আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্বরনকালের ভয়াবহ অগ্নিকান্ড , মৃত ১৫০ ছাড়াতে পারে

কালের সাক্ষী

শুধু লাশ আসছে , লাশ আর লাশ আর লাশ । সাথে আহত মানুষের দীর্ঘ সারি । আহাজারি আর আর্ত চিৎকারে আকাশ বাতাশ ভারি হয়ে উঠছে । মানুষের কান্না যেন বাধ ভাঙ্গা জোয়ারের মত শুধু ধেয়ে আসছে । আগুনের কুন্ডলির থেকে একটার পর একটা শিশু ও অন্যদের মৃত দেহ এনে সামনের সারিতে রাখা হচ্ছে ।

আমি শুধু গুনছি কতটা লাশ আসল আর কতটা আহত মানুষকে উদ্ধার করা হল । কি আশ্চার্য মানুস যেখানে স্বজনদের লাশটা খুজে পাওয়ার এবং আহতদের সেবা দেয়ার জন্য ছোটাছুটি করছে আমি সেখানে লাশ গুনে চলেছি ১.....২,.......৩......৪.......১২........১৬........৪৫.............৮৭......১৫০>>>>>> অথচ আমিও তো একজন মানুষ , একটি মায়ের সন্তান ,একজন বোনের ভাই , অথবা একজন ললনার.........................>>>>> ঘটনাটি আসলে কোন গল্পের কাহিনী নয় । শুনুন তাহলে রাজধানীর পুরান ঢাকার নবাব কাটরার নিমতলীতে বৃহস্পতিবার রাতে ৬টি বাড়িতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড সংঘঠিত হয়েছে। এতে এ পর্যন্ত ১০৫ জন মারা গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।

এ ঘটনায় আহতের সঠিক সংখ্যা এখনো জানা যায়নি। রাত ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ঘটনাস্থল থেকে ১০৫ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো ১০/১৫ জন ভবনের মধ্যে আটকা পড়ে আছেন বলে এলাকাবাসী ও উদ্ধার কর্মীরা জানিয়েছেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা পুরোদমে উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, রাত ৯টার দিকে নিমতলীতে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে এলাকার একটি প্লাস্টিক কারখানায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে আগুন ৪৪ নম্বর থেকে ৪৮ নম্বর পর্যন্ত ৫টি বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় আগুন দ্রুত এক ভবন থেকে অন্য ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যেই দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে থাকে।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট গিয়ে আগুন নেভানো শুরু করে। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসকে হিমশিম খেতে হয়। ঘটনাস্থলে ৪৩/৩ নাম্বার বাড়ির তৃতীয় তলায় একটি পরিবাবের বিয়ের বাগদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই মারা গেছে বলেড়ধারণা করা হচ্ছে। নিহতদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সেবিকা শামসুন্নাহার, তার মেয়ে চৈতি ও অদিতি, হাসান, বাবু, সুমাইয়া, নাসিমা ও সাবিনার পরিচয় মিলেছে। এছাড়া রুনা নামের এক মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে রুনা, তার বাবা ওসমান মিয়া, মা ফাতেমা, খালা সাজেদা, মেহফুজ, খালাতো বোন সিমেন, অনিকা, আফরোজা মারা গেছেন।

নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই আগুনের ধোয়ায় শ্বাস বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ওই ৫টি বাড়িতে আরো ১০/১৫ জন আটকে পড়েছে। তারা মারা গেছেন, নাকি বেঁচে আছেন এ ব্যাপারে কেউ কিছু জানাতে পারেননি। স্থানীয় সাইদ মো. ইসমাইল শীর্ষ নিউজ ডটকমকে জানান, ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আসার আগেই এলাকাবাসী ১২টি লাশ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে। মানুষের আর্তচিৎকার, কান্নাকাটিতে পুরো এলাকায় এলাকায় এক বিভিষীকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

স্বজনদের খোঁজে সবাই বুক চাপড়াচ্ছেন। রাস্তার ওপর সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে মৃত দেহ। অনেকের চেহারা বোঝা যাচ্ছে না। আগুনে ঝলসে গেছে পুরো শরীর। পুরো পুরান ঢাকায় বইছে শোকের মাতম।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।