক দুষ্টুমি করে মায়ের মিষ্টি বকুনির সাথে মাঝে মধ্যে উপরি হিসাবে পিটানি ও খেয়েছি। কিন্তু এই যান্ত্রিক শহরে আসার পর কখন যে বর্ষাকাল পার হয়ে যায় ঠিক বুঝতে ও পারি না। টের পাই শুধু দু'টি ঋতু ১, লোড শেডিং এর কারনে প্রচন্ড গরম দেখে গ্রীষ্মকাল আর ২, লোড শেডিং কম হওয়া ও সবাইকে সোয়েটার পরে থাকতে দেখায় শীতকাল।

গত ২২ মে দূর্ঘটনার পরে ডাক্তারের হুকুম সোজা একমাসের বিশ্রাম। আর পায়ে ব্যান্ডেজ থাকায় ডাক্তারের এই হুকুম তামিল না করে উপায় কি প্রথম এক সপ্তাহ শুয়ে শুয়ে ভালোই কাটল, কিন্তু তারপরই বিপত্তি এত শুয়ে থাকতে ভালো লাগে কার ভালো লাগে। অবশেষে একটু আধটু হাটাচলা শুরু করলাম। এবং পরবর্তী কর্ম দিবসে অফিসে গিয়ে হাজির। অফিসে ঢুকেই বসের ঝাড়ি খাইলাম ভাঙ্গা পা নিয়ে অফিসের সিড়ি ভেঙ্গেছি বলে।

সমস্যাটা তাকে বুঝিয়ে বললে তিনি নরম হলেন। তখন আবার ট্রেনিং চলছে, আমাকে চেয়ারে বসে বসে ট্রেনিং করানোর সুযোগ দিলেন এবং কো-ট্রেইনার হিসাবে আমার পছন্দের ব্যক্তিকে আমিই নিয়ে নিলাম। বাসায় ফিরলে অপরাজিতার ঝাড়ি, বস বা ডাক্তার কারো ঝাড়ি তার কাছে কিচুই না, যত বুঝাই তত রাগে, এবং শেষে রাগ পরিনত হলো অভিমানে। অনেক কষ্টে তাকে ও মোটামুটি ম্যানেজ করলাম, কিন্তু যেদিন মন চাইত সেদিন অফিসে যেতাম মন না চাইলে যেতাম না। আমার মত ভবঘুরে এভাবে বন্দি হয়ে আছে ঢাকার বাইরে যেতে পারছেনা, পারছে না কোথাও ঘুরতে এর থেকে কষ্টের কি আছে বলেন তো।

এর মধ্যে মালেশিয়ার পেনাঙ এ একটা ওয়ার্কশপ থাকলে ও অসুস্থতার দরুন অন্য এক কলিগ আমার পরিবর্তে সেখানে গেছে। কাজেই আর না, এবার আমাকে এই বন্দি দশা থেকে বের হতেই হবে। যেই ভাবা সেই কাজ, করে ফেললাম পরিকল্পনা। আর পরিকল্পনা মোতাবেক আগামী বৃহস্পতিবার চলে যাব আমার গ্রামের বাড়ি। বর্ষাকালে মায়ের হাতের তালের পিঠা আর তেলে ভাজা পিঠা অনেকদিন গরম গরম খাওয়া হয়ে উঠেনা।

এবার আর এটা কোন ভাবেই মিস করা চলবে না। পুকুরে মাছ ধরিনা কতদিন তা বোধ হয় সুপার কম্টিউটার ও হিসাব কষে বের করতে পারবে না, কয়েক বন্ধুর সাথে ইতিমধ্যে যোগাযোগ হয়েছে ওরাও যাবে একই সময়ে গ্রামে আর দল ধরে শুক্রবার মাছ ধরতে নামব সবাই। সেখান থেকে ফিরে ঢাকায় দুই একদিন থেকে বরে হব বগুড়ার উদ্দেশ্যে (প্রধান উদ্দেশ্য মহাস্থানগড়), সেখান থেকে সোজা রাজশাহী, উদ্দেশ্য ফজলী আম। রাজশাহী থেকে ঢাকা ফিরে দুই একদিন বিশ্রাম এবং তারপর স্বপরিবারে খাগড়াছড়ি। মোটামুটি প্লান যা আছে তাতে পুরা জুলাই মাস থাকব ঘোরগুরির উপর।

আগস্ট মাসে দিল্লিতে একটা কনফারেন্সে যাওয়ার কথা আছে, কাজেই আর বন্দি থাকতে রাজি নই এই ইট কাঠ পাথরের যান্ত্রিক শহরে। (ব্লগার বন্ধুদের হতাশ হওয়ার কোন কারন নেই, সাথে একাধিক ক্যামেরা ও ল্যাপটপ থাকছে তাই আপডেটসহ ছবি পাবেন নিয়মিত)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.