আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার যোগ্যতা।

যখন যেখানে যেমন তেমন

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার যোগ্যতা কি? ছোট থাকতে জানতাম ইন্টারমিডিয়েট এ ভাল রেজাল্ট, ভর্তি পরীক্ষায় ভাল কপাল থাকলে তবেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া যায়। যা হোক,আমার দুইটাই খুব বেশি পরিমানে না থাকলেও কিছুটা ছিল, তাই বুয়েট এ না হলেও রুয়েট এ পড়ার সুযোগ পেয়েছিলাম। চান্স পেয়ে আমি তো খুব খুশি, যাই হোক ইঞ্জিনিয়ার হব, দেশের সেরা কিছু ছেলেদের সাথে পড়ার সুযোগ পাব। একে একে তিন বছর পার করে দিয়ে এই ফোর্থ ইয়ার এ এসে মনে হচ্ছে, আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার উপযুক্ত আমি নই/ খালি উপরের দুইটা যোগ্যতা থাকলেই হবে না। সাথে আরও কিছু থাকতে হবে।

তখন প্রথম সেমিস্টার এ পড়ি, ফিজিক্স ল্যাব হয়। ল্যাব হওয়ার কথা ২ সপ্তাহে ১দিন কিন্তু স্যারেরা প্রতি সপ্তাহেই নেন। প্রথম ৪/৫ সপ্তাহ পর কিছু ছেলের মাথায় আসল এটা ঘোর অন্যায়! স্যাররা কেন বেশি করে পড়াবেন! তাই,আমাদের হয় আন্দোলন করা উচিৎ, নাহলে ক্লাস বর্জন করা উচিৎ। আমি তো ততটা বুঝি না, আমি বললাম, “ ক্লাস নিচ্ছে, ক্ষতি কি, আমরা এখানে শিখতেই এসেছি, স্যারেরা যদি শিখান, তাহলে তো ভালই। ” একথা বলার পর গোটা ক্লাসের প্রতিক্রিয়ায় মনে হল আমি কি যে পাপের কথা বলে ফেলেছি! আমিও তখন আমার বিশ্বাসে অটল, তাই কোনো মতেই সিগনেচার করি নি।

ফলে গোটা ক্লাস আমাকে বয়কট করল। যা হোক, তার কিছুদিন পর ফিজিক্স ল্যাব ২ সপ্তাহে ১ বার করে শুরু হওয়ায় এবং কোনো এক কারনে আমি বয়কট থেকে মুক্তি পেলাম। তখন মনে হত, নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে বুঝি পোলাপানের এই অবস্থা। এখন বিশ্বকাপের জন্য সারা ভার্সিটি জুড়ে জুনিয়র রা আন্দোলন শুরু করেছে বন্ধ করার। ফোর্থ ইয়ার এর ছেলেরা আন্দোলন এ নামে নাই, কিন্তু তারাও চায় ছুটি হোক।

অথচ আমাদের আর ২ সপ্তাহ ক্লাসের পর পরীক্ষা হওয়ার কথা। এবং রেগুলার টাইমে পরীক্ষা হলে রোজার আগেই পরীক্ষা শেষ হয়ে যাবে(রুয়েট গোটা রোজা ছুটি থাকে)। কিন্তু এখন ২ সপ্তাহের ছুটি মানেই পরীক্ষা পিছিয়ে যাবে রোজার পর পর্যন্ত। তারমানে আমরা নূন্যতম ২ মাস পিছিয়ে যাব। এটা জুনিয়রদের মাথা ব্যাথার কারন না হতে পারে কিন্তু আমরা যারা ৭ম সেমিস্টার এ আছি তাদের মাথায় না ঢোকার কারন কি বুঝলাম না।

আজকে দরখাস্ত দিতে চেয়েছিলাম যে অন্তত ৪র্থ ইয়ারের ক্লাস নেয়া হোক। তা পোলাপানের কথা বার্তায় বুঝলাম এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে আবার সেই ফিজিক্স ল্যাবের মত কাহিনি হবে। তাই চুপ করে আছি,আর ভাবতেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার জন্য মনে হয় আরেকটি যোগ্যতা লাগে, সেটা হল কমনসেন্সের বিসর্জন দেয়া। আবার ভাবছি, আমিই যখন সবার মতের বিরুদ্ধে, তখন মনে হয় আমার মাঝেই কোনো সমস্যা আছে। পুনশ্চঃ অনেকে হয়ত ভাবতে পারেন আমি দুনিয়াদারি রেখে খালি পড়াশোনা করার দলে, তা কিন্তু নয়।

বিশ্বকাপের খেলা আমিও দেখি। তাও বেছে বেছে নয়, প্রতিটা খেলা দেখতেই যাই, ভাল খেলা হলে দেখি, না হলে উঠে আসি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.